বসন্তকালে যকৃতের রোগ সচরাচর বেশী হয়। চীনের গণ মুক্তি ফৌজের সান লিং আর হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ডক্টর লিউ শি চিন যকৃতরোগীদের আহার্যের উপর নজর দিতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, যকৃতরোগীদের আহার্য এমন হওয়া উচিত যে, সার্বিক পুষ্টি, আমিষ ও নিরামিষের উপযুক্ত অনুপাত এবং সবসময় বিশেষ পছন্দনীয় একই ধরণের খাবার ভোগন এড়ানো। যকুতরোগীদের রোজ যথেষ্ট পরিমানের ভিটামিন, চর্বি, কার্বহাইডেট ও প্রোটিন গ্রহণ করতে হয় এবং ঝাল ইত্যাদি উগ্র গন্ধের ও পানিতে ফেঁপে উঠা শুক্নো সীফুড, তেলে ভাজা খাবার, নাড়ীভূঁড়ি ইত্যাদি সহজে হজম হয় না এমন খাবার যথাসম্ভব কম খেতে হয়। হখর্ন,খোবানির শাঁস, বুনো খোজুর, টমেটো ভোজা ছত্রাক হচ্ছে প্রচুর পলিস্যাকারাইড সম্পন্ন খাবার। এটা যকৃতরোগীদের শরীরের ইমিউনিটির ক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুবই সহায়ক। বসন্তকালে আবহাওয়া শুষ্ক। শরীরে পানির অভাব। যকৃতরোগীদের উচিত বেশী করে পানি খাওয়া এবং তাজা ফলমূল খাওয়া। সবুজ খাদ্য হচ্ছে যকৃত রক্ষার উত্কৃষ্ট খাদ্য। যাতে পুষ্টি নষ্ট না হয় সেজন্যে তাজা শাবসব্জী দীর্ঘ সময় ভাজা উচিত নয়। বেশী করে কাঁচা খাওয়াই ভালো।
লিউ শি চিন বলেছেন, তাছাড়া যকৃতরোগীদের উচিত নিজের রোগের বাস্তব অবস্থা অনুসারে উপযুক্ত খাবার খাওয়া। যেমন সম্ভাব্য অপরিমিত অন্তঃস্ত উত্তাপ ও কৌষ্ঠদ্ধতা এড়ানোর জন্য যকৃতের সিরৌসিস রোগীদের উচিত অতি শক্ত ও অতি গরম খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা। কার্প, ক্রুসিয়ান কার্প ইত্যাদি কাঁটাবহুল মাছ ও অন্যান্য কাঁটাগুলো যেন বাঁকা পাকস্থলির তলা আর অন্ননালীর শিরা না কাটে। কারণ কাটলে অন্ননালীতে রক্তনিঃসৃত হবে। রক্তে এমোনিয়ার ঘনত্বের দ্রুত বৃদ্ধি এড়ানোর জন্য স্কল্পকালের মধ্যে বেশী উচ্চপ্রোটিনসম্পন্ন খাদ্যদ্রব্য না খাওয়া। কারণ রক্তে এমোনিয়ার ঘনত্বের দ্রুত বৃদ্ধি হলে হেপাটাইটিক কোম্যা হবে। যকৃতের গুরুতর প্রদাহে ভূভছেন, এমন রোগীদের খাওয়ার ইচ্ছা কম এবং পেটের সফিতি বোধ স্পষ্ট। তাদের উচিত প্রধানতঃ তরল ও আধা তরল খাবার খাওয়া। যেমন শাকশব্জীর রস, ফলমূলের রস, দই, সোয়াবিন মিল্ক ইত্যাদি।তেলাক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয়। একই সময় খাওয়ার ইচ্ছা বাড়ানো ও পেটের স্ফীতিবোধ কমানোর জন্য মাল্টি-এনজাইমবড়ি, পেপারমিন্ট মেশানো পানি খাওয়া যেতে পারে। ক্রনিক যকৃতের প্রদাহ রোগীদের মদ খাওয়া নিষেধ। তারা উপযুক্ত পরিমানে মধু, রয়্যাল জেলি, গরুর দুধ, ডিম, ছত্রাক, মাছ ইত্যাদি খেতে পারেন। এর মধ্যে গরুর দুধে উন্নতমানের প্রোটিন, মানুষের দেহের সহজে গ্রহণযোগ্য মিল্ক সুগার ও বেটারফেট, অনেক ধরণের ভিটামিন, প্রচুর ক্যাল্সিয়াম ও ফস্ঠরাস আর অনেক ধরণের মাইক্রো এলিমেন্ট আছে বলে তা ক্রনিক যকৃতের প্রদাহের রোগীদের আদর্শ খাবার।
|