v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-04-26 20:49:11    
সেনসি প্রদেশের হোটেল

cri

    সেনসি প্রদেশে বিদেশী অতিথিদের অভ্যর্থনা জানানোর মোট একাশিটি হোটেল আছে। এই একাশিটি হোটেলে আছে চৌদ্দ হাজার কক্ষ। এই একাশিটি হোটেল প্রতি বছরে বারো লক্ষ অতিথিকে অভ্যর্থনা জানাতে পারে। এই একাশিটি হোটেলের মধ্যে তেতাল্লিশটি হচ্ছে তারকা শ্রেণীর হোটেল। আজকের অনুষ্ঠানে সেনসি প্রদেশের কয়েকটি পাঁচ তারা আর চার তারা শ্রেণীর হোটেল সম্পর্কে কিছু সম্পর্কে কিছু বলছি।

    সেনসি প্রদেশে বিদেশী অতিথিদের জানানোর যাবতীয় হোটেলের একটি শ্লোগান হচ্ছে ,আমরা এমন পরিসেবা দিই যাতে আমাদের এখানে এসে অতিথিদের মনে হয় নিজের বাড়ীতে পৌঁছে।

    সিআনের শেরাটন হোটেলের অতিথি রগার হেইনি স্বামীস্ত্রী আট সপ্তাহ আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এখানে এসেছেন। তারা এই প্রথমবার চীনে এসেছেন। হেইনি বলেছেন, তারা যে শেরাটন হোটেলকে বেছে নিয়েছেন তার কারণ হচ্ছে ,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেখানে তারা থাকতেন এখানকার পরিবেশ তার খুব কাছাকাছি। শেরাটন হোটেলের পরিসেবা খুব ভালো। শেরাটন হোটেলের সদস্যরা সবাই ইংরেজী বলতে পারে। তাদের সংগে আমরা ভাব বিনিময় করতে পারি। হেইনির স্ত্রী বলেছেন, এখানে তারা যেন নিজের বাড়ীতে থাকছেন। তারা দীর্ঘকাল এখানে থাকছেন বলে হোটেল তাদের অনেক সুবিধা দিয়েছে। যেমন, তাদের কাপড় চোপড় বিনামূলো ধুয়ে দেয়া হয়। হোটেলের সাধারণ ম্যানেজারের উদ্যোগে প্রত্যেক মাসে একবার করে অনুষ্ঠিত পানচক্রে অংশ নিয়ে তারা বিভিন্ন মহলের লোকদের সংগে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। সিআনের শেরাটন হোটেল একটি পাঁচ তারকা হোটেল।

    সিআনের প্রাচীন শহরের দেয়ালের দক্ষিণ দ্বারের কাছে অবস্থিত পাঁচ তারকা শ্রেণীর হোটেল সিআনের গ্র্যান্ড ক্যাস্ল হোটেল থেকে সিআনের আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের দূরত্ব গাড়ীতে করে মাত্র চল্লিশ মিনিট। এই হোটেলের ব্যবস্থাপনা করছে জাপানের একটি হোটেল গোষ্ঠী।

    সিআনের গ্র্যান্ড ক্যাস্ল হোটেলের সাধারণ ম্যানেজার নোরিত্ত কানাই বলেছেন, গ্র্যান্ড ক্যাস্ল হোটেলের অতিথিদের শতকরা ৬৫ জন জাপান থেকে এসেছেন। গ্র্যান্ড ক্যাস্ল হোটেলের বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা সবাই সহজ জাপানী ভাষা বলতে পারে। তাছাড়া, তাদের আছে ইউনহাই বেস্তোরা সারা পৃথিবীতে এই রেস্তোঁরার খ্যাতি আছে। এই রেস্তোঁরার প্রধান পাচককে জাপান থেকে আমন্ত্রণ করে আনা হয়েছে।

