v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-05-26 13:06:27    
বামনী মেয়ে উ সিয়াওলি'র গল্প

cri
    উ সিয়াওলি একজন বামনী মেয়ে, তার বয়স বিশের উপর, কিন্তু উচ্চতা এক মিটারেরও কম এবং তার ওজন মাত্র দশ-বারো কেজি। দেহের গঠনটি ছোটো হলেও তার আকাঙক্ষা বেশি। তিনি এক সুখী আর হাসি-খুশী মেয়ে। তিনি চমত্কারভাবে গান গাইতে পারেন। তার গান গাওয়ার মান উন্নত করার জন্যে তিনি অনেক বিখ্যাত গায়িকার ছাত্রী হন, তাদের সাহায্যে উ সিয়াওলির গান গাওয়ার মান অনেক উন্নত হয়েছে। এখন উ সিয়াওলির নাম বহু লোকে জানেন। বামনী মেয়ে হলেও উ সিয়াওলি সাধারণ মানুষের মতো প্রেম চান, তিনি সাধারণ মানুষের মতো পারিবারিক জীবনযাপন করতে চান।

    সাংহাই অবস্থানকালে উ সিয়াওলি হুচু অপেরাও শিখেছেন। শিল্পী চু ফোংপোর পরিচয় পাওয়ায় উ সিয়াওলির জীবনে এক নতুন অধ্যায় সৃষ্টি হয়েছে। উ সিয়াওলি থিয়েনচিন শহরের এক সংগীত নৃত্য দলে যোগ দেন। এখানে তিনি চীনের কেন্দ্রীয় সংগীত ইনন্সিটটিউটের শিক্ষিকা পাং ই ফির সঙ্গে পরিচিত হন। শিক্ষিকা পাং ইফির সাহায্যে উ সিয়াওলি চীনের কেন্দ্রীয় সংগীত ইনস্টিটিউটের প্রফেসর কাও ইয়ুনের এক বিশেষ ছাত্রী হন।

    উ সিয়াওলির গাওয়া রাস্তার দেবী গানটি শুনে প্রফেসর কাওইয়ুন মুগ্ধ হন এবং এই অতি ক্ষুদ্রকায়া ছাত্রীকে গ্রহণ করতে রাজী হন। এর পর উ সিয়াওলি প্রতিদিন ভোর চারটায় ঘুম থেকে জেগে উঠে থিয়েনচিন শহরের উত্তর উপকণ্ঠে তার বাসস্থান থেকে পর পর বাস বদল করে থিয়েনচিন শহরের পশ্চিমে রেল স্টেশনে গিয়ে রেলগাড়ি চড়ে পেইচিংয়ের প্রফেসর কাওইয়ুনের কাছে গান শিখতে যেতেন। এটা সাধারণ মানুষের পক্ষেও সহজ ব্যাপার নয়, বামনী মেয়ে উ সিয়াওলির পক্ষে এটি যে কত কষ্টকর তা কল্পনা করা কঠিন নয়। প্রফেসর কাওইয়ুন উ সিয়াওলির সকালে নাস্তা না খাওয়ার কথা জানতে পেরে তার জন্যে ক্লাস নেয়ার সময় পরিবর্তন করেন এবং প্রায়ই উ সিয়াওলির জন্যে নাস্তা তৈরীও করেন। ফলে উ সিয়াওলি নিশ্চিন্তভাবে প্রফেসর কাওয়ের কাছ থেকে গান শিখতে পারেন। কিছু দিন পর উ সিয়াওলি থিয়েনচিন সংগীত নৃত্য দলের কাজ ছেড়ে দিয়ে পেইচিং এসে এক দিকে উপার্জন করেন এবং অন্যদিকে গান শিখেন। উ সিয়াওলি পেইচিংয়ে মাঝে মাঝে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশনও করেন।

    উ সিয়াওলি বলেছেন, আমি গান পরিবেশন করে যে আয় পাই তা দিয়ে আমি গান শিখার খরচ পুষিয়ে দেই এবং কল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করি।

    উ সিয়াওলি বামনী মেয়ে হলেও সাধারণ মানুষের মতো প্রেম করতে চান। প্রেমের সম্পর্কে তিনি নিজের মানদণ্ড কমিয়ে দিতে চান না। নিজের মনের মানুষ সম্পর্কে উ সিয়াওলি বলেছেন,আমার প্রেমিককে একজন শিক্ষিত মানুষ হতে হবে। আমি চাই এক বাস্তবাদী বৈচিত্র্যময় স্বাস্থ্যসম্মত আর স্বাভাবিক জীবন। আমার কাছে দেহের উচ্চতা কোনো সমস্যা নয়, মনের মিল হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক।

    উ সিয়াওলি গান দিয়ে প্রেম সম্পর্কে নিজের আকাঙক্ষা ব্যক্ত করেছেন।

    বামনী মেয়ে হলেও উ সিয়াওলি স্বাভাবিক মানুষ সহ অনেক লোকের প্রেমপত্র পেয়েছেন। তার পক্ষে কি ধরনের লোক উপযুক্ত? স্বাভাবিক লোক, না তার মতো বামন লোক ? সে সম্পর্কে উ সিয়াওলি বলেছেন, যদি দু'জনই বামন লোক তাহলে তাদের অনেক অসুবিধা থাকবে। প্রেমিক-প্রেমিকা দু'জনেরই পরস্পরের পরিপূরক হওয়া উচিত।

    উ সিয়াওলির নাম এখন অনেকের কাছে অজানা নয়। তিনি এখন ধন্যমনে সমাজকে এবং তাকে সাহায্য করেছেন এমন সব লোকের কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি বলেছেন, আমি মনে করি, জীবিত থাকাকালে এই ধারণা থাকা উচিত নয় যে, আপনি যা পেয়েছেন তার সবই পাওয়া উচিত। যদি আপনার এ ধরনের ধারণা থাকে, তাহলে আপনি কোনদিনই খুশি হবেন না, এক ধন্য মনে জীবনযাপন করলে আপনার যতই অসুবিধা থাকুক না কেন আপনি ক্ষমাপূর্ণ মন দিয়ে তা সমাধান করতে পারবেন, এ জন্যে আপনি খুশি হবেন।

    উ সিয়াওলি একজন হাসি-খুশি আর আত্মবিশ্বাসী মেয়ে। তার খুশি আর আনন্দ ভিন্ন অভিজ্ঞতা থেকে আসে। চলার পথে তিনি শিল্পী চুফোংপো আর প্রফেসর কাওইয়ুন, দর্শকশ্রোতা আর সাধারণ নাগরিকের প্রযত্ন আর ভালবাসা পেয়েছেন, এই সব প্রযত্ন আর ভালবাসা উ সিয়াওলির আজকের আনন্দ আর আত্মবিশ্বাসের উত্স।