v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-05-17 21:24:05    
চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগার

cri
    কিছু দিন আগে চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারের ৯৫তমো প্রতিষ্ঠা বাষির্কী উপলক্ষে একটি স্মৃতি সভার আয়োজন করা হয়েছে । আন্তজার্তিক গ্রন্থনাগার ইউনিয়নের মহাসচিব এই স্মৃতি সভায় অংশ নিয়েছেন এবং ভাষণ দিয়েছেন । চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারের পুবর্সুরী হচ্ছে

    ১৯০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত চিন শি গ্রন্থনাগার । এই গ্রন্থনাগারের নাম ও স্থান একাধিকবার পরিবর্তন করা হয়েছিল , ১৯৪৯ সালে চীন গণ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর সরকার এই গ্রন্থনাগারের নাম দিয়েছে পেইচিং গ্রন্থনাগার । ১৯৯৮ সালে এই গ্রন্থনাগারের নাম আবার চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারে পরিবর্তন করা হয়েছে । চীনের ইতিহাসের বিখ্যাত পন্ডিত লু সুইন , লিয়ান ছি ছাও আর ছাই ইউয়ান পেই এই গ্রন্থনাগারের প্রধান ছিলেন , চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারের বর্তমান প্রধান মিঃ রেন চি ইউর বয়স ৮৭ বছর , তিনি চীনের একজন নামকরা দার্শনিক ।

    জাতীয় গ্রন্থনাগারের প্রধান ভুমিকা ছিল দেশের নানা ধরনের বইপত্র সংগ্রহ করা , পাঠকরা এই গ্রন্থনাগারে বই   পড়ার জন্য ঢুকতে পারতেন না , এখন এই গ্রন্থনাগারের প্রধান ভুমিকা হলো ব্যাপক পাঠকদের সেবা করা । সমাজের পরিবর্তনের সংগে সংগে জাতীয় গ্রন্থনাগার চীনের বৃহতমো পাবলিক গ্রন্থনাগার ও দেশের সাধারণ বই গুদামে পরিণত হয়েছে । চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারের প্রধান জনাব রেন চি ইউ বলেছেন , ৯৫ বছর আগে অর্থাত ছিং রাজবংশের শেষ দিকে চিন সি গ্রন্থনাগার প্রতিষ্ঠিত হয় , এটা হচ্ছে চীনের গ্রন্থনাগার ব্রতের সুচনা । প্রায় এক শতাব্দী সময়ের মধ্য দিয়ে চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারের আকার ক্রমেই বড় হচ্ছে আর বইপত্রের সংখ্যা অনেক বেড়েছে , এটা কয়েক প্রজন্মের কর্মীর নিরলস প্রচেষ্টার ফল ।

    চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারের বইপত্রের মধ্যে আছে সাত শ' বছর আগেকার রাজকীয় পরিবারের বইপত্র , সবচেয়ে প্রাচীন বই হচ্ছে তিন হাজার বছরের ইতিহাসসম্পন্ন সান রাজবংশের পশুর হাড়ের উপর খোদাই অক্ষর । ২০০৩ সালের শেষ নাগাদ পর্যন্ত চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারের রক্ষিত বইপত্রের মোট সংখ্যা ছিল দু কোটি ৪১ লক্ষ দশ হাজার , এ ক্ষেত্রে পৃথিবীর বড় বড় গ্রন্থনাগারগুলোর মধ্যে চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারের স্থান হচ্ছে পঞ্চম । বইগুলোর মধ্যে প্রাচীন বইপত্রের সংখ্যা প্রায় ৩০ লক্ষ , এই সব বইপত্রের ইতিহাস এক শ' বছরের উপর । তা ছাড়া জাতীয় গ্রন্থনাগারে ১১৫টি ভাষার বিদেশী বইপত্র আছে , এই সব বইপত্রের সংখ্যা গ্রন্থনাগারের রক্ষিত মোট বইয়ের প্রায় অর্ধেক । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই গ্রন্থনাগারে প্রচুর পরিমান ইন্টার নেটে প্রকাশিত বৈদ্যুতিক বই সংগ্রহ করা হয়েছে , গোটা বছরে মোট ২০ কোটি পারসন টাইম্স পাঠক ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই সব বই পড়েছেন । আন্তর্জাতিক গ্রন্থনাগার ইউনিয়নের মহাসচিব রামাচন্দ্রা চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারের ৯৫তমো প্রতিষ্টা বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ ভাষন দেয়ার সময় গত ৯৫ বছরে চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারের অর্জিত সাফল্যের প্রশংসা করেছেন । তিনি বলেছেন চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগার শুধু চীনের বৃহতমো গ্রন্থনাগার নয় , পৃথিবীর সবচেয়ে উত্কৃষ্ট ও সবচেয়ে বড় গ্রন্থনাগারগুলোর একটি । চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারে রক্ষিত বইপত্রের সংখ্যা বেশী , পৃথিবীতে চীনের জাতিয় গ্রন্থনাগারের মর্যাদা বেশী , আমি আন্তর্জাতিক গ্রন্ধনাগার ইউনিয়নের পক্ষ থেকে চীনা সংস্কৃতি সংরক্ষন ক্ষেত্রে চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারের লক্ষনীয় অবদানের জন্য ধন্যবাদ জানাই ।

