v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-04-08 18:35:12    
প্রাচীনকালে চীনের রেশমী পথ

cri

    প্রাচীনকাল থেকে রেশম রাজ্য নামে বিশ্ব বিখ্যাত । প্রাচীন গ্রিসের লোকেরা চীনকে সেরিস বলে ডাকতো , এর অর্থ হল রেশম রাজ্য । সুতরাং চীন থেকে পশ্চিম দেশে রেশম জাত দ্রব্য পাঠাবার পথকে  রেশমী  পথ  ডাকা হতো ।

    রেশমী পথ চাংছিয়েন নামক একজন চীনা লোকের সঙ্গে জড়িত । চাংছিয়েন খ্রীষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে চীনের পশ্চিম হান রাজবংশের সম্রাটের বিশেষদূত ছিলেন । তিনি যথাক্রমে খ্রীষ্টপূর্ব ১৩৮ আর ১১৯ সালে দুবার বিপুল পরিমানের চীনা রেশম কাজ নিয়ে পাশ্চাত্ত্য দেশ সফর করেছেন । তিনি মধ্য এশিয়া , পশ্চিম এশিয়া তথা ইউরোপের বহু দেশে আর অঞ্চলে গিয়েছিলেন । যেখানেযায় চীনের রেশমী কাজ সেখানকার মানুষের আন্তরিক সমাদর পায় । এরপর থেকে পশ্চিম হান রাজবংশের রাজদরবার প্রায়ই রেশমীকাজ উপকার হিসেবে পাশ্চাত্ত্য দেশগুলোর অভিজাত লোকদের দিতো । পাশ্চাত্ত্য দেশগুলোর ব্যবসায়ীরাও পরপর চীনদেশে নানা পন্যদ্রব্য বিশেষ করে রেশমী কাজড় কিনতে আসতেন । চাংছিয়েন কর্তৃক উন্মুক্ত করা পথটিকে লোকেরা রেশমী পথ বলে আখ্যায়িত করেন ।

    রেশমী পথ পূর্ব দিকের পশ্চিম হানের রাজধানী ছাংআন অর্থাত্ আজকের সিআন থেকে পশ্চিম দিকের প্রাচীন রোম পর্যন্ত বিস্তৃত ছিলো রেশমী পথটি বিশ্বের বিখ্যাত তুনহুয়াং গুহার মধ্য দিয়ে দক্ষিণ আর উত্তর দুটো পথে বিভক্ত হয় । দক্ষিণ দিকের রেশমী পথ খুনলুন পাহার বেয়ে পামির মালভূমি , তার পর আজকের ইরান অবিক্রম করে পশ্চিমে আজকের ইরাক , সিরিয়া প্রভৃতি দেশ আর আঞ্চলে আর অবশেষে প্রাচীন রোমে পৌঁছতে পারে । উত্তর দিকের রেশমী পথটি আজকের সিনচিয়াং স্বায়ওশাসিত অঞ্চলের থুলুফাং , কুইচ প্রভৃতি অঞ্চল বেয়ে আজকের উজবেকিস্তানে পৌঁছতে পারে তার পর আবার দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের প্রাচীন রোমে পৌঁছুতে পারে । পথ দুটো তত্কালীন পশ্চিম হান রাজবংশ বাইরের সঙ্গে অর্থনৈতিক আদান-প্রদান করার প্রধানপথে পরিনত হয়েছে ।

    উত্পান-পরিমান আর গুনগতমানের দিক থেকে চীনের হান রাজবংশের বস্ত্রের মনে অনেক উন্নত হয়েছে , বিপুল পরিমানের সুন্দর রেশমী কাপড় রোমকে কেন্দ্র করে গঠিত ভূমধ্য সাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়েছে । সুন্দর নরম ও হাল্কা রেশমী কাপড়কে পোষাক কালনের উত্তম কাপড় হিসেবে মনে করা হয় । চীনের রেশমী কাপড় ক্রয়-বিক্রয় করা প্রথম আর দ্বিতীয় শতাব্দীর মধ্য এশিয়া তথা ভূমধ্য সাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর এক গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্য-কার্যক্রম ছিল ।

    রেশমী পথউন্মুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চীন আর পাশ্চাত্ত্যের মধ্যে বানিজ্য-তত্পরতা দিনদিন জোরদার হয়ে ওঠে । ব্যবসায়ীরা চীনের রেশমীকাপড় পাশ্চাত্ত্যে নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে চীনের ধাতু ঢালাই করার কৌশল , লোহার পাতি , বার্ণিশের কাজকর্ম , চা প্রভৃতি জিনিসও পাশ্চাত্ত্যে রপ্তানি করা হয়েছে । একই সময়ে পাশ্চাত্ত্যের ব্রড় বিন এভৃতি উদ্ভিদ আর হাতির দাঁত , গন্ডারের শিং প্রভৃতি চীনে আমদানী করা হয়েছে । পরবর্তী বেশ কয়েক শতাব্দীর মধ্যে রেশমী পথ চীন আর পাশ্চাত্ত্যের বানিজ্য আর সংস্কৃতির আদান-প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ।