খৃঃপূঃ ৩০ সালে, জলপ্লাবন এবং খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিস্তীর্ণ গ্রাম্য এলাকাকে গ্রাস করলে কৃষকেরা এবং কারিগরী-শিল্পীরা বিদ্রোহ শুরু করেন। বিদ্রোহ দমন করা হয় বটে, কিন্তু সামাজিক সংকট আরও ঘনীভূত হয়। একটি দুর্ভিক্ষের বছরে ছাংআনের পার্শ্ব বর্তী জেলায় অর্ধ কিলোগ্রাম সোনার( মূল্য প্রায় ১০,০০০ মুদ্রা) পরিবর্তে পাঁচ শেং মটরডাল বিক্রীত হয়। ক্ষুধার তাড়ানায় লোকেরা মরিয়া হয়ে ওঠে।
সামাজিক দ্বন্দ্ব তীব্র থেকে তীব্রতর হওয়ার পরিস্থিতি প্রশমিত করার উদ্দেশ্যে এবং বিপদগ্রস্ত ভূস্বামীদের শাসন রক্ষার জন্য রাজপরিবারভুক্ত একজন মহিলার আত্মীয় ওয়াং মাং( খৃঃপূঃ--২৩ খৃষ্টাব্দ), যিনি অনধিকারভাবে রাজসিংহাসন দখল করেছিলেন, ৯ খৃষ্টাব্দ সংস্কারমূলক কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন: (১) সম্রাটকেই করা হয় ভূমির একমাত্র অধিকারী এবং ব্যক্তিগদ জমি ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়; (২) ব্যক্তিগত ক্রীতদাস ব্যবস্থা নিষিদ্ধ হয়;(৩) ছাংআন এবং পাঁচটি প্রধান শহরে( লুওইয়াং, হানতান, লিনজি, নানইয়াং এবং ছেংতু) দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং কৃষকদের স্বল্প সুদে টাকা ধার দেবার জন্য কয়েকজন রাজকর্মচারী নিযুক্ত করা হয়; (৪) ব্যবসায়ীদের ফটকা নিয়ন্ত্রণের জন্য লবণ, লৌহ, মদ এবং আরও তিনটি দ্রব্য সরকারী নিয়ন্ত্রণরধীনে আনা হয়; এবং (৫) মুদ্রা প্রচলন ব্যবস্থায় সংস্কার করা হয়। আসল কথা, ওয়াং মাং-এর এই সংস্কারের উদ্দেশ্য ছিল ভূস্বামী এবং ব্যবসায়ীদের প্রতি কিছু চাপ সৃষ্টি করা এবং তত্কালীন সামাজিক উত্তেজনা প্রশমিত করা।
কিন্তু যেহেতু ওয়াং মাংকে তার সংস্কার পরিকল্পনা কার্যকরী করাতে ভূস্বামী এবং ব্যবসায়ীদের প্রতি নির্ভর করতে হয়, সেহেত তার পরিকল্পিত নীতি ঘন ঘন পরিবর্তিত হয়। ফলে কৃষকদের প্রভূত ক্ষতি হয় আর গরীর কৃষকদের পক্ষে তা সহ্যের সীমার বাইরে যায়। ২২ খৃষ্টাব্দে, ইয়াংসি নদী এংব পীতনদীর অববাহিকা অঞ্চলে সিনশি, ফিংলিন, লাল-ভ্রু এবং তাম্র-ঘোড়া নামে পরিচিত কয়েকটি দলের নেতৃত্বে পরপর কয়েকটি অভ্যুত্থান হয়। কৃষক-সেনাবাহিনী রাজধানী নগরে প্রবেশ করতে কৃতকার্য হয় এবং তারা ওয়াং মাং-এর সরকারকের উত্খাত করে।
|