চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে চীনের একটি ২৮ সদস্য-বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক দল গত ১৪ থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় সফর আর অনুষ্ঠান পরিবেশন করেছে । ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় চীনা সাংস্কৃতিক দল বাংলাদেশের জাতীয় বৃহত্ থিয়েটারে প্রথম অনুষ্ঠান পরিবেশন করেছে, বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী সেলিমা রহমান আর বাংলাদেশে চীনা রাষ্ট্রদূত চাই শি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেছেন । এই উপলক্ষে চীনের সংস্কৃতিমন্ত্রী সুন চিয়াচেং অভিনন্দনবাণী পাঠিয়েছেন।
বাণীতে সুন চিয়াচেং বলেছেন, চীন ও বাংলাদেশ সুপ্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র, দুদেশের জনগণের আদানপ্রদানের সুদীর্ঘ ইতিহাস এবং সুগভীর ঐতিহ্যিক মৈত্রী রয়েছে চীন ও বাংলাদেশের জনগণ পরস্পরকে ভালবাসেন , একে অপরের সংস্কৃতি ও শিল্পকলা উপভোগ করেন, দুদেশের সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান দুপক্ষের বন্ধুসম্পর্ক জোরদার হবার সঙ্গে সঙ্গে অনবরত বিকাশ লাভ করছে। দুপক্ষের সাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তি আরও মজবুত হয়েছে ।এবার চীনের সাংস্কৃতিক দলের বাংলাদেশ সফর ও অনুষ্ঠান পরিবেশন শুধু যে বাংলাদেশের জনগণের সামনে চীনা শিল্পীদের অনুষ্ঠান পরিবেশনের চমত্কার কলাকৌশল প্রদর্শন করবে তা নয়, উপরন্তু বাংলাদেশী জনগণের প্রতি চীনা জনগণের সুগভীর বন্ধুত্বের সৌহার্দ্যপূর্ণঅনুভূতিও পৌঁছিয়ে দেবে ।
প্রতিমন্ত্রী সেলিমা রহমান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেয়ার সময়ে চীনা সাংস্কৃতিক দলকে বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩০তম বাষির্কী উপলক্ষে বাংলাদেশে অনুষ্ঠান পরিবেশন করতে যাওয়ার জন্য স্বাগত জানিয়েছেন। বাংলাদেশ -চীন দুদেশেরই আছে সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার , বিগত ৩০ বছরে আমরা বরাবরই ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করে এসেছি , চীন আমাদের ভাল বন্ধু,ভাল প্রতিবেশী । চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়াপাওয়ের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ -সফর অত্যন্ত সাফল্যমণ্ডিত হয়েছে । দুপক্ষ চলতি বছরকে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রীবর্ষ বলে ধার্য করেছে । চলতি বছর আমরাও চীনে অনুষ্ঠিতব্য এশীয় সাংস্কৃতিক উত্সবে অংশ নিতে প্রতিনিধিদল পাঠাবে । আমার বিশ্বাস, আমাদের সহযোগিতার আরও ব্যাপক বিকাশ হবে।
এবারকার চীনা সাংস্কৃতিক দলের সদস্যরা প্রধানত চীনের এক্রোব্যাটিক্স দল আর পেইচিং নৃত্য ইনস্টিটিউট থেকে গিয়েছেন ।ঢাকায় চীনা সাংস্কৃতিক দলটি মোট দুই বার অনুষ্ঠান পরিবেশন করেছে । চীনের নৃত্যশিল্পীরা রংবেরংয়ের ঐতিহ্যিক পোষাক পরে "ছিয়াও হুয়াতান" , প্রাচীন হান ও থাং রাজবংশের " ছুইয়াও "নাচ এবং আধুনিক চীনের 'থাকো' নাচ ইত্যাদি বিচিত্রানুষ্ঠান পরিবেশন করেছেন। তাতে প্রাণবন্তভাবে চীনের সুপ্রাচীন ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্যপূর্ণ কলাকৌশলের উত্কর্ষ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বলে দর্শকরা দীর্ঘ সময় ধরে উত্সাহপূর্ণ করতালি দিয়ে তার প্রশংসা করেছেন ।
চীনের সাংস্কৃতিক দলটি ঢাকায় বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী সেলিমা রহমানের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছে । বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘর প্রভৃতি সংস্থার সঙ্গে সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান করেছে এবং লালকেল্লা প্রভৃতি প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন পরিদর্শন করেছে ।
|