v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-04-21 15:53:29    
চীনের বায়ুশক্তির ব্যবহার

cri
    যদি আপনারা উত্তরচীনের সিনচিয়াং উইঘুর জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ,অন্তর্মংগোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ইত্যাদি জায়গায় বেড়াতে যান তাহলে আপনারা দেখতে পাবেন ,আকাশ ও ভূপৃষ্ঠের মাঝখানে বিশাল শূন্যে কিছু সাদা থাম সুশৃংখল ও সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ,থামগুলোর উপরের বায়ু-চালিত ভেন হুয়ীলগুলো নীলাকাশে সাদা মেঘের মধ্যে বাতাসে ঘুরছে , দৃশ্যটা খুবই সুন্দর । আসলে স্থানীয় অধিবাসীরা বায়ুশক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুত উত্পাদন করছেন । আজকের "বিজ্ঞান বিচিত্রা" অনুষ্ঠানে চীনে বায়ুশক্তি ব্যবহারের অবস্থা সম্পর্কে আপনাদের কিছু বলছি আমি চৌ চিন ছাও ।

    এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণপূবাংশে ,প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম তীরে অবস্থিত চীনে মওসুমী বায়ু প্রবল । বায়ুশক্তিসম্পদের বাষির্ক মোট মজুদের পরিমাণ একশো ষাট কোটি কিলোওয়াট । এগুলো প্রধানত: চীনের উত্তরপূব, উত্তর ও উত্তরপশ্চিমাংশের তৃণভূমি ও গোবি মরুভূমি এবং দক্ষিণপূবাংশের উপকূল ও দ্বীপ ইত্যাদি জায়গায় বিন্যস্ত । বায়ুর শক্তি বিরাট , ব্যবহার সহজ , দূষণহীন , পুনজর্ন্মক্ষম ইত্যাদির সত্গুণ আছে । বুদ্ধিমান চীনারা অনেক আগেই বায়ুশক্তি ব্যবহার করে নিজেদের সেবা করতে শিখেছেন ।

    এক হাজার সাতশো বছরেরও বেশী সময় আগেই চীনারা কাঠের তৈরী বায়ু-চালিত কল ব্যবহার করে পানিসম্পদ উত্তোলণ করতে জেনেছেন । কিছু প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে এপযর্ন্ত এইধরণের প্রাচীন বায়ু-চালিত কল সংরক্ষিত আছে । এগুলো ইতিহাসের সাক্ষ্যে পরিণত হয়েছে । যুগের অগ্রগতির সংগে সংগে এখন চীনে পানি উত্তোলণ , বিদ্যুত উত্পাদন , নৌচলাচল ইত্যাদি বহু ক্ষেত্রে বায়ুশক্তি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে । প্রথমে বায়ুশক্তি ব্যবহার করে পানি উত্তোলণের কথাই ধরা যাক । বিংশ শতাব্দীর সত্তরের দশকের পর চীনে পানি উত্তোলণে বায়ুশক্তি ব্যবহারের প্রযুক্তির বেশ বিরাট উন্নতি হয়েছে ।

    এখন চীনে দু'ধরণের বায়ু-চালিত পানি উত্তোলণ যন্ত্রসরঞ্জাম আছে । এক ধরণের যন্ত্রসরঞ্জাম হচ্ছে লো-লিফ্ট ও বিরাট প্রবাহের । এগুলো প্রধানত: উপকূল ও দ্বীপ অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠের পানি উত্তোলণ করে লবণ তৈরী , জলজ দ্রব্য লালনপালন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় । আরেক ধরণের যন্ত্রসরঞ্জাম হচ্ছে হাই-লিফ্ট ও ছোটো প্রবাহের । এগুলো প্রধানত: উত্তরচীনে ভূগর্ভে পানিসম্পদ-সমৃদ্ধ অঞ্চলে ভূগর্ভের পানি উত্তোলণ করে মানুষ ও গবাদীপশুর পানীয় জলের চাহিদা মেটানো , কৃষিজমিতে জলসেচ ও তৃণভূমির সংস্কার ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় । ডিজেল-চালিত যন্ত্রসরঞ্জামের তুলনায় এগুলোর খরচ কম , তাছাড়া দূষণহীন , অথর্নৈতিক ও সামাজিক ফলপ্রসূতাও অপেক্ষাকৃত ভালো ।