    হায়াত্রিজেন্সি হোটেল সিআনের প্রাচীন শহরের দেয়ালের অভ্যন্তে অবস্থিত একমাত্র পাঁচ তারা হোটেল। এই হোটেলের অতিথিদের শতকরা ৭০জন এসেছেন এশিয়া থেকে এবং শতকরা ৩০জন এসেছেন ইউরোপ আর লাতিন আমেরিকা থেকে।

    হায়াত রিজেন্সি হোটেলের সাধারণ ম্যানেজার পাউল হুয়েন্টোবলার বলেছেন, বর্তমানে সিআন শহরে বিদেশী অতিথিদের অভ্যর্থনাজানানোর জন্য তিরিশটিরও বেশী হোটেল আছে।এগুলোর মধ্যে হায়াত বিজেন্সি হোটেলের স্থান পুরোভাগে। কারণ হায়াত রিজেন্সি নামটা বিশ্ববিখ্যাত। বর্তমানে চীনে দুটো হায়াত রিজেন্সি হোটেল আছে। একটা থিয়েনচিন শহরে এবং আরেকটা সিআন শহরে। হায়াত রিজেন্সি হোটেল বরাবরই পরিসেবার উচ্চ মান বজায় রেখেছে।

    সেনসি প্রদেশের তিনটি পাঁচ তারকা শ্রেণীর হোটেল অর্থাত্ সিআনের শেরাটন হোটেল ,সিআনের গ্র্যান্ড ক্যাস্ল হোটেল এবং সিআনের হায়াত্ রিজেন্সি হোটেল সম্পর্কে এতক্ষণ আপনারা কিছু জানেন। এবার সেনসি প্রদেশের কয়েকটি চার তারকা শ্রেণীর হোটেল সম্পর্কে কিছু জানেন।

    সিআনের লা গার্ডেন হোটেল একটি চার তারকা শ্রেণীর হোটেল। মাধারণ ম্যানেজার চু চিন চাং বলেছেন , সিআনের প্রতিটি হোটেল কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার উপর অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। কিন্তু লাগার্ডেন হোটেল বরাবর অবিরামভাবে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে চলেছে। লা গার্ডেন হোটেল একটি আন্তর্জাতিক হোটেল। এই হোটেলের অতিথিরা বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন।

    সিআনের গ্র্যান্ড নিউ ওয়ার্ল্ড হোটেল আর একটি চার তারকা শ্রেণীর হোটেল। চীনা জাতির বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হোটেল এটি। চীনের প্রাচীন স্থাপত্যরীতিতে এই হোটেল নির্মিত হয়েছে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগা যে, এই হোটেলে একটি বড় থিয়েটার আছে। এই থিয়েটারে এক হাজার এক শো তিরিশজন দর্শক বসতে পারে। প্রতি বছরের ১লা এপ্রিল থেকে ৩১শে অক্টোবর পর্যন্ত এই থিয়েটারে পরিবেশিত নির্দিষ্ট নাট্যানুষ্ঠান উপভোগ করে দর্শকরা প্রাচীন সিআন অর্থাত্ ছাংআন শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব সম্পন্ন ঐতিহাসিক সময়পর্বের ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হতে পারেন। নির্দিষ্ট নাট্যানুষ্ঠানে প্রাচীন ছাংআন শহরের ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক রুপ তুলে ধরা হয়।

    সিআন শহরে চীনের বিশেষ বৈশিষ্টা সম্পন্ন আর একটি হোটেল আছে।তার নাম সিআনের থাং হুয়া গার্ডেন হোটেল। এই হোটেল তা ইয়েন প্যাগোতা অর্থাত্ বুনো হংস প্যাগোডার পাশে অবস্থিত। চীনের প্রাচীন থাং রাজরংশের আমলের স্থাপত্যরীতির অনুকরণে এই হোটেলের ভবনগুলো নির্মিত হয়েছে। এই হোটেলের সর্বোচ্চ ভবন মাত্র চারতলাবিশীষ্ট । এর একতৃতীয়াংশ কক্ষের জানালা থেকে বুনো হংস প্যাগোডা দেখা যায়।

