v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-04-04 13:44:57    
সিওসিয়ে চে

cri
    চীনের রাজধানী পেইচিং এমন একটি শহর যার সম্পদ অত্যন্ত সম্মৃদ্ধ।এখানে আছে মহা প্রাচীর, রাজকীয় প্রাসাদের সংগ্রহশালা, সুন্দর রাজকীয় উদ্যান---গ্রীষ্মকালীন প্রসাদ ইত্যাদি ইত্যাদি।এ সব দর্শনীয়স্থানকে বিশ্ব সংস্কৃতির উত্তরাধীকারের তালিকাভূক্ত হয়েছে।এ সব জায়গায় গিয়ে আপনি চীনের ইতিহাস আর সংস্কৃতির আমেজ উপলদ্ধি করতে পারেন।তা ছাড়া, আপনি পিকিং-ডাক অথার্ত বিখ্যাত পেইচিংয়ের হাঁসের মংস খেয়ে চীনের খাবারের সংস্কৃতি জানতে পারেন।তবে যদি আপনি পেইচিংএ কিছুটা স্ববৈশিষ্ট্যসম্পন্ন স্মারক দ্রব্য অথার্ত রেশমিজাত দ্রব্য কিনতে চান তাহলে পেইচিংএর একটি জায়গায় না যাওয়া চলবে না।এই জায়গা হলো পেইচিং শহরের একটি বিখ্যাত সড়ক----সিওসিয়ে চে অথার্ত সিওসুয়েট চিয়ে অর্থাত সিওসুয়েই সড়ক।এক সময় এই সড়ক পেইচিংএর অন্যান্য পুরাকীর্তির মতো বিখ্যাত ছিল ।কিছু দিন আগে ৫০০ মিটার দীর্ঘ এই কেনাকাটা সড়কের তার "মুক্তাংগন জীবন" শেষ হয়েছে ।এখন একটি বিশাল এবং উজ্জ্বল ভবনে তার নতুন "জীবন" শুরু হয়েছে। আজকের চল না ঘরে আসি বিশেষ অনুষ্ঠানে আপনাদের এই নতুন সিওসুয়েই বিপনী কেন্দ্র সম্পর্কে বর্ণনা করবো।

    মার্চ মাসে এই বিপনী কেন্দ্রের ব্যবসা শুরু হবে। এই নতুন বিপনী কেন্দ্র বলতে গেলে পুরানো সিওসুয়ের শপিং সড়কের কথা উল্লেখ না করলে চলবে না।পুরানো সিওসুয়েই শপিং সড়ক পেইচিংএর পুর্বাঞ্চলের দূতাবাস এলাকায় অবস্থিত। তখন এই সড়কে প্রধানত রেশমজাত পোশাক বিক্রি করা হত ।গত শতাব্দীর আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে এই সড়ক কেবল একটি ছোট গলি ছিল।তখন অনেক চীনা ব্যবসায়ী ওখানে বস্ত্রজাত জিনিসপত্র বিক্রি করতেন।এ সব জিনিসপত্রের গুণমান ভাল তবে বেশী দামী নয়।সুতরাং তখন প্রাক্তন সোভিয়েত দূতাবাসের কূটনীতিবিদরা এবং চীনে ভ্রমন করতে আসা পর্যটকরা ওখানে জিনিসপত্র কিনতে যেতেন ।পরে আস্তে আস্তে ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠল। অবশেষে এই ছোট গলি এমন একটি শপিং সড়কে পরিণত হয়ে গেছে যাতে প্রধানত পর্যটন সংস্কৃতিসম্পন্ন পোশাক, রেশমজাত দ্রব্য এবং স্মারক দ্রব্য বিক্রি হয়।লোকের চোখে পুরানো সিওসুয়েই শপিং সড়ক কেবলমাত্র একটি অতি সাধারণ সড়ক।ওখানে এসকেলেটার নেই , নেই কোনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। চিত্তাকর্ষক কেনাকাটার পরিবেশ তো আরো দূরের কথা। বরং এই সড়ক অত্যন্ত সরু এবং সব সময় মানুষের উপচে পড়া ভীড়। তবে এই "সড়ক বাজারে" প্রত্যেক দিন বিশ থেকে ত্রিশ হাজার খদ্দেরকে স্বাগত জানানো হত ।এ সব খদ্দেরের মধ্যে ৭০ শতাংশ ছিল বিদেশী।৪০ বছর বয়সী মিষ্টার হওয়াং যিনি অনেক বছর ধরে এই পুরানো সড়কে ব্যবসা করতেন তিনি বলেছেন, পুরানো সিওসুয়ে সড়কের একটি আকর্ষনীয় দৃশ্য ছিল দোকারীরা বিদেশী ভাষায় বিদেশী পর্যটকদের সংগে দর কষাকষি করা।

