v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-05-20 18:38:04    
হুওয়াং মেন লিন

cri
    চীনের স্কেটিং এবং স্কিং ক্রীড়ার কথা বর্ণনা করলে আপনাদের মনে প্রথমে পড়ে শীতকালীণ ওলিম্পিক গেমসের প্রথম স্বর্ণ বিজয়ী চীনের দ্বৈত স্কেটিং ইভেন্টের বিশ্ব চ্যাম্পীয়ন সেন শিয়ে এবং চাও হং বোএর কথা।কেননা তাঁরা দু জন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়বেশ কয়েক বার শীরোপা অর্জন করেছেন। চীনে তথা পৃথিবীতে তাঁদের অনেক সুনাম আছে।কিন্তু তাঁরা দু জন ছাড়াও আরেক জন নারী ক্রীড়াবিদ রয়েছে যার ভবিষ্যত খুব সম্ভাবময় ।তাঁর নাম হুওয়াং মেন লিন।হয়তো তাঁর নাম এখনো অনেকের কাছে অপরিচিত, তবে আগামী বছর দুলিনে অনুষ্ঠিতব্য স্পীত স্কেটিং প্রতিযোগিতায় তিনি স্বর্ণপদকের তুমুল প্রতিযোগি হতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

    অপেক্ষাকৃত বেশী অর্থ বরাদ্দ করতে হবে বলে চীনে টেবিল-টেনিস এবং ব্যাডমিন্টনের মতো স্কেটিং এবং স্কিং ক্রীড়া তেমন জনপ্রিয় হয়নি।তবে গত কয়েক বছরে চীনের স্কেটিং আর স্কিং ক্রীড়ায় লক্ষ্যনীয় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।২০০২ সালের সল্ট লেইক শীতকালীণ ওলিম্পিক গেমসে চীনের নাম-করা নারী ক্রীড়াবিদইয়াং ইয়াংয়ের নেতৃত্বাধীন চীনের স্পীত স্কেটিং দল শীতকালীণ ওলিম্পিক গেমসের ইতিহাসে নজীরবিহীন সাফল্য অর্জন করেছেন।ইয়াং ইয়াং সেবার শীতকালীণ ওলিম্পিক গেমসে একটি স্বর্গপদক অর্জন করেছেন। এটা ছিল শীতকালীণ ওলিম্পিক গেমসের ইতিহাসে চীনা ক্রীড়াবিদের অর্জিত প্রথমটি স্বর্ণপদক।২০০৬ সালের প্রথম দিকে ২০তম শীতকালীণ ওলিম্পিক গেমস ইতালির টুলিনে অনুষ্ঠিত হবে।৩১ বছর বয়স্ক স্পীত স্কেটিং ক্রীড়াবিদ হুওয়াং মেন লি এই গেমসে একটি স্বর্ণপদক অর্জন করতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে।এই মৌসুমের স্পীত স্কেটিং বিশ্ব কার্প প্রতিযোগিতায় তিনি চারটি শাখায় চ্যাম্পীয়ন হয়েছেন।ফাইনাল প্রতিযোগিতায় তিনি শীরোপাও অর্জন করেছেন।সম্প্রতি সমাপ্ত চীনের দশম জাতীয় গেমসের স্পীত স্কেটিং প্রতিযোগিতায় তিনি নারী অলরাউন্ড প্রতিযোগিতার শীরোপা অর্জন করেছেন।দীর্ঘ দিনের কঠোর প্রচেষ্টায় তিনি এই চমত্কার সাফল্য অর্জন করেছেন। তাঁর কোচ শিয়ে তিয়েন আন এ বিষয়ে ভালোভাবেই জানেন।আসলে হুওয়াং মেন লির ক্রীড়া জীবন মোটেই সুগম নয়।জানা গেছে, শিয়ে তিয়েন আনের স্ত্রী অ-পেশাদার ক্রীড়া ইস্কুলের কোচ ছিলেন। ২০ বছর আগে তিনি হুওয়াং মেন লিকে তাঁর স্বামীর পেশাদার দলে পাঠান।কিছু দিন প্রশিক্ষণের পর শিয়ে তিয়েন আন টের পেলেন যে হুওয়াং মেন লির যৌগ্যতা অন্য নয় জন ক্রীড়াবিদের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল। সুতরাং হুওয়াং মেন লিকে আবার অ-পেশাদার ক্রীড়া ইস্কুলে পাঠানো হয়।হুওয়াং মেন লিও এক সময় মনে মনে স্কেটিং চর্চা পরিত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।তবে তিনি সেটা করেন নি।দু মাসের কঠোর প্রশিক্ষণের পর তিনি আবার পেশাদার দলে ফিরে গেলেন। এ ই সময়পর্বের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে তিনি আবেগের সঙ্গে বললেন,