    বায়ুশক্তির আরেকটি বিরাট ভূমিকা হচ্ছে বিদ্যুত উত্পাদন । বিংশ শতাব্দীর আশির দশক থেকে এপযর্ন্ত চীনে একশোটিরও বেশী ধরণের বায়ু-চালিত বিদ্যুত উত্পাদন যন্ত্রসরঞ্জাম উদ্ভাবিত হয়েছে । বায়ু-চালিত বিদ্যূত উত্পাদন যন্ত্র নিমার্ন শিল্প প্রাথমিকভাবে গড়ে উঠেছে ।

    উত্তরপশ্চিম চীনের সিনচিয়াং উইঘুর জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের দাবান শহর , উত্তরচীনের অন্তর্মংগোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী হোহ্হট এবং দক্ষিণপূব চীনের কুয়াংতুং প্রদেশের কিছু কিছু এলাকায় বৃহত্ ও মাঝারী ধরণের বায়ুশক্তি-চালিত বিদ্যুত উত্পাদন যন্ত্রসরঞ্জাম নিয়ে বিদ্যুত উত্পাদন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে । এই সব যন্ত্রসরঞ্জাম দিয়ে কেন্দ্রীভূতভাবে উত্পাদিত বিদ্যুত কাযর্করভাবে স্থানীয় অধিবাসীদের উত্পাদন ও জীবনযাত্রায় বিদ্যুতের অভাবের সমস্যা সমাধান করেছে । চীনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্ষুদ্রাকারের বায়ু-চালিত বিদ্যূত উত্পাদন যন্ত্রসরঞ্জামের ব্যবহার জনপ্রিয় করে তোলা হচ্ছে । বায়ুশক্তিসম্পদে সমৃদ্ধ অন্তর্মংগোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল , ছিনহাই প্রদেশ ও সিংচিয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের প্রত্যন্ত কৃষি ও পশুচারণ এলাকায় ক্ষুদ্রাকারের বায়ু-চালিত বিদ্যুত উত্পাদন যন্ত্রসরঞ্জাম ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে । এই সব অঞ্চলে বিদ্যুত থাকার দরুণ কৃষক ও পশুপালকরা আলোর ব্যবস্থা করতে পারেন এবং টেলিভিশনও দেখতে পারেন । জীবনযাত্রার অনেক সুবিধা হয়েছে ।

    জানা গেছে , এখন চীনের বাষির্ক ক্ষুদ্রাকারের বায়ু-চালিত বিদ্যুত উত্পাদন যন্ত্রসরঞ্জাম উত্পাদনের পরিমাণ দশ হাজারের বেশী । চীনের অভ্যন্তরের চাহিদা মেটানো ছাড়া বিদেশেও এগুলো রফতানি করা হচ্ছে । ডেনমার্ক , যুক্তরাষ্ট্র ইত্যাদি উন্নত দেশের তুলনায় চীনের বৃহদাকারের বায়ু-চালিত বিদ্যুত উত্পাদন যন্ত্রসরঞ্জাম গবেষণা ও তৈরীর মান এখনো অপেক্ষাকৃতভাবে পশ্চাত্পদ । কিছু কিছু দ্রব্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।

    তাছাড়া পূবর্চীনের উপকূলীয় অঞ্চলে নৌচলাচল ও তাপ আহরণের ক্ষেত্রেও বায়ুশক্তিসম্পদ ব্যবহার করা হচ্ছে ।