v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-04-14 10:38:40    
চীনের ১০জন যুগ- শ্রেষ্ঠানার

cri
    চীনের জাতীয় রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের সদস্য ওয়ান স্যুয়েন-রোং চীনের মুক-বধির-শিশুদের শুশ্রূষা করার কাজে নিয়োজিত আছেন ।২৮বছর আগে যখন তার ছেলের বয়স সাত মাস , তখন স্ট্রেপটোমাইসিনের বিষক্রিয়ায় তার ছেলে বধির হয়ে যায় ।মা হিসেবে তিনি ভাগ্যের কাছে মাথা নত করেন নি , বরং ছেলের আরোগ্য লাভের জন্যে অনেক চেষ্টা চালিয়েছেন । তার অক্লান্তঅধ্যবসায়ের ফলশ্রুতিতে ছেলে কথা বলা শিখেছে এবং স্বাভাবিক ছেলেমেয়েদের সংগে একই স্কুলে লেখাপড়া করেছে ।২০০০সালে তার ছেলে চীনের কেন্দ্রীয় জাতিসত্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে পাশ করেছে, এমন কি তার ছেলে সুন্দরভাবে ইংরেজী বলতে পারছে ।নিজের ছেলের আরোগ্য লাভের প্রক্রিয়ায় অর্জিতঅভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি জিব ও ঠোঁটের ব্যায়াম প্রভৃতি বৈজ্ঞানিক ও কার্যকরপদ্ধতি বের করেছেন । এপর্যন্ত তার এবং তার সহকর্মীদের সাহায্যে দু-শতাধিক মূক-বধির ছেলে-মেয়ে কথা বলা শিখেছে এবং স্বাভাবিকসমাজে প্রবেশ করেছে ।এ সম্পর্কে ওয়ান স্যুয়েন-রোং বলেছেন , একজন বধির ছেলের মা হিসেবে তাকে দৃঢ , স্নেহ ও মমতাময়ী, ক্ষমাশীলা আর বুদ্ধিমতী হতে হবে , আর একজন বধির শিশুর শিক্ষিকা হিসেবে তাঁর ভালবাসা , ধৈর্য্য, মনোযোগ আর দৃঢসংকল্প থাকতে হবে । আমি মূক- বধির শিশুদের শুশ্রূষা করার কাজ ভালবাসি । লক্ষ লক্ষ মূক-বধির শিশু যাতে শুনতে ও কথা বলতে সক্ষম হতে পারে তার জন্যে আমি আজীবন প্রচেষ্টা চালাব।

    ২৭ বছর বয়সের ফোং আই সূর্যালোকধারিণী বলে আখ্যায়িত হন।তিনি পেইচিং শহরে জন্ম গ্রহন করেন এবং সাংহাই ফুতান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন ।স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে তিনি চারবার নিজের লেখাপড়া বন্ধ করে পশ্চিম চীনের দরিদ্র অঞ্চলে গিয়ে অধ্যাপনার কাজ করেন ।নিংসিয়া হুই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সিচি জেলা মানবজাতির বসবাসের অনুপযুক্ত জায়গা বলে জাতিসংঘ ঘোষণা করে । নিজের বিশ্ববিদ্যালয় আর সমাজের বিভিন্ন মহলের কাছে ফোংআই ও তার সহকর্মীরা সাহায্য লাভ করায় স্থানীয় অঞ্চলের লেখাপড়ার আর শিক্ষকতার অবস্থা উন্নত হয়েছে । এর সংগেসংগে তিনি আশেপাশে চারটি থানার দশাধিক গ্রামে গিয়ে তার চল্লিশাধিক ছাত্রছাত্রীর বাড়ী এবং সাগরাঙ্ক থেকে ৩২০০মিটার উচু ইউয়ুন্নান প্রদেশের লাংসিয়েন জেলার চানহো মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি পরিদর্শনকরেছেন । ফোংআইর আগমন দরিদ্র পাহাড়ী এলাকার ছেলেমেয়েদের জন্যে এক রঙবেরঙয়ের বৈচিত্র্যময় বিশ্ব এনে দিয়েছে ।এ সম্পর্কে ফোং আই বলেছেন , আরও বেশী লোক পশ্চিম চীনের উপর দৃষ্টি রেখে পশ্চিম চীনের শিক্ষাকে গুরুত্ব দেবেন এবং নিজের শক্তি দিয়ে সংখ্যালঘূজাতি অধ্যূষিত দরিদ্র অঞ্চলের শিশুদের করবেন সাহায্য করেন বলে আমি আশা করি । আমি নিজেও আরও প্রচেষ্টার সংগে লেখাপড়া ও কাজ করে স্বেচ্ছাসেবক ব্রত আর দরিদ্র এলাকার শিক্ষাব্রতের জন্যে নিজের অবদান রাখব।

