এই সপ্তাহে পেইচিংয়ে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি মেলা চলছে । চীনের উপ-প্রধান মন্ত্রী হুই লিয়ান ইউ ২৪ তারিখে মেলায় বক্তৃতা দেয়ার সময় বলেছেন , প্রযুক্তিগত আবিস্কার একটি দেশের উন্নয়ন সমর্থনকারী ভিত্তি । চীন সরকার বলিষ্ঠ ব্যবস্থা নিয়ে ব্যাপকভাবে স্বতন্ত্র আবিস্কারের ক্ষমতা উন্নত করবে এবং চীনের সার্বিক, সমন্বিত আর টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নতি তরান্বিত করবে ।
চীন সরকার দেশের উন্নয়নে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ভূমিকার ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে , স্পষ্টভাষায় বিজ্ঞান ও শিক্ষার মাধ্যমে দেশকে চাঙ্গা করে তোলার রণনীতি উপস্থাপন করেছে এবং বৈজ্ঞানিক আর প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও আবিস্কারকে উত্পাদন শক্তিতে রূপান্তরের লক্ষে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সাফল্য সম্প্রসারিত করবে । গত কয়েক বছরে চীনে সঙ্কর ধান , মানববাহী নভোযান প্রভৃতি ক্ষেত্রে কতকগুলো ধারাবাহিক লক্ষনীয় বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সাফল্য অর্জিত হয়েছে । বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির এই সব গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য চীনের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তরান্বিত করা , চীনের সার্বিক রাষ্ট্রীয় শক্তি বাড়ানো আর জনতার জীবনযাত্রার মান উন্নত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ।
চীনের উপ-প্রধান মন্ত্রী হুই লিয়াং ইউ ২৪ তারিখে পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত অষ্টম আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি মেলায় বক্তৃতা দেয়ার সময় বলেছেন , চীন আরো বেশি ব্যবস্থা নিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতি তরান্বিত করবে এবং স্বতন্ত্র আবিস্কারের ক্ষমতা উন্নত করবে । তিনি বলেছেন ,
স্বতন্ত্র আবিস্কারের বর্ধিত ক্ষমতাকে আধুনিকায়ন নির্মানকাজের বিভিন্ন ক্ষেত্র , বিভিন্ন শিল্প , বৃত্তি ও অঞ্চলে কাজে লাগাতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে আরো বেশি স্বতন্ত্র মেধা সম্পদ অধিকার করতে হবে ।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন তরান্বিত করা আর আবিস্কারের ক্ষমতা বাড়ানোর বিস্তারিত ব্যবস্থা প্রসংগে হুই লিয়াং ইউ বলেছেন , এই কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শিল্প প্রতিষ্ঠানভিত্তিক প্রযুক্তিগত আবিস্কারের নতুন ব্যবস্থা গড়ে তোলা , স্বতন্ত্র আবিস্কারের জন্য কল্যানকর কর আর ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রনয়ন ও বাস্তবায়ন করা , প্রযুক্তিগত আবিস্কার খাতে নতুন পুঁজিবিনিয়োগের জন্য শিল্প প্রতিষ্ঠানকে সমর্থন করা , স্বতন্ত্র মেধা-স্বত্ব গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি উন্নয়ন করা এবং বিশ্বের প্রসিদ্ধ মার্কার পন্য সৃস্টি করা ।
জানা গেছে , গত কয়েক বছরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির খরচ খাতে চীনের অর্থ বরাদ্দ ক্রমাগত বেড়ে গেছে । ২০০৩ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে চীনের খরচ দেশের অভ্যন্তরীণ জি ডি পির শতকরা ১.৩ ভাগ হয়েছে । এই অনুপাত ছ'বছর আগেকার দ্বিগুণ হয়েছে । চীনের বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির উন্নয়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী , এবছরের শেষ দিকে চীনের জি ডি পির মধ্যে বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি খাতে খরচের অনুপাত শতকরা ১.৫ ভাগেরও বেশি হবে ।
হুই লিয়ান ইউ জোর দিয়ে আরো বলেছেন , চীন ব্যাপকভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যোগ্য কর্মীলালন পালন আর আমদানি করবে , কৃতী কর্মী আরো বেশী কাজে লাগানোর ব্যবস্থা নিরন্তর পূর্ণাংগ করবে , বিদেশে বিশ্বের উন্নত মানের বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি অধ্যয়নের জন্য অব্যাহতভাবে কৃতী কর্মীদের পাঠাবে , এর সংগে সংগে চীন দেশের গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত প্রকল্পের নির্মানকাজে শ্রেষ্ঠ প্রৌঢ় ও অল্পবয়সী কর্মীকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগাবে এবং চীনে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত প্রকল্পে সহযোগিতা চালাতে বিদেশী বিশেষজ্ঞ ও পন্ডিতদের আকৃষ্ট করার জন্য বিবিধ পদ্ধতি গ্রহণ করবে ।
স্বতন্ত্র আবিস্কারের কথা জোরালভাবে উল্লেখ করার সংগে সংগে হুই লিয়াং ইউ এই মত প্রকাশ করেছেন , চীন আন্তর্জাতিক আদান প্রদান ও সহযোগিতাও সমর্থন করে । তিনি বলেছেন ,
আমরা মনে করি যে , ব্যাপক আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় প্রকৃতি বিজ্ঞান , মানব তত্ত্ব , সমাজ বিজ্ঞান প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত আবিস্কারের ওপর গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন । স্বতন্ত্র আবিস্কারের ক্ষমতা উন্নত করার পথে চীন সরকার বরাবরই বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত আন্তর্জাতিক আদান প্রদানযআর সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দেয় এবং আগের মতো ভবিষ্যতেও তা সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে ।
|