v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-05-30 13:49:52    
লাল ভবণ

cri
    চীনের রাজধানী পেইচিং একটি সুপ্রাচীন শহর।তা প্রভূত ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী সুতারাং পেইচিংএ যে সব ইতিহাস যাদুঘর, স্মারক ভবন রয়েছে সে সব ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার বলে পরিগণিত।পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের লাল রংয়ের ভবন এবং থিয়েন আন মেন মহা চত্বর হলো এ সব ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারের মধ্যে দুটো বিখ্যাত "ঐতিহাসিক সাক্ষ্য।

    " আমার মনে হয় এই স্থাপত্য অন্যন্ত বৈশিষ্ট সম্পন্ন।তখনকার চীনে এই ধরনের বৈশিষ্টসম্পন্ন স্থাপত্য প্রায় যত্রতত্র ছিল বলা চলে।অতীতে এই স্থাপত্য সহজেই চোখে পড়ত।অবশ্যই আমাদের পক্ষে সবচেয়ে তাত্পর্যপূর্ণ অথবা সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো এই স্থাপত্যের পিছনের ইতিহাস।এই স্থাপত্য থেকে আমরা চীনের ইতিহাসের আমেজ অনুভব করতে পারি।এতক্ষণ এই কথাগুলো বলেছেন লি আই লিন নামে একজন পর্যটক।তিনি যে স্থাপত্যের কথা উল্লেখ করেছেন তা হলো পেইচিং ৪ঠা মে সড়কের ২৯ নম্বর ব্লকে অবস্থিত পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন।ভবনটি লাল রং বলে "লাল ভবন" নামে পরিচিত।এই "লাল ভবন" এক সময় ছিল পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বিভাগ, লাইব্রেরী এবং সাহিত্য ইনস্টিটিউটের কার্যালয়।তা ছাড়া, এই "লাল ভবণ" ১৯১৯ সালের ৪ঠা মে আন্দোলনের জন্মস্থান।এই ভবনের ইতিহাস ৮৭ বছরের ।এই চার তলা ভবনটির নকশাকর এক জন পুতুর্গীজ স্থপিন।স্থাপত্য পাশ্চাত্য শৈলীতে পরিপূর্ণ।সে সময় সারা পেইচিং শহরে এই ভবন একটি সবচেয়ে আধুনিক ভবন বলে গণ্য ছিল।এখন পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয় পেইচিংএর পশ্চিম অঞ্চলে স্থানান্তরিত হয়েছে।পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয় চীনের সবচেয়ে বিখ্যাত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম ।এই "লাল ভবন" চীনের রাষ্ট্রীয় পুরাকীর্তি আর নতুন সাংস্কৃতিক বিপ্লবের স্মারক ভবন হিসেবে সংরক্ষিত হয়েছে।তাহলে কেন এই স্থাপত্যকে "লাল ভবন" ডাকা হয়? এই লাল ভবনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মিস দুয়েন ডং ডং বলেছেন,

    গোটা ভবন লাল ইট দিয়ে তৈরী হয়েছে।সুতরাং ভবনটি দেখতে লাল ।দীর্ঘকাল ধরে লোকেরা সাধারণত এই ভবনকে সংক্ষিপ্তভাবে "লাল ভবন " ডাকে।এই লাল রংয়ের স্থাপত্য চীনের আধুনিক ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয়েছে। অবশ্যই ভবনের রংয়ের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। তার কারণ হল এই যে , এক সময় অনেক পন্ডিত এই ভবনে লেখাপড়া আর কাজ করেছিলেন।যারা এই "লাল ভবনে" পড়াশুনা করেছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই পরবর্তীকালে চীনের রাজনৈতিক মন্চের প্রভাবশালী নেতা হয়েছিলেন। তাদের অনুসৃত আদর্শ আর উত্থাপিত মর্ম পরবর্তীকালে এই "লাল ভবন" থেকে স্নাতক হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের উপর প্রভব ফেলেছে। এমন কি চীনের বিপ্লব তাদের প্রভাবও প্রতিফলিত হয়েছে। এই "লাল ভবনের" স্মারক ভবনের পরিচালক মাডাম গুও জেন ইন বলেছেন, সে সময় এই "লাল ভবনে" আধুনিক চিন্তাধারাসম্পন্ন ঐতিহাসিক ব্যক্তিরা সমাবেশ করতেন। তিনি বললেন,