    আমাদের মধ্যে অনেকেই শুধু অনর্গল ইংরেজী , জাপানী এবং রুশ ভাষা বলতে পারি তাই নয়, অন্যান্য বিদেশী ভাষাও বলতে পারি।বিদেশীদের কাছে পোশাকের বিচিত্র রং ব্যাখ্যা করার জন্যে আমার বলা প্রথম ইংরেজী কথা এখনও আমার মনে আছে। অনেক ক্ষণ ভেবে চিন্তে আমি বলে দিলাম: " এটা হলো রং, রং এবং রং "। আসলে আমি ব্যাখ্যা করতে চেয়েছিলাম যে, "এখানে নানা রংয়ের পোষাক আছে, অনেক রং আছে"। কিন্তু এখন দোকানের মালিকরা অনর্গল বিদেশী ভাষা বলতে পারে।পেইচিংএ তারকারা হোক, বিদেশী কূটনীতিবিদ হোক সময় পেলেই তাঁরা সিওসুয়েই সড়কে জিনিসপত্র কিনতে পছন্দ করেন।এখানে আসলে তারা সবাই সাধারণ পর্যটক অথবা খদ্দের।তারাও সাধারণ মানুষের মতো বৈচিত্র্যময় জিনিসপত্র বেছে নিয়ে দর কষাকষি করে থাকেন।যারা নিয়মিত সিওসুয়েই সড়কে বেড়াতে আসেন তাদের সরারই প্রায় একই ধারণা আছে। সরাইকে স্বীকার করতে হবে যে এখানকার জিনিসপত্র সত্যিই সস্তা,কিন্তু এক মাত্র দূ:খের ব্যাপার হলো এখানে একটি জিনিস কিনতে চাইলে অনেক বার দর কষাকলি করতে হয়।জন গ্যাগস একজন ডেনীশ তরুণ যিনি চীনে ইংরেজী ভাষা শিক্ষাদান করেন।তিনি নিজেই নিজেকে "পুরানো সিওসিয়ে" ডাকেন।তিনি বলেছেন, গত কয়েক বছরে তিনি অনেক ভাল ভাল জিনিস এই পুরানো সিওসুয়েই সড়ক থেকে কিনেছেন।এ সব জিনিসের দাম সস্তা কিন্তু মোটেই মন্দ নয়।তিনি আমাদের সংবাদদাতাকে বললেন,

    আমি অনেক বার সিওসুয়েই সড়কে এসেছি । আমি পুরানো সিওসুয়েই সড়ক বেশী পছন্দ করি।যদিও পুরানো সড়কের কেনাকাটার পরিবেশ সন্তোজনক নয় ,তবু এখানে আমার খুব ভাল লাগে। কেননা, এখানে মানুষ মানুষের মুখোমুখি আবেগ বিনিময় করতে পারে।

    এখন এই পুরানো সিওসুয়েই সড়ক অতীত হয়ে গেছে।বর্তমানে পুরানো সিওসুয়েই সড়কের ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানগুলো একটি বিরাট নতুন ভবনে সরিয়ে নিয়েছেন। এই সাত-তলা নতুন ভবন পুরানো সিওসুয়েই সড়কের পাশে নির্মান করা হয়েছে।এখন এই নতুন ভবন পুরোপুরি একটি আধুনিক বিপনী কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।এই নতুন ভবনে নানা ধরনের জিনিসপত্র পাওয়া যায়।তা ছাড়া, এই ভবনের ভেতরে নানা রীতির খাবারও পাওয়া যায়।পুণ্যভোগীরা জিনিসপত্র কেনার পর নিজের স্বাদ অনুযায়ী খাবার খেতে পারেন।বর্তমানে নতুন ভবনের ভেতরে সুন্দরভাবে সাজানো । ৩৫ বছর বয়সী ম্যাডাম লিও লি জন যিনি আগে ছিলেন পুরানো সিওসুয়েই সড়কের একজন দোকানী তিনি সাক্ষাতকারে বলেছেন,

    আমার মনে হয়, এখন নতুন নির্মিত বিপনী কেন্দ্র খুবই সুন্দর।পুরানো সিওসুয়েই সড়কের চাইতে এখন এই নতুন কেন্দ্রে কেনাকাটার পরিবেশ অনেক উন্নত হয়েছে। আগে শোচনীয় আবহাওয়ার কারণে অনেক লোক হয়তো পুরানো সিওসুয়েই সড়কে যেতে একটু অসুবিধা বোধ করতেন ।কিন্তু এখন যে কোনো আবহাওয়ায় লোকেরা এই নতুন সিওসুয়েই বিপনী কেন্দ্রেজিনিসপত্র কিনতে সক্ষম।