২০০৫সালে ভিন্ন পেশা আর ভিন্ন বয়সের বন্ধুরা নিজের ব্যক্তিগত অস্তিত্ব থাকা আর উন্নয়নে কোন বিষয়ে বেশী গুরুত্ব দেন এবং আপনার বৃহত্তম আশা কি ?
২৭ বছর বয়সের ইয়াং চিয়েন একজন উকিল । নিজের দৃষ্টি আকৃষ্ট করার বিষয় সম্পর্কে তিনি বলেছেন , একজন উকিল হিসেবে আমি নিজের কাজের উত্সকে বেশী মনোযোগ দিই ।এখন উকিলের কাজে নিয়োজিত লোক সংখ্যা বেশী হয়েছে,এমন কি মামলার তুলনায় উকিলের সংখ্যা বেশী হওয়ার প্রবনতাও মাঝেমাঝে দেখা যায় ।মামলার উত্স উকিলের কাছে এক সবচেয়ে মনোযোগী সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ।পেশা বন্টন ব্যাপারে সরকার সাবিকভাবে নিয়ন্ত্রন করবে বলে আমি আশা করি ।তাছাড়া আমার শারিরিক অবস্থাকেওআমি সমান গুরুত্ব দিই।উকিলের কাজ বেশী চাপের সম্মুখীন হয় , চাপ স্বাস্থ্যের বিশেষ করে নারীর ক্ষেত্রেমারাত্মক হতে পারে। আমাদের ইউনিট সময় করে আমাদের জন্যে একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবে বলে আমি আশা করি ।শিক্ষা সমস্যাও আমাকে আকৃষ্ট করে । উকিলের কাজে মাঝেমাঝে তহবিল ক্ষেত্রের জ্ঞান জানা দরকার ।কিন্তু এক্ষেত্রে আমার জ্ঞান নেই বলা যায় , তাই আমি শিখতে চাই , কিন্তু ব্যস্ততার কারণে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিখার সম্ভাবনা আমার নেই বলে আমার খুব দ্বন্দ্ব হয় ।জানি না কিভাবে সমস্যাটা সমাধান করব ।
৩৪ বছর বয়সের ছেনফোং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন । নিজের মনোযোগী বিষয় সম্পর্কে তিনি বলেছেন , আমি অধ্যাপনার কাজ পছন্দ করি , কারণ কাজটা এমন একটা কাজ যাতে লোকেরা চিরকালই যৌবনপূর্ণ পরিবেশে জীবনযাপন করতে পারে ।কিন্তু অন্যান্য মহিলাদের মতো আমার পরিবার আর কাজের মধ্যে ছোটো বড় দ্বন্দ্বও আছে । স্বামী পারিবারিক শ্রম করতে চান না তা নয় , কিন্তু পুরুষ হিসেবে তার পারিবারিক শ্রমে আমি সন্তুষ্ট নই ।পারিবারিক শ্রমের সমাজীকরন আমিও চাই ,কিন্তু এর প্রক্রিয়া অতি মন্থর । যেমন সন্তানকে ইস্কুলে পাঠাতে আর আনতে হবে , কিন্তু এমন এক উপযোগী ও বিশ্বস্ত লোক পাওয়া তেমন সহজ নয় । শিক্ষার বেশী ব্যয় বহন করা সবার কাছে এক বড় সমস্যা।আমি গ্রাম থেকে আসা এক ছাত্রী, আমি ভাল করে জানি , নিজের সন্তানকে পড়াশুনা করানো কৃষক-বাবামাদের পক্ষে এক সহজ ব্যাপার নয় । আমার গরিব সহপাঠিরা হাতের কাজে শিক্ষা দান করে দেখে আমার খুব কষ্ট হয় ।আমি জানি , নিজের হাতের কাজে শিক্ষা দান করার মনোবল প্রশংসনীয় , কিন্তু মানুষের সময় সীমিত ,অন্য কাজে সময় ব্যয় করলে লেখাপড়ার ব্যাপারে সময় কম হবে বলে লেখাপড়ার ক্ষতি হতে পারে ।শিক্ষা ক্ষেত্রের দুর্নীতির বিরোধিতা করার রেওয়াজও বাড়ছে , দুর্নীতিঅপরিপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থার পরিনাম ,যদি শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার জোরদার করা হয় তাহলে সমাজ এবং ব্যক্তিগতভাবে আমি উভয়ই উপকারী হব ।কারণ স্বাস্থ্যকর শিক্ষা-পরিবেশে আর সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এক যুবক শিক্ষক হিসেবে আমি বিকাশ লাভ করতে পারব কিনা তা আমার শিক্ষক-কাজের ভবিষ্যত নির্ধারন করবে ।