    আমার শরীরের গঠন ঠিক আছে।তাই কোচরা আমাকে বাছাই করেছিলেন। কিন্তু প্রথম দিকে আমার নৈপুণ্য তেমন ভাল ছিল না। চর্চার সময় আমি সহজেই বরফে পড়ে যেতাম। তবে যখন কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হই তখন বাবার কথা খুব মনে পড়ে। আমার বাবা সব সময় আমাকে বলেন যে, যে কোনো কাজ করতে গেলে ভালভাবে করতে হবে এবং ওই কাজ অব্যাহত রাখতে হবে।আমি সব সময় বাবার কথা মনে রাখি।হুওয়াং মেন লির সরল প্রকৃতির মেয়ে।তিনি প্রেমিনির্ভর টিভি নাটক দেখতে পছন্দ করেন।তবে যখন তিনি বরফের উপর উঠেন তখন একেবারে অন্য রকম একজন মেয়েতে পরিণত হন।চর্চার সময় তিনি অত্যন্ত পরিশ্রম করেন। এভাবে কয়েক মাসের চর্চায় তিনি লক্ষ্যনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছেন।তাঁর কোচ শিয়ে তিয়েন আন মনে করেন, তার এত তাড়াতাড়ি অগ্রগতি অর্জনের কারণ দুটো : প্রথমত:তার নিজের প্রচেষ্টা, দ্বিতীয়ত: তাঁর প্রকৃতি।তিনি বললেন,

    হুওয়াং মেন লির শরীরীক গঠন খুব বলিষ্ঠ।আমি অনের ক্রীড়াবিদকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তাদের মধ্যে অনেকেই ভেড়ার মতো।কোচ যা বলেন তারা তাই করে।এ ধরনের ক্রীড়াবিদ সাধারণত ভাল সাফল্য অর্জন করতে পারে না।কিন্তু হুওযাং মেন লির নিজস্বব্যক্তিত্ব আছে।প্রশিক্ষণের ব্যাপারে তিনি মাঝে মাঝে কোচদের সঙ্গে আলোচনা করেন । কোচদের সঙ্গে ভিন্ন মত থাকলে তিনি সাহসের সঙ্গে নিজের মত উত্থাপন করেন।যে কোনো প্রতিযোগিতায় হেরে গেলে তিনি সহজেই পরাজয় স্বীকার করেন ।এ ধরনের প্রকৃতি তার জন্য কল্যাণকর।

    একজন বিশ্ব চ্যাম্পীয়ন হয়ে ওঠা সময়সাপেক্ষ।এই প্রক্রিয়ায় হুওয়াং মেন লি বিভিন্ন পক্ষ থেকে সাহায্য পেয়ে এসেছেন।তিনি প্রকাশ্যে বেশ কয়েক বার বলেছেন, তাঁর বাবা মা এবং স্বামী তাকে নি:স্বার্থ আর আন্তরিক সাহায্য দিয়েছেন।তাদের সমর্থন আর সাহায্য ছাড়া তিনি আজকের এই অবস্থানে আসতে পারতেন না।তিনি আশা করেন, আগামী বছরের শীতকালীণ ওলিম্পিক গেমসে একটি স্বর্ণপদক অর্জনের সব রকম চেষ্টা করবেন।তিনি বললেন,

    আমার বাবা -মা সবর্দাই আমাকে সমর্থন করে এসেছেন।তাঁরা মনে করেন আমি তাঁদের মুখ উজ্জ্বল করেছি।যখন আমি কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নেই তখন তাঁরা অবশ্যই সে প্রতিযোগিতা দেখেন।তা ছাড়া , আমি কোচদের কাছেও অনেক সাহায্য পেয়েছি।তাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাকে দেখাশোনা করে থাকেন।যার ফলে ধাপে ধাপে আমি অতীতের একজন সাধারণ খেলোয়াড় থেকে বতর্মান বিশ্ব চ্যাম্পীয়নে পরিণত হয়েছি।ওলিম্পিক গেমসে স্বর্ণপদক অজন করা আমার দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন।হুওয়াং মে লির বয়স ৩১ বছর।সুতরাং তাঁর ক্রীড়া জীবন শেষ পর্যায়ে এসেছে।তিনি স্কেটিং ক্রীড়া ভালভাসেন।তিনি আশা করেন, তাঁর ক্রীড়া জীবন শেষ হওয়ার পর তিনি কোচের দায়িত্ব অথবা স্কেটিং বা স্কিং ক্রীড়ার সঙ্গে জড়িত প্রাসঙ্গিক পেশায় লিপ্ত হতে চান।যাতে তিনি অব্যহতভাবে চীনের স্কেটিং আর স্কিং ক্রীড়ার জন্য নতুন অবদান রাখতে পারেন।