খৃঃপূঃ ২০৬ সালে কৃষক বিদ্রোহ পরিচালনাকারীদের মধ্যে একজন অন্যতম নেতা লিউ পাং(খৃঃপূঃ২৫৬-১৯৫) সমগ্র চীনকে একীভূত করে প্রতিপত্তিশালী হান রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন এবং সম্রাট কাও তি নাম গ্রহণ করেন। তার রাজধানী পশ্চিম দিকে অবস্থিত ছাংআন( বর্তমানকালের সেনসী প্রদেশের সিআন) নামক স্থানে অবস্থিত থাকাতে ইতিহাসে এই যুগ পশ্চিম হান নামে আখ্যায়িত হয়।
ছিন রাজবংশের শেষার্ধে কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হবার ফলেই পশ্চিম হান বংশ প্রতিষ্ঠিত হয়। চীনের ইতিহাসে প্রমাণিত হয়েছে যে, কৃষক বিদ্রোহ কেবলমাত্র রাজার শাসন উত্খাত করতে পেরেছে কিন্তু সামন্ততান্ত্রিক প্রথার অবসান ঘটাতে পারে নি। অর্থাত্ কিনা কৃষক বিদ্রোহে বিজেতা অবধারিতভাবে একজন ভূস্বামীতে পরিণত হয়েছে এবং যথারীতি কৃষকদের শাসন ও শোষণ করেছে। তাই,পশ্চিম হানের সর্বপ্রকার প্রথা এবং প্রতিষ্ঠান মূলত: ছিন রাজবংশ আমলের অনুকরণ করে আর তাদের উদ্দেশ্যেও হয় ভূস্বামীশ্রেণীর সম্পত্তি এবং রাজনৈতিক অধিকার রক্ষা করা ও কৃষকদের দমন করা। অন্যদিকে,কৃষক বিদ্রোহের শক্তি দেখে নূতন শাসককেও রাজনীতি এবং অর্থনীতিক ক্ষেত্রে কৃষকদের কিছু সুবিধা দিতে হয়। এই সকল সুবিধা সমাজের আর্থনীতিক বিকাশের সহায়ক হয়। অর্থনীতিক বিকাশের ভিত্তির উপরই একটি শক্তিশালী ও সম্পদশালী রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব ছিল।
গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুজ্জীবনের জন্য পশ্চিম হানের শাসকেরা যে সকল ব্যবসায়ীরা বাজারদর স্বীয় উদ্দেশ্যসাধনে লাগাতে এবং ফটকামূলক কার্যে লিপ্ত ছিল তাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি দমননীতি গ্রহণ করেন। ব্যবসায়ীদের রাজকার্যে নিযুক্ত করা নিষিদ্ধ হয়। সেজন্য ব্যবসায়ীরা এবং ক্ষুদ্র নৃপতিরা স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের যোগসাজসে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা করতে থাকে।
|