নামঃ বুরুন্দি প্রজাতন্ত্র(The Republic of Burundi)
স্বাধীনতা দিবসঃ ১রা জুলাই (১৯৬২)
জাতীয় দিবসঃ ১রা জুলাই (১৯৬২)
জাতীয় পতাকাঃ লাল রং হলো স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রাণ বিসর্জনকারী বীরদের রক্তের প্রতীক। সবুজ রং আকংক্ষিত প্রগতি শীল ব্রতের প্রতীক। সাদা রং হলো মানবজাতির মধ্যে শান্তি থাকার প্রতীক। তিনটি তারা হচ্ছে"ঐক্য, পরিশ্রম ও অগ্রগতি"-র প্রতীক এবং সঙ্গে সঙ্গে বুরুন্দির তিনটি জাতি, অর্থাত্ হুথু জাতি, থুসি জাতি ও থিওয়া জাতি আর তাদের ঐক্যের প্রতীকও।
জাতীয় প্রতীকঃ ঢালের আকৃতির জাতীয় প্রতীক। এর মাঝখানে আঁকা আছে একটি সোনালী সিংহের মাথা। পেছনে দন্ডায়মান তিনটি বর্শার প্রতীক। নিচের সাদা ফিতায় ফরাসী ভাষায় লেখা আছে "ঐক্য, পরিশ্রম, অগ্রগতি"।
প্রকৃতি ও ভূগোলঃ আয়তন ২৭ হাজার ৮শো বর্গ-কিলোমিটার। আফ্রিকার মধ্য-পূর্বাংশে বিষুবরেখার দক্ষিণ দিকে অবস্থিত। উত্তরে রুওয়ান্দার সঙ্গেঁ, পূর্ব ও দক্ষিণে তানজানিয়ার সঙ্গেঁ এবং পশ্চিমে গণপ্রজাতন্ত্রিক কংগোর সঙ্গেঁ সংলগ্ন। দক্ষিণ-পশ্চিমে থানগানইকা হ্রদ। সীমানার মধ্যে বহু মালভূমি ও পাহাড়ী অঞ্চল রয়েছে। সমুদের সমতল থেকে সারাদেশের ভূভাগের গড়পড়তা উচ্চতা ১৬০০ মিটার। তাই দেশটি "পাহাড় দেশ" বলেই পরিচিত। থানগানইকা হ্রদ অঞ্চল, পশ্চিমাংশের উপত্যকা অঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের আহ্বাওয়া হলো গ্রীষ্মমন্ডলীয় তৃনভূমির আহ্বাওয়া, মধ্য ও পশ্চিম অঞ্চলের আহ্বাওয়া হলো গ্রীষ্মমন্ডলীয় পর্বতের আহ্বাওয়া।
লোকসংখ্যাঃ ৬০.৯ লক্ষ(১৯৯৬), হুথু, থুসি ও থেওয়া তিনটি জাতি নিয়ে গঠিত। কিলংডি ও ফরাসী হলো রাষ্ট্রীয় ভাষা। অধিবাসীদের মধ্যে ৫৭ শতাংশ ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী, ১৩ শতাংশ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীও প্রোটেস্ট্যানটিজম এবং বাকীরা আদিম ধর্ম ও ইসলাম ধর্মবিশ্বাসী।
রাজধানীঃ বুজুমবুরা (Bujunbura)
সংক্ষিপ্ত ইতিহাসঃ ষোড়শ শতাব্দীতে সামন্ততান্ত্রিক রাজ্য গড়া হয়। ১৮৯০ সালে জার্মানির আশ্রিয় রাজ্য হয়। ১৯১৬ সালে বেলজিয়াম বুরুন্দি দখল করে। ১৯৬২ সালের ২৭শে জুন ১৬তম জাতিসংঘ সাধারণ সম্মেলনে বুরুন্দির স্বাধীনতার প্রস্তাব গৃহিত হয়। ১লা জুলাই বুরুন্দি স্বাধীন হয় এবং শাসনতান্ত্রিক রাজতন্ত্র প্রবর্তন করে। তারপর বুরুন্দিতে যুদ্ধ লেগে যায়।১৯৮৮ সালের আগষ্ট মাসে উত্তরাঞ্চলে দাঙ্গাঁ হাঙ্গামা ঘটে, তাতে ৫ হাজারেরও বেশী মানুষ প্রাণ হারারয়, ৪০ হাজারেরও বেশী মানুষ প্রতিবেশীরাষ্ট্র রুওয়ান্দায় পালিয়ে যায়। দাঙ্গাঁ হাঙ্গামার পর বুরুন্দিতে "জাতীয় ঐক্য পরামর্শ পরিষদ" গঠিত হয়। ১৯৯০ সালের মে মাসে সরকার "জাতীয় ঐক্য খসড়া সংবিধান"প্রকাশ করে। ডিসেম্বর মাসে বুরুন্দির জাতীয় একীকরণ প্রগতি পার্টির বিশেষ সম্মেলনে "জাতীয় ঐক্য খসড়া সংবিধান"গৃহীত হয়, থুসি জাতি ও হুথু জাতি নিয়ে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়। ১৯৯২ সালের ১৩ই মার্চ বুরুন্দি স্বাধীন হওয়ার পর তৃতীয় সংবিধান প্রবর্তিত হয়। নতুন সংবিধান অনুযায়ী, বুরুন্দিতে বহু-দলীয় ব্যবস্থা ও ক্ষমতার পৃথকীকরণ ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। প্রেসিডেন্টের কর্ম মেয়াদ ৫ বছর, একবার পুনর্নির্বাচিত হতে পারেন। প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রীকে নিযুক্ত করেন, প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্ট ও সংসদের কাছে দায়ী থাকেন। বুরুন্দির বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ক্ষমতা পৃথকভাবে আলোচনায় অর্জিত সাফল্য ভোগ করে।
পররাষ্ট্রনীতিঃ বুরুন্দি সুপ্রতিবেশীমূলক বন্ধুত্ব জোট নিরপেক্ষতা এবং জাতীয় মুক্তি আন্দোলনকে সমর্থন করার পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করে। বুরুন্দি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার পক্ষপাতী।
চীনের সঙ্গে সম্পর্কঃ ১৯৬৩ সালের ২১শে ডিসেম্বরে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ১৯৬৫ সালের ২৯শে জানুয়ারী বুরুন্দি একতরফাভাবে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ঘোষণা করে। ১৯৭১ সালের ১৩ই অক্টোবর দু'দেশের সম্পর্ক পুনর্স্থাপিত হয়।
|