    এই "লাল ভবন "এমন একটি জায়গা যেখানে নতুন চিন্তাধারা, নতুন ব্যক্তির সমাবেশ ঘটতো।এই ভবনে বেশ কয়েক জন নাম করা রাজনীতিবিদ তৈরী হয়েছিলেন।সুতরাং আমরা মনে করি যে, এই "লাল ভবন" চীনের আধুনিক যুগের একটি প্রতিনিধিত্বকারী স্থাপত্য।এতে প্রতিফলিত হয়েছে যে এই "লাল ভবন " থেকেই চীন আধুনিক যুগে এগিয়ে গেছে।চেয়ারম্যান মাও জে ডং এক সময় এই ভবনের লাইব্রেরীতে কাজ করতেন। তাঁর জন্মস্থান হুনান থেকে পেইচিংয়ে আসার পর এই চাকরি ছিল চেয়ারম্যান মাওয়ের পাওয়া প্রথম চাকরি।এই ভবনের এক তলার একটি ঘর চেয়ারম্যান মাওয়ের পড়ার ঘর ছিল।এখনও এই ঘরের টেবিল আর চেয়ার ভালভাবে সংরক্ষিত আছে।আপনারা নিশ্চয় জানেন , চেয়ারম্যান মাও ছিলেন চীন গণ প্রজাতন্ত্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট। এগুলো দেখে মনে হয় মানুষ আবার অতীতে ফিরে গেছে।এই " লাল ভবনের কাছে ৪ঠা মে নামে একটি রাস্তা আছে।এই রাস্তার দু পাশে অনেক বইয়ের দোকান আছে।এ সব বইয়ের দোকানে নানা ধরনের বাই পাওয়া যায় । পেইচিংএর বিখ্যাত চিত্রাঙ্ক ভবন এই রাস্তায় অবস্থিত।এই চিত্রাঙ্কন ভবনে চীনের আধুনিক কালের শ্রেষ্ঠ চিত্রাঙ্কন এবং লোক চিত্রাঙ্কন সাজানো।এই রাস্তার দক্ষিণ দিকে দশ মিনিট পথ এগিয়ে গেলে পেইচিংএর আরেকটি বিখ্যাত স্থাপত্য---তিয়েন আন মেন ।১৯৪৯ সালের ১ অকটোবর চেয়ারম্যান মাও এখানে বিশ্বের কাছে নতুন চীনের জন্মের কথা ঘোষণা করেছিলেন।

    থিয়েন আন মেনের আগের নাম ছিল জেন থিয়েন মেন ।পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে অথার্ত মিং রাজবংশীয় আমলে থিয়েন আন মেনের নির্মান কাজ শুরু হয়।সপ্তদশ শতাব্দীতে অর্থাত ছিন রাজবংশ আমলে জেন থিয়েন মেন বদলে থিয়েন আন মেন হয়।তখন থিয়েন আন মেনের সামনে ১১ একর আয়তনের চত্বর ছিল।পূর্ব, পশ্চিম এবং দক্ষিণ দিকে লাল রংয়ের দেওয়াল ঘেরা ছিল। সাধারণ জনগণ সহজে ভেতরে প্রবেশ করতে পারতেন না।নয়া চীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তিয়েন আন মেন চার বার অপেক্ষাকৃত বিরাটাকারের মেরামত হওয়ার পর পুরোপুরি নতুন রুপ ধরেছে।চীনের গুরুত্বপূর্ণ উদযাপনী অনুষ্ঠান এবং জনসমাবেশ এখানে পালিত হয়।উপরে দাঁড়ালে বিশ্বের বৃহত্তম মহা চত্বর নজরে পড়ে।ইতালি থেকে আসা পযর্টক সোফিলি তিয়েন আন মেনের সুন্দর দৃশ্যের প্রসংশায় পঞ্চ মুখ হলেন।

    থিয়েন আন মেনের চত্বর খুব প্রশাস্ত । থিয়েন আন মেনের টাইওয়ার দেখতে প্রাসাদের মতো ।এখনও এ সব দেওয়াল ভালভাবে সংরক্ষিত আছে। এটা মোটেই সহজ কাজ নয়।থিয়েন আন মেন আমার মনে গভীর রেখাপাত করেছে।