    ২৬ বছর বয়সী ফোং খুন ২০০৪ সালে এথেন্স ওলিম্পিক গেমসের চ্যাম্পিয়ন—চীনা নারী ভলিবল দলের নেতা ।১৯৯০ সালে ১২ বছর বয়সের ফোংখুন ভলিবল খেলার চর্চা শুরু করেন, ১৯৯৪ সালে তিনি পেইচিং দলে এবং ১৯৯৫ সালে জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত হন ।তিনি এক বিকল্প সদস্য থেকে চীনা ভলিবল দলের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিতে পরিনত হন ।এখন তিনি ইয়াং সিলানের পর শ্রেষ্ঠতম সেন্টার এবং চীনা নারী ভলিবলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সেন্টার বলে পরিগনিত । ২০০৪ সালে তার নেতৃত্বাধীন চীনা নারী ভলিবল দল এথ্যান্স ওলিম্পিক গেমসে স্বর্নপদক অর্জন করে । স্বয়ং তিনি সবচেয়ে মূল্যবান ভলিবল খেলোয়াড় এবং শ্রেষ্ঠতম সেন্টারের মর্যাদালাভ করেন ।যুগ-শ্রেষ্ঠা নারী নির্বাচিতহওয়া সম্পর্কে তিনি বলেছেন , আমি সত্যি ভাগ্যবতী, আসলে আমার চাইতে আরও অনেক শ্রেষ্ঠা নারী আছেন , তাদের তুলনায় আমার অনেক ত্রুটি আছে ।আমার নির্বাচিতহওয়া থেকে প্রমানিত হয় যে , নারী ভলিবল দল দেশবাসীদের মনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন স্থান পেয়েছে ।এখন আমাদের জাতীয় ভলিবল দলে অনেক নতুন সদস্য ভর্তি হয়েছেন ।২০০৮সালের পেইচিং ওলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতির জন্যে আমরা বিপুল উদ্দীপনা নিয়ে প্রশিক্ষননিচ্ছি । আমাদের লক্ষ্য হল ২০০৮ সালে আমাদের মাতৃভূমিতে অনুষ্ঠিতব্য ওলিম্পিক গেমসে আবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্যে কীর্তিস্থাপন করা । আমাদের স্বীকৃতি দেয়া আর চীনা নারী ভলিবল দলকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্যে জাতীয় নারী ফেডারেশনকে ধন্যবাদ জানাছি ।

    ৪৯ বছর বয়সী ইয়ে ইয়ু-রু হংকং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব রসায়ন বিভাগের প্রধান , প্রফেসর আর জৈব প্রযুক্তিগবেষনাগারের প্রধান । তিনি চীনা বিজ্ঞান একাডেমীর একাডেমীসিয়ান । ২০০৪ সালে জাতিসংঘ শিক্ষা , বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো তাকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নারী বৈজ্ঞানিকের সাফল্য-পুরস্কার দান করেছে ।বর্তমান যুগে পৃথিবীজুড়ে জৈববিজ্ঞান আর বুনিয়াদী বিজ্ঞানে গবেষনারত শ্রেষ্ঠ নারীদের স্বীকৃতি দেয়ার এই একমাত্র পুরস্কারটি নারী নোবেল বিজ্ঞান পুরস্কার হিসেবে অখ্যায়িত । যুগ-শ্রেষ্ঠা নারী নিবাচিত হওয়া সম্পর্কে তিনি বলেছেন , কেউ কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, কি শক্তির প্রেরনায় আমি অক্লান্তভাবে বৈজ্ঞানিক গবেষনা করছি । আমার উত্তর হল ,জ্ঞানার্জনেরস্পৃহা আর বিজ্ঞানেরপ্রতি ভালবাসা ও আন্তরিকতা ।বৈজ্ঞানিক গবেষনা করা জ্ঞান অন্বেষন করার এক প্রক্রিয়া ।বৈজ্ঞানিক গবেষনার জন্যে সৃজনীশক্তি আর দৃঢসংকল্প দরকার , সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল বিজ্ঞানের প্রতি ভালবাসা ও আন্তরিকতা ।এই ভালবাসা আর আন্তরিকতার প্রেরনায় আমরা অনবরতভাবে নতুন জ্ঞান অন্বেষন করি ।যাতে বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের উত্স শুকিয়ে না যায় ।বিজ্ঞানের প্রশ্নের উত্তর দেয়ায় অনেক সময় আর চেষ্টা দরকার ।এর গোটা প্রক্রিয়া মূল্যবান জিনিস অন্বেষণ করার খেলাধুলার মতো কখনো বাধার সম্মুখীন হতে পারে ,আবার কখনো ব্যর্থ হতে পারে, কিন্তু এতে রসালো আনন্দও আছে ।বিশেষ করে যখন এতে কিছু অগ্রগতি অর্জনের জন্যে বৈজ্ঞানিক গবেষনা-কাজের প্রতি আমার ভালবাসা আর আন্তরিকতার প্রেরনায় আরও বেশী যুবকযুবতী বৈজ্ঞানিকগবেষনার ব্রতে ঝাঁপিয়ে পড়বে বলে আমি আশা করি ।তিনি বলেছেন ,আমার বৈজ্ঞানিক গবেষনা কাজকে চীনের জাতীয় নারী ফেডারেশন যে স্বীকৃতি দিয়েছে ,তার জন্যে আমি আর একবার ধন্যবাদ জানাই । আমি পুরস্কারটিকে এক প্রেরনা হিসেবে গ্রহন করব,তাতে উত্সাহিত হয়ে আমি অব্যাহতভাবে বৈজ্ঞানিক গবেষনা কাজের জন্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব ।পরবর্তীকালে আরও বেশী অবদান রাখতে পারব বলে আমি আশা করি । আমি দৃঢভাবে বিশ্বাস করি যে , চীনের বৈজ্ঞানিক গবেষনা জগতে শ্রেষ্ঠ দক্ষ মানুষের উপর নির্ভর করে আমরা অব্যাহতভাবে বিশ্বের বিজ্ঞান খাতে আরও বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারব ।