v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-04-29 16:11:17    
হোহহটের কৃষকরা গরুলালনের উপর নির্ভর করে ধনী হয়ে উঠেছেন

cri
    চীনের অন্তর্মংগোলীয় স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে বিশাল আয়তনের তৃণভূমি রয়েছে বলে অঞ্চলটি চীনের পশুপালনশিল্পোন্নত একটি অঞ্চল । গত কয়েক বছরে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী হুহহট শহর স্থানীয় বৈশিষ্ট্য অনুসারে দুগ্ধজাত দ্রব্য উত্পাদনশিল্প উন্নয়নের বিরাট প্রচেষ্টা চালিয়েছে এবং ইলি ও মংনিউ ইত্যাদি বেশ কয়েকটি বৃহদাকারের দুধশিল্প গোষ্ঠী গড়ে তুলেছে ও সম্প্রসারিত করেছে । এই সব শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রচুর মুনাফা অজর্নের সংগে সংগে স্থানীয় কৃষকদেরও ধনী করে তুলেছে ।

    হুহহট শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত ছাসুছি টাউনের গরুলালন এলাকা হচ্ছে ইলি গোষ্ঠীর একটি দুধ ঘাঁটি । সংবাদদাতা এখানে দেখেছেন , সারি সারি লাল ইটের বাড়ীগুলো সুশৃংখলভাবে বিন্যস্ত । প্রতিটি বাড়ীর আয়তন প্রায় দু'শো বগর্মিটার । প্রতিটি বাড়ীতে গোশালা ও শীতকালে পশুখাবার মজুদের জন্য ব্যবহায একতৃতীয়াংশ একর জমি ইত্যাদি ব্যবস্থা আছে ।

    এই এলাকার একজন কৃষক সংবাদদাতাকে বলেছেন , কেন্দ্রীভূতভাবে গরু লালনের জন্য তিন বছর আগে স্থানীয় সরকার ও ইলি গোষ্ঠীর যৌথ পুঁজিবিনিয়োগে এখানে একশোটিরও বেশী বাড়ি নিমির্ত হয় । কৃষকরা এই সব বাড়ী কেনার সময়ে ব্যাংকের কাছে তিন বছরের সুদবিহীন ঋণ পাওয়ার আবেদন জানাতে পারেন এবং প্রতিটি গাভী কেনার জন্য ইলি গোষ্ঠির কাছ থেকে সাড়ে চার হাজার রেনমিনপি ঋণ পেতে পারেন ।

    চল্লিশ বছর বয়স্ক রেন পেই পিন পরিবার হচ্ছে এই এলাকার একটি গরু-পালক পরিবার । তিন বছর আগে তিনি সরকার ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দেয়া ঋণ ও নিজের যোগাড় করা কিছু অর্থ দিয়ে দুটো গোশালা ও আটাশটি গাই কেনেন এবং ছোটো আকারের লালন শুরু করেন । তিন বছরের বিকাশের পর এখন তার হয়েছে চল্লিশটিরও বেশী গাই । তিনি বলেছেন ,

    "এই কয়েক বছরে বেশ ভালো বিকাশ হয়েছে । এখন আমাদের পরিবারে পনেরো ষোলোটি দুধেল গাই আছে । রোজ তিনশো কিলোগ্রামেরও বেশী দুধ উত্পাদিত হয় । মাসিক আয় হয় দশ হাজার রেনমিনপি'রও বেশী ।" রেন পেই পিন বলেছেন,তার পরিবার তার বাবার আমল থেকেই গরু লালন করতে শুরু করেছে । কিন্তু অতীতে পুঁজির সীমাবদ্ধতায় কয়েকটি গরু লালনও দুষ্কর ব্যাপার ছিলো । এখন তিনি শুধু চল্লিশটিরও বেশী গাইগরু লালনই করছেন না ,বরং দুধ বিক্রীও সমস্যা নয় । এই এলাকায় দুধ দোহন কেন্দ্র রয়েছে । এই কেন্দ্র কেন্দ্রীভূতভাবে গরুপালক পরিবারগুলোর উত্পাদিত দুধ ক্রয় করে ।

    ইলি গোষ্ঠীর চিয়েন ইউন খুযাং সংবাদদাতাকে বলেছেন ,গরুলালন পরিবারগুলোর স্বার্থ রক্ষার জন্য এই গোষ্ঠী কৃষকদের সংগে আনুষংগিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে । তিনি বলেছেন ,

    "কৃষকদের সংগে আমাদের চুক্তি রয়েছে । তাদের লালিত গাইগরুর উত্পাদিত যাবতীয় দুধ আমরা ক্রয় করি । তাদের যুক্তিসংগত আয় নিশ্চিত করার জন্য এই কয়েক বছরে আমাদের দুধের দাম বরাবরই একটি স্থিতিশীল মানে রয়েছে । প্রতি মাসে আমরা সময়মত তাদের দুধের প্রাপ্য অর্থ তাদের ব্যাংক আকাউন্টে জমা করি । তাছাড়া জাতের নিবার্চন , রোগ নিবারণ ইত্যাদি ক্ষেত্রেও আমরা তাদের সাহায্য করি ।"

    চুক্তির নিশ্চয়তা ও উত্তম পরিসেবার সুবাদে কৃষকদের গরুলালনের সক্রিয়তও বেড়েছে । জানা গেছে , ১৯৯২ সালে হুহহট অঞ্চলে গাইগরুর সংখ্যা আঠারো হাজারেরও নিচে ছিলো ,কিন্তু আজকাল সাড়ে তিন লক্ষে পৌঁচেছে । প্রায় এক লক্ষ কৃষক দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছেন । পরিসংখ্যান অনুযায়ী , গত বছর হুহহট অঞ্চলের কৃষকদের আয়ের অধের্ক এসেছে গরুলালন থেকে ।

    গরুলালনের সুবাদে স্থানীয় কুষকদের জীবনযাত্রার মানের বিরাট পরিবতর্ন ঘটেছে । গরুলালন পরিবার রেন পেই পিন পরিবারের কথাই ধরা যাক ,গরু লালন ছাড়াও তাদের পরিবার গরুর খাদ্য হিসেবে দশ একরেরও বেশী জমিতে ভুট্টার চাষও করেছেন । গরুর খাদ্য পরিবহনের জন্য তার পরিবার বিশেষভাবে দশ হাজার রেনমিনপিরও বেশী অর্থ দিয়ে একটি চার-চাকা-ওয়ালা মোটর ট্রেলারও কিনেছে । রেন পেই পিন বলেছেন ,গরু লালনের ফলে আগেকার তুলনায় এখন তাদের পরিবারের জীবনযাত্রার আমূল পরিবতর্ন ঘটেছে । তিনি বলেছেন ,

    "অতীতে আমাদের পরিবারের খাবার খুবই সহজ সরল ছিলো ,অথার্ত্ নিজ বাড়ীর চাষ করা চীনা আলু ,তখন শাকসব্জী খুব কম ছিলো । এখন বিভিন্ন ধরণের শাকসব্জী ,মাংস ও মাছ প্রায়ই খাই । অতীতে বাড়িতে কোনো ঘরোয়া বৈদ্যুতিক সামগ্রী ছিলো না । এখন বৈদ্যুতিক সামগ্রী ও মোটর-সাইকেল সবই হয়েছে । এবছর কম্পিউটারও কিনেছি । আমি কম্পিউটারে লগ অন করে গরু লালনের তথ্য খুঁজতে চাই ।"