বসন্তকালের মার্চ মাসে বিশাল ভূভাগে আবার সবুজের আস্তরণ দেখা দিয়েছে । ফেন ইয়াং হ্রদের সুজলা-সুফলা তীরবর্তী চিয়াংসি প্রদেশের দু ছাং জেলার কৃষকরা বসন্তকালের চাষাবাদের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। প্রযুক্তিবিদ আমন্ত্রণ ,বাজারের তথ্য জানা ও প্রশিক্ষণ নেয়া চাষাবাদের প্রস্তুতির তিনটি নতুনত্ব ।
থু খান টাউনের হান ছৌ গ্রামে খাদ্যশস্যচাষী লিয়ু চিন দির সঙ্গে সংবাদদাতার সাক্ষাত্ হয় । তিনি গত বছর ১০০ মু জমি অথার্ত্ প্রায় ১৭ একর জমির ঠিকা নিয়েছেন । খাদ্যে মোট উত্পাদন পরিমাণ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার কিলোগ্রাম । বাষির্ক আয় হয়েছে ১ লক্ষ ইউয়ানেরও বেশী । তিনি বলেছেন , "চাষাবাদ এখন শুধু অভিজ্ঞতা ও প্রকৃতির উপর নির্ভর করছে না , বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উপরও নির্ভর করছে ।" তিনি নিজের খরচে দশ বারোটি পত্রিকা ও সাময়িকীর গ্রাহক হয়েছেন । তবুও তা যথেষ্ট মনে না করে বিশেষভাবে টাউনের কৃষিপ্রযুক্তি কেন্দ্র থেকে একজন প্রযুক্তিবিদকে নিজের চাষাবাদের উপদেষ্টা হিসেবে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন ।
উত্পাদনে কৃষকদের সম্মুখীণ সমস্যাদি সমাধানের জন্য দু ছাং জেলা কমিটি ও জেলা সরকার কৃষি ,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইত্যাদি বিভাগ থেকে শতাধিক লোক বেছে নিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পরিসেবা দল গঠন করে গোটা জেলার ২৪টি মহকুমা ও টাউনে পাঠায় । তাঁরা কৃষকদের সঙ্গে সামনাসামনি আলাপ আলোচনা করেন । বিভিন্ন মহকুমা ও টাউন আর বিভিন্ন খামারও পরপর কৃষিপ্রযুক্তি পরিসেবা দল গঠন করে । দলের প্রযুক্তিবিদরা খাদ্যশস্যচাষীদের সাহায্য করেন এবং স্বতস্ফূতর্ভাবে তাদের প্রযুক্তি উপদেষ্টা হন । জানা গেছে ,এখন গোটা জেলায় মোট ২০০০-এরও বেশী কৃষক পরিবার চাষাবাদের উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ।
সংবাদদাতা ওয়াং তুয়ান মহকুমায় সাক্ষাত্কার নেয়ার সময়ে কৃষক ওয়ান শৌ ছুয়ান মহকৃমার কৃষি অথর্নীতি ওয়েবসাইট অফিসে কম্পিউটারের সামনে বসে বিভিন্ন স্থানের কৃষিজাত পণ্যের তথ্য দেখছেন এবং মাঝে মাঝে নোটবুকে লিখছেন । তিনি আনন্দের সঙ্গে বলেছেন ,"অতীতে কৃষকরা বাজারের চাহিদার খবর না রেখে অন্ধভাবে চাষাবাদ করতেন । প্রায়ই এমন অবস্থা হতো যে ,সারা বছর খেটেও তেমন কোনো আশানুরুপ আয় হতো না । এখন অবস্থার পরিবতর্ন হয়েছে । বাজারের চাহিদা অনুসারেই চাষাবাদ হচ্ছে ।"গত বছর তিনি বাজারের দেয়া তথ্য অনুসারে ৫০ মু অথার্ত্ আট একরের বেশী জমিতে চাঁদোয়ায় শাকসব্জীর চাষ করেছেন । তাতে আয় হয়েছে বিশ হাজার ইউয়ান ।
কৃষির কাঠামোর পুনবির্ন্যাসের সঙ্গে সঙ্গে দু ছাং জেলার কিছু বুদ্ধিমান কৃষক স্বতস্ফূতর্ভাবে কৃষি উত্পাদনের প্রক্রিয়ায় বাজার অনুসরণ করতে শুরু করেছেন । কেউ কেউ কৃষি ব্যুরো , কৃষিপ্রযুক্তি জনপ্রিয়করণ কেন্দ্র , বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যুরো ইত্যাদি কৃষি সম্পকির্ত বিভাগে গিয়ে নতুন বীজ , নতুন প্রযুক্তি ইত্যাদি জেনে নেন । কেউ কেউ শাকসব্জীর বাজার , সুপার-মাকের্ট ইত্যাদি জায়গায় গিয়ে বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্যের বিক্রীর অবস্থা জেনে নেন । নেটওয়ার্ক থেকে অন্যান্য স্থানের কৃষিজাত পণ্যের তথ্য জেনে নেয়া দু ছাং জেলার কৃষকদের নতুন সূত্রও বটে ।
২৪ মার্চ সকাল সকাল সু পু টাউনের কৃষক ইউয়ান সুই হাই টাউনের কৃষিপ্রযুক্তি কেন্দ্রে এসে এই কেন্দ্রের প্রধান ইউ হুইয়ের দেওয়া ফলগাছ রোপন ও লালন ,হাঁস-মুর্গী পালন ,ধানক্ষেতের পোকা নিবারণ ইত্যাদি জ্ঞান সম্পকির্ত বক্তৃতা শুনেছেন । তিনি হেসে বলেছেন ,"কৃষকরা এরকম প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নিতে পছন্দ করেন । আশা করি ভবিষ্যতে সরকার বেশী করে এরকম প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করবে ।"এবছর সু পু টাউনে ৫বার কৃষির ব্যবহারিক প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করা হয়েছে । ২০০০-এরও বেশী কৃষক এই সব কোর্সে অংশ নিয়েছেন ।
এবছর থেকে গোটা দু ছাং জেলায় মোট ২০বারেরও বেশী বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করা হয়েছে । প্রায় দশ হাজার কৃষক এগুলোতে অংশ নিয়েছেন । কৃষকদের দৃষ্টি প্রসারিত হয়েছে এবং তাদের চাষাবাদের সক্রিয়তা আরও বেড়েছে ।
|