    মিঃ রামাচন্দ্রা আরো বলেছেন , চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারের পাঠকদের পরিসেবা ক্ষেত্রের সয়ংক্রিয়করণ ব্যবস্থা বিশ্বের উন্নত মানে পৌচেছে । এই গ্রন্থনাগার পৃথিবীর ৫৪৪টি গ্রন্থনাগারের সংগে বইপত্র ও ম্যাগাজিন বিনিময় সম্পর্ক স্থাপন করেছে । গ্রন্থনাগারে পাঠকদের সেবা করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে , যেমন বৈজ্ঞানিক জ্ঞান সংক্রান্ত রির্পোট সভা আয়োজন , প্রাচীন নথিপত্র মেরামতের কাজে পাঠকদের অংশ নেয়া ইত্যাদি , এই সব বৈশিষ্ট্যময় কর্মসুচী খুব ভালো ।

    বর্তমানে চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প আর চীনের ডিজিটাল গ্রন্থনাগারের নির্মান প্রকল্প অচিরেই শুরু হবে । এটা চীন সরকারের উদ্যোগে চালিত এক গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক প্রকল্প , এর মোট অর্থবিনিয়োগ ১১০ কোটি ইউয়ান ছাড়িয়ে যাবে । প্রকল্প দুটি সম্পন্ন হওয়ার পর চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারে সংরক্ষিত বইয়ের সংখ্যা বিপুর পরিমানে বৃদ্ধি পাবে এবং আগামী ৩০ বছরের বই সংরক্ষনের চাহিদা মেটানো হবে । চীনের ডিজিটাল গ্রন্থনাগারের নির্মান কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর পাঠকরা যে কোনো সময় ও স্থানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিজের প্রয়োজনীয় তথ্য যোগাড় করতে পারেন , এই গ্রন্থনাগার সময় ও স্থান উত্তীর্ণ এক ইন্টারনেট তথ্য কেন্দ্রে পরিণত হবে ।

    দু বছর আগে চীন সরকার সমগ্র দেশে সাংস্কৃতিক তথ্য উপভোগ প্রকল্প বলবত করতে শুরু করে । এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো ইন্টারনেট ও উপগ্রহের মাধ্যমে সম্প্রচার প্রভৃতি বৈজ্ঞানিক প্রচার মাধ্যমের মাধ্যমে সমগ্র দেশে পাবলিক গ্রন্থনাগারের তথ্য সম্পদ পুরোমাত্রায় জনসাধারণের চাহিদা মেটানো , বিশেষ করে বিস্তীর্ণ পল্লী অঞ্চলের অধিবাসীদের চাহিদা মেটানো । চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগার এই প্রকল্পে প্রধান ভুমিকা নেবে । চীনের উপসংস্কৃতি মন্ত্রী চৌ কো পিং মনে করেন , প্রাচীনকালই হোক , আধুনিককালই হোক , জাতীয় গ্রন্থনাগার একটি দেশের সংস্কৃতি ব্রতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নেয় । তিনি বলেছেন , ১৯০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ৯৫ বছরে চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারের আকার ক্রমেই বেড়েছে , গ্রন্থনাগার চীনের সামন্ততান্ত্রিক সমাজ, আধা- সামন্ত ও আধা উপনিবেশবাদী সমাজ আর সমাজতান্ত্রিক সমাজ এই তিনটি সমাজের মধ্য দিয়ে তথ্য সংগ্রহ , নাগরিকদের চেতনা জাগরণ আর সমাজের বিকাশ তরান্বিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্ভপুণূ ভুমিকা নিয়েছে । উপমন্ত্রী চৌ কো পিন আরো বলেছেন , পৃথিবীর শিল্পন্নোত দেশের জাতীয় গ্রন্থনাগারের তুলনায় চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারের এখনও ব্যবধান আছে , বিশেষ করে আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে আরো প্রয়াস চালাতে হবে , আমরা চীনের জাতীয় গ্রন্থনাগারকে চীনের জ্ঞান ও তথ্য কেন্দ্রে পরিণত আর পৃথিবীর চীনাভাষার জ্ঞান ও তথ্য কেন্দ্রে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর ।