কিছু দিন আগে পেইচিংয়ে চীনের চীনা মাটির তৈজসপত্রের রাজধানী বলে আখ্যায়িত চিয়াংশি প্রদেশের চিনতে চেন নগরীর উদ্যোগে চীনা মাটির বাসনকোসন সম্পর্কিত একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে । এই প্রদর্শনী বহু দর্শকের কদর পেয়েছে ।বহু বিদেশী বন্ধু মন্তব্যের খাতায় লিখেছেন যে , তারা চীনা মাটির সুদীর্ঘকালীন ইতিহাস ও তৈরীর কলাকৌশল দেখে মুগ্ধ হয়েছেন । মূক্ষম ও সুন্দর প্রকৌশলের দিক থেকে চীনের প্রাচীনকালের কতকগুলো চীনা মাটির বাসনকোসন অতি বিরল ও মূল্যবান । ধরা যাক , এবছরের গোড়ার দিকে হংকংয়ে সোখেবে নিলাম মার্কেটে চীনের মিং রাজবংশীয় আমল অর্থাত্ খূষ্টীয় ১৩৬৮ সাল থেকে ১৬৪৪ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তৈরী একটি চীনা মাটির তৈজসপত্র ৪ কোটি ৪০ লক্ষ হংকং ডলারে বিক্রি করা হয়েছে । এটা চীনের চীনা মাটির তৈজসপত্রের লেনদেনের ক্ষেত্রে বিশ্ব রেকর্ড স্থাপন করেছে ।
চীনকে "চীনা মাটির তৈজসপত্রের রাষ্ট্র" বলে অভিহিত করা হয় । ইংরেজীতে "চায়নার" অর্থও চীনা মাটি । চীনা মৃত্ শিল্প তিন হাজার বছরের বেশি পুরানো ।চীনে বিভিন্ন রাজবংশের আমলে তৈরী চীনা মাটির বাসনের রকমারিতা ভিন্ন বলে চীনা মাটির শ্রেনী বিভাজন ও নামকরনও জটিল ।
প্রথমত: সময় অনুযায়ী চীনা মাটির তৈজসপত্রের শ্রেনীকরণ আর নামকরন হয় । সাধারনতঃ চীনের ইতিহাসে ভিন্ন রাজবংশের আমল বা ভিন্ন রাজার রাজত্বের মেয়াদ অনুযায়ী চীনা মাটির তৈজসপত্রের শ্রেনীকরণ আর নামকরন হয় । যেমন মিন রাজবংশ আমলে তৈরী চীনা মাটির তৈসজপত্রকে মিন চীনা মাটির তৈজসপত্র বলা হয় এবং মিন রাজবংশের হোন্ উ রাজার আমলে তৈরী চীনা মাটির তৈজসপত্রকে হোন্ চীনা মাটির তৈজসপত্র ডাকে ।
দ্বিতীয়ত : জায়গা অনুযায়ী চীনা মাটির তৈজসপত্র-এর শ্রেনীকরণ এবং নামকরন হয় । যেমন পূর্ব চীনের চেচিয়াং প্রদেশে তৈরী চীনা মাটির তৈজসপত্রকে ইউ ইয়াও চীনা মাটির তৈজসপত্র বলা হয় ।
তৃতীয়ত : বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী চীনা মাটির তৈজসপত্র-এর শ্রেনীকরণ আর নামকরন হয় । সাধারনতঃ রঙ , আকার প্রভৃতি বিষয়ের ভিত্তিতে এই শ্রেনী বিভাজন আর নামকরনের পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় ।
শেষের পদ্ধতি হল : ভিন্ন অঞ্চলের ভিন্ন চুলা অনুযায়ী চীনা মাটির তৈজসপত্রের শ্রেনী বিভাজন আর নামকরন ।
চিয়াংশি প্রদেশের চিনতেচেন্ নগরীকে চীনা মাটির তৈজসপত্রের রাজধানী বলে আখ্যায়িত করা হয় ।
সুদীর্ঘকালীন ঐতিহ্যও সংস্কৃতির কেন্দ্র দক্ষিণ চীনের এই নগরীতে চীনা মাটির তৈজসপত্র তৈরীর ইতিহাস এ পর্যন্ত ২ হাজার বছরেরও বেশি সময় হয়েছে ।
এখন থেকে ১ হাজার বছরেরও বেশী সময় আগে চীনের সুং রাজবংশ আমলে তখনকার সম্রাট চিনতেচেন্ নগরীর তৈরা চীনা মাটির তৈজসপত্রকে রাজপুরীতে ব্যবহার্য চীনা মাটির তৈজসপত্র বলে আদেশ নামা জারী করেছিলেন । তার পর চিনতেচেন্ চীনা মাটির তৈজসপত্র দেশ-বিদেশে সুপরিচিত হয়েছে ।
চিন্ তে চেন্ নগরীতে এখনো প্রচীনকালের চীনা মাটির তৈজসপত্র তৈরীর কুটীর ও চুলা সংরক্ষিত রয়েছে । প্রতি বছর এটা দেশ-বিদেশের বহু পর্যটককে আকৃষ্ট করছে ।
|