v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-04-21 18:25:19    
১-৫ বছর বয়সী বাচ্চার মেজাজ পরিচালনার পদ্ধতি

cri
    এক বছর বয়স এমন একটি বয়স যে কোনো জিনিস সম্পর্কে এই বয়সের বাচ্চার কৌতুহল হয়, তাদের আশেপাশে জিনিস জানার আগ্রহ আছে । কিন্তু এবয়সের বাচ্চা আমাদের বিশ্বের কিছুই জানে না , যেমন কাঁচ কেন সহজে ভেংগে যায়, আকাশ কেন নীল , গাছ কেন সবুজ ইত্যাদি ইত্যাদি ।এ বয়সের বাচ্চা যে জিনিস চায় তাকে তত্ক্ষনাতসেই জিনিস পেতে হবে ,

    অপেক্ষা করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় । কারণ তারা নিজের মেজাজ নিয়ন্ত্রন করতে শেখেনি ।

    এ সময়ে বাবামায়েদের কি কি করতে হবে ? এ সময়ে বাবামায়েদের বাচ্চাকে সঠিক আচরন দেখাতে হবে , কিন্তু বাচ্চাকে বাধ্য করা চলবে না , হাসিমুখে , নিম্নস্বরে ও নরমভাবে তার সংগে আদানপ্রদান করতে হবে।

    এ বয়সের বাচ্চা যেটা-সেটা স্পর্শ করতে পছন্দ করে ,তাই যে জিনিস সহজে ভেংগে যায় সে জিনিস তার কাছ থেকে দূরে রাখা ভাল । যদি সে এক মূল্যবান জিনিস আকড়ে ধরে , তাহলে আপনি অন্য এক জিনিস দিয়ে সে জিনিসটা বিনিময় করতে পারবেন ।

    এবয়সের বাচ্চা যদি আপনার কোর্ট পরতে না চায়, তাহলে এসময় আপনি ধৈর্য্যেরসংগে তাকে বুঝাতে পারেন যে , মা জানি , তুমি পরতে

    চাও না , কিন্তু কোর্ট না পরলে আমরা বাইরে যেতে পারি না,দেখো,বাইরে

    বাতাস বইচ্ছে ,খুব ঠান্ডা । শান্তভাবে কথা বলার সংগেসংগে আপনি

    তাকে কোর্ট পরাতে পারেন,কিন্তুতার কান্নাকাটিরভয়ে নিজের করনীয় কাজ ছেড়ে দেয়া উচিত নয় ।

    দু বছর বয়সী বাচ্চার চোখে জীবন যেন মনোবল দ্বারা চালিত নৌকা,তার আগ্রহ হল তার উপর বাবামার দৃষ্টি আকৃষ্ট করার প্রচেষ্টা চালানো ।

    দু বছর বয়সী বাচ্চার বৈশিষ্ট্য হল ,এক, সে অনবরতভাবে আশেপাশে জিনিস বা বিষয় জানার চেষ্টা করে এবং অন্য লোকের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করে , যেমন যদি আমি জুতা পরতে অস্বীকার করি তাহলে তারা কি করবেন।দুই, এ বয়সের বাচ্চা পুরোপুরিভাবে নিজের মনোভাব বুঝতে পারে না এবং ব্যক্ত করতে পারে না । তিন ,সে উপলব্ধি করেছে যে, যে জিনিসগুলো সে পেতে চায় সেগুলো সবই সে পেতে পারবে তা নই । চার , যখন বয়স্ক মানুষরা তার ইচ্ছা পূরণ করতে পারবেন না বলে জেনে সে ক্ষুব্ধ হয়ে কান্নাকাটিকরতে পারবে ।

    এ সময়ে অভিভাবকদের কি করতে হবে ?এক, বিতর্ক কমিয়ে দেয়ার চেষ্টা করুন। যদিও সে অত্যন্ত ছোট তবুও তাকে স্পষ্টভাষায় আপনার আশা জানানো উচিত ,কিন্তু উচ্চস্বরে বকাবকি করবেন না ।দুই, বাচ্চাকে নিজের মনোভাব নিয়ন্ত্রন করা শিখতে সাহায্য করবেন । যেমন , যদি বাচ্চা আমি ঘৃনা করি কথাটা বলে,তাহলে তাকে অন্য শব্দ ব্যবহার করতে শেখান, যেমন আমি রাগ করি , তাকে জানাতে হবে যে ,এখানে ঘৃনা শব্দ ব্যবহার করা উচিত নয় ,ঘৃনা শব্দটি আমাদের ক্ষতিকারক ।তিন,বাচ্চার ক্ষুব্ধ হওয়া নিয়ন্ত্রন করুন ।বাচ্চার ক্ষুব্ধ হওয়াকে বেশী মনে করবেন না , তবে আপোষও করবেন না । লক্ষ্য করুন তার রাগারাগি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ।তার পর তাকে জানাতে হবে কি ধরনের আচরণ ভুল কি ধরনের আচরণ নির্ভুল ।অথবা তাকে সেই রাগের পরিবেশ থেকে এক নতুন পরিবেশে নিয়ে যান ।

    তিন বছর বয়সী বাচ্চার মনে স্বতন্ত্রজ্ঞানবোধ জন্মে ,এটা তার অহংকারের উত্স ।তার এখনকার কর্তব্য হল মনোভাব নিয়ন্ত্রনে আনতে শেখা ।