৩৬ বছর বয়সের হুই লিন এখন ব্যবসা করেন ,তিনি মাত্র ন' বছর লেখাপড়া করেছেন । নিজের মনোযোগী বিষয় সম্পর্কে তিনি বলেছেন,আমি পেইচিংয়ে এগারো বছর ধরে ফল বিক্রি করছি ।প্রথম তিন-চার বছরে আমার ব্যবসা ভালই ছিল, আমি যে উপার্জন করেছি তা দিয়ে পরিবারের জন্যে দু-তলার এক বাড়ি নির্মান করেছি । কিন্তু এ কয়েক বছরে ফল-ব্যবসার প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্রতর হয়েছে ,এক দিকে ফল বিক্রেতার সংখ্যা দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে অন্য দিকে লোকদের রুচি পরিবর্তন হয়েছে ।সবাই চান সবুজ খাদ্য , সামান্য রসায়ন সার আর কীটনাশক ওষুধ আবিস্কার করলে তারা ফল কিবেন না । এখন কিছু ফলের রুচি আগের মতো নয়, কখনো কখনো উচ্চদামে যে ফল কিনেছি তা কেনার লোক কম বলে বেশীর ভাগ ফল পচে যায়, যার ফলে আমার লোকসান হয় । ফল-চাষীরা নতুন জাতের ফল উত্পাদন করবেন এবং রসায়ন-সার কম ব্যবহার করবেন বলে আমি আশা করি । আমার পনেরো বছর বয়সের এক মেয়ে আছে , আমি চাই না আমার মতো মেয়ে ব্যবসা করে ,আমি চাই সে পেশাদারী মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হয়ে শিক্ষা লাভ করবে ।
হু ছুংয়ের বয়স ২৮ বছর, তিনি হোপেই প্রদেশের এক শহরের পরিসংখ্যান ব্যুরোতে কাজ করেন । নিজের বেশী মনোযোগী বিষয় সম্পর্কে তিনি বলেছেন , আমার বৃহত্তম চাওয়া হল বেতন বাড়ানো এবং সংগেসংগে তা বাস্তবায়িত হওয়া ।আমার আর-একটা আশা হল , প্রেমিক সত্যিই আমাকে ভালবাসেন ।এখন আমরা কমবয়সী লোক নই , আমাদের প্রেম সত্যিকার প্রেম এবং আমাদের এই প্রেম স্থিতিশীলভাবে বিবাহে উত্তীর্ণ হবে বলে আমি আশা করি ।আমার তৃতীয় আশা হল বাবামার স্বাস্থ্য ভাল , এখন আমি খুব ব্যস্ত,তারা অসুস্থ্য হলে তাদের দেখাশোনা করার বেশী সময় আমার নেই । তাদের শারিরিক অবস্থা ভাল হলে আমার ঝামেলা অনেক কম হবে ।
২৮বছর বয়সের হাও থিয়েনচিয়া বাবামার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে একা পেইচিংয়ে এসে টেলিভিশন কেন্দ্রে সম্পাদনার কাজ করেন।থাকার জন্যে তাকে বেতনের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দিয়ে বাড়ি ভাড়া নিতে হয় । তিনি নতুন বাড়ি কিনতে চান , ২০০৪ সালে পেইচিংয়ের বাড়ির দাম সবচেয়ে বেশী ছিল বলে তিনি কিনিনি ।তিনি জানতে চান ২০০৫সালে পেইচিংয়ের বাড়ির দাম নামবে কি না । তাছাড়া তিনি জানতে চান যে, কবে পেইচিং-এ বাইরের মানুষকে নিষিদ্ধ করার কিছু নিয়ম বাতিল করা হবে ,যাতে পেইচিং লোকদের সংগে বাইরের লোক সমানভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ হয় ।
মিঃ ওয়াং মোর বয়স ৩৬ বছর , তিনি পেইচিংয়ের এক সাংস্কৃতিক অর্থবিনিয়োগ কোম্পানির স্থায়ী ভাইস জেনারেল ম্যানেজার । নিজের আশা সম্পর্কে তিনি বলেছেন , এক,এবছরে আমার বর্তমানের প্রকল্পে বিরাট সাফল্য অর্জিত হবে । দুই , বাবামার বিশেষ করে মার স্বাস্থ্য ভাল থাকবে , আগামী বছরে মার জন্যে ইউরোপ ভ্রমনের ব্যবস্থা করতে পারব বলে আমি আশা করি ।এটা আমার আশা এবং আমি জানি এটা মারও আশা । তাই আশা করি তার স্বাস্থ্য ভাল যাতে আগামী বছরে আমাদের এই আশা পূরণ হয়ে যায় । তিন ,ব্যস্ততার মধ্যে আমি শরীর চর্চা করতে পারব বলে আশা করি ।
বন্ধুরা , এটা কয়েকজন নারী-পুরুষ বন্ধুদের ২০০৫ সালের বৃহত্তম আশা । তাহলে এবছরে আপনার বড় আশা-প্রত্যাশা কি , জানাতে পারেন ?
|