    সিআনের থাং হুয়া গার্ডেন হোটেলে বিক্লাংগ অতিথিদের অভ্যর্থনা জানানোর বিশেষ কক্ষও আছে। পর্যটক ছাড়া, বড় বড় সম্মেলনের অতিথিদের অভ্যর্থনা জানানোর ক্ষমতাও আছে এই হোটেলের। গত জুন মাসে এখানে রেশমী পথ সম্পর্কে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে এখানে পঞ্চম বিশ্ব ঐতিহাসিক রাজধানী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

    যদি আপনি ষোলো আনা চীনের পরিসেবা পেতে চান তাহলে আপনি সিআন হোটেলের অতিথি হন। সিআন হোটেল পুরোপুরি চীনাদের ডিজাইনে নির্মিত এবং চীনারাই এই হোটেলের ব্যবস্থাপনা চালাচ্ছে। সিআনের যাবতীয় হোটেলের মধ্যে এই হোটেলই সবচেয়ে বেশী বিদেশী অতিথিকে অভ্যর্থনা জানিয়েছে। ১৯৮২ সাল থেকে এপর্যন্ত সিআন হোটেল মোট ৩৬টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে অভ্যর্থনা জানিয়েছে।

    সেনসি প্রদেশে চীনাদের ব্যবস্থাপনার আর একটি হোটেল আছে। তার নাম সিআনের জিয়ান গুও হোটেল। সিআন হোটেলের পার্থক্য এই যে, জিয়ান গুও হোটেল চীন আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ অর্থীবনিয়োগে চালিত।

    সিআনের জিয়ান গুও হোটেল উত্তরপশ্চিম চীনের বৃহত্তম হোটেল। এই হোটেলে মোট আট শো আটাশিটি কক্ষ আছে।

    সেনসি প্রদেশে আর একটি হোটেল হচ্ছে সাংরিলা গোল্ডেন ফলাওয়ার হোটেল। এই হোটেল সম্বন্ধে একটা কথা আছেঃ এশিয় পদ্ধতিতে অতিথিদের অভ্যর্থনা জানাই। তাই এই হোটেলের অতিথিদের মধ্যে এশিয়ানই সবচেয়ে বেশী। সাংরিলা গোল্ডেন ফলাওয়ার হোটেলের পরিসেবা আন্তরিক পরিবেশ আরামদায়ক এবং কক্ষের ভাড়া কম।

    সেনসি প্রদেশের কয়েকটি হোটেল সম্পর্কে আপনাদের কিছু বলা হলো। কিন্তু সেনসি প্রদেশে পর্যটন করতে গেলে আর একটি জায়গায় না গেলে চলবে না। তা হচ্ছেঃ থাং সাম্রাজ্যের সংস্কৃতি ও বিনোদন থিয়েটার বেস্তোরা এই থিয়েটার বেস্তোঁরাকে চীনের নাইট্কলাবও বলা যায়। প্রতিদিন সন্ধ্যায় এখানে লোকের ভিড় হয়। লোকেরা এখানে খাওয়ার সংগে সংগে সেনসি প্রদেশের সংগীত ও নত্যৃ দলের পরিবেশিত অনুষ্ঠান উপভোগ করে থাকে। সেনসি প্রদেশের সংগীত ও নত্যৃ দল চীনের এক হাজার বছর আগেকার থাং রাজবংশের আমলের রাজপ্রাসাদের জীবন ,সাথিত্য ও শিল্পকলা ,জনগণের রীতিনীতি ,ধর্ম,সমরবিদ্যা প্রভৃতি সম্পর্কে নানা অনুষ্ঠান পরিবেশন করে থাকে। প্রতি বছর কয়েক লক্ষ বিদেশী অতিথি এখানে এসে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।