    তিন বছর বয়সী বাচ্চার বৈশিষ্ট্য হল , এক, তার মনে যে কাজ সে করতে সক্ষম সে কাজটা সে করতে চায়, যেমন ঘুমবার আগে সে পা আর মুখ ধুতে পারে , কিন্ত সে প্রত্যেক দিন নিজে পা বা মুখ ধুতে পারে বলে এমন আশা রাখবেন না । সে এখন কারণ আর পরিনামের সম্পর্ক বুঝতে পারে । যেমন সে জানে ,বাবামার কথা না শুনলে শাস্তি পাবে , বাবামার কথা অনুসারে আচরন করলে পুরস্কৃত হবে ।মাঝেমধ্যে সে রেগে উঠবে এবং কোমরে দুই হাত রেখে আপনার উপর ক্ষুব্ধভাবে তাকাবে ।

    এ সময়ে অভিভাবকরা কি করবেন? এক,প্রশংসার পুরস্কৃত করার পদ্ধতি গ্রহন করুন ।বাচ্চার অনুরোধ স্পষ্ট জানার আগে তাকে শাস্তি বা সমালোচনা করবেন না । তাকে ব্যাখা করে দেয়া এক কঠিন কাজ নয় । যখন বাচ্চা নিজের ভুল সংশোধন করে তাহলে আপনাকে সময়োচিতভাবে তার প্রচেষ্টা প্রশংসা করতে হবে। দুই, বাচ্চাকে ভাল অভ্যাসের প্রশিক্ষন দিন ।যেমন খেলার মাধ্যমে বাচ্চাকে দৈনিক আচরনের প্রশিক্ষন দিন , যদি আপনি বাচ্চাকে নার্সারিতে পাঠাবেন , তাহলে তাকে শিষ্টাচার আচরনের প্রশিক্ষন দিন ।তিন বছর বয়সী বাচ্চা বাবামার এক-দুই-তিন নিয়ম বুঝতে পারছে বলে যদি আপনি এক দুই তিন বললেও সে তার ভুল আচরন বন্ধনা করে, তাহলে এসময়ে তার উপর আপনার কিছু শাস্তি-ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত ।

    চার বছর বয়সী বাচ্চা সামাজিক আদান-প্রদান করতে সক্ষম হচ্ছে । এ সময়ে অভিভাবকদের কর্তব্য হল অন্য বাচ্চার সংগে সম্পর্ককে নিজের সন্তানের চাহিদার মধ্যস্থতা করা ।

    চার বছর বয়সী বাচ্চার আচরনের বৈশিষ্ট্য হল , এক, সে মন দিয়ে এক খেলা বা রসপূর্ণ এক কাজ করতে পারে । এ কারনেই যখন সে খুব আনন্দের সংগে খেলা করছে তখন তাকে অন্য কাজ করানোকঠিন । দুই , সম্ভবতঃ সে অসন্তোষ প্রকাশ করবে । কারন এ বয়সের বাচ্চা মস্তিস্ক দিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে পারছে । তাই সে জানতে পারে যে তার কি অভাব আছে বা নিজে কি চায় । তিন , কখনো এ বয়সের বাচ্চা বাস্তবতা ঢেকে নিজের চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করতে পারে , কারণ সে বোঝে না মিথ্যা বলা ঠিক নয় ।

    এ সময়ে অভিভাবকরা কি করবেন ?এক,যাতে বাচ্চা আপনার অনুরোধ সহজভাবে মেনে নিতে পারে তার জন্যে আপনি অনুরোধ জানানোর আগে তার মানসিক প্রস্তুতি নেয়ার জন্যে কিছু সময় দিতে হবে ।যেমন , বিশেষ জরুরী কাজ না থাকলে তার খেলা সংগেসংগে বন্ধ করার আদেশ জানাবেন না ।যদি সে সময়ে বাচ্চার মেজাজ ভাল না থাকে , তাহলে তাকে প্রশমিত করার পর গম্ভীরভাবে তার সংগে কথা বলবেন ।দুই, বাচ্চার চিত্কারকে আপনি বেশী পাত্তা দেবেন না । তাদের চিত্কারের জন্যে আপনার সিদ্ধান্তেরপরিবর্তন করবেন না ।তিন,এ বয়সের বাচ্চারমিথ্যা বলা স্বাভাবিক ব্যাপার । অতিরিক্তভাবে তাকে সমালোচনা করার দরকার নেই ।উদাহরন ,সে অসাবধানে গ্লাসের দুধ চলকে ফেলেছে ,কিন্তু সে ব্যাপারটা অস্বীকার করে ।

    এসময়ে আপনি তাকে বলতে পারেন যে,দুধ গরম বলে গ্লাসধরা কিছু কঠিন । তার পর তাকে মাটি সাফ করতে সাহায্য করে দেন ।অভিভাবকের সমঝোতা পেয়ে সে আর ভুল স্বীকার করতে ভয় করবে না ।

    পাঁচ বছর বয়সের বাচ্চা এক বছর পর স্কুলে ভর্তি হবে ।তারা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশী বিষয় বা সমস্যা জানতে ও বুঝতে পারছে ।অনেক সময় তারা নিজের সহজাত জ্ঞান বা অনুভূতি অনুযায়ী কাজ করে ।তাই এ সময়ে অভিভাবকদের বাচ্চার জন্যে নিয়ম নির্ধারিত করতে হবে । তাকে জানাতে হবে যে ,খারাপ আচরন অন্যের প্রতিকূল হবে ।অথবা সীমিত করার পদ্ধতি দিয়ে বাচ্চার আত্মনিয়ন্ত্রন-শক্তিকেজোরদার করতে হবে ।যেমন তোমার আর তিন মিনিট আছে , তিন মিনিট পর তোমার চিত্কার থামতে হবে…