গত সপ্তাহে আমাদের বিষয় ছিলো কাজের মূল্য, এই অনুষ্ঠান আপনারা পছন্দ করেন কিনা ? এবং কি কি বিভিন্ন মত আছে? আমি জানতে আগ্রহী। আজকের অনুষ্ঠানে আমাদের বিষয় হলো আদর আর সাহায্য।
আমি বিশ্বাস করি, আপনাদের মধ্যে অনেক বন্ধু অন্যজনকে সাহয্য করতে পছন্দ করেন। কারণ, বাস্তব জীবনে আমাদের প্রত্যেকেরই অন্যজনের সাহায্য আর আদর প্রয়োজন। আমরা আমাদের জীবনে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হই, এই সময়ে বন্ধুদের আদর আর সাহায্য দরকার। যেমন, রোগশোকের সময়ে, আত্মীয়স্বজন আর বন্ধুদের আদর আমাদের খুব প্রয়োজন। এখন আমাদের সংগে একটি সুন্দর গান শুনুন।
রোগের সময়ে ছাড়াও আরো অনেক সময়, বন্ধুদের সাহায্য বা আদর প্রয়োজন। যেমন, আমাদের কাজকর্মে। এখন আমাদের কাজ দিন বাড়ছে। কাজেই অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হই, ভালোভাবে কাজ সম্পন্ন করতে চাইলে,আমরা অনেক বন্ধুদের সাহায্যের প্রয়োজন বোধ করি। আমার মনে হয়, আমাদের সংগীত অনুষ্ঠানের দুটো বড়ো অনুষ্ঠানে অনেক বন্ধু আমাকে সাহায্য করেছেন। একবার হলো: গত আগস্ট মাসের ষষ্ঠ এশীয় শিল্পকলা অনুষ্ঠান। আমি মনে করি, ষষ্ঠ এশীয় শিল্পকলা উপলক্ষ্যে আমি,তাহের ভাই, লিলি আর ছাই য়ূএ এই বিশেষ অনুষ্ঠান আপনাদের উপহার দেয়ার জন্যে একটানা ১৮ ঘন্টা কাজ করেছে। আরেকবার হলো: এই বছরের পয়লা জানুয়ারী আমাদের গ্রুপের একটি নাববর্ষের অনুষ্ঠান। এতে আমাদের প্রায় প্রত্যেক সদস্যই গান গেয়েছেন। আপনাদের জন্যে আরো চমত্কার অনুষ্ঠান উপহার দেয়ার জন্যে প্রত্যেকে নিজের যোগ্য অবদান রেখেছেন। তাই, আমি মনে করি, কাজকর্মে আমাদের প্রত্যেকেরই অন্যজনের প্রয়োজন। আপনারা কি একমত?
আমাদের জীবনে আরো অনেক মানুষের অন্যজনের সাহায্য আর আদর প্রয়োজন। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ভারত মহাসাগরের সুনামি সংঘটিত হয়েছে। এতে অসংখ্য লোক জীবন হারিয়েছেন, অনেকে স্বজন হারিয়েছেন এবং গৃহ হারা হয়েছে। দুর্গত অঞ্চলের পুনর্গঠন কাজকর্মে বিভিন্ন দেশ আর জনগণের আদর আর সাহায্য দরকার। আমার মনে হয়, দুর্যোগ সংঘটিত হবার পর, চীনের বিভিন্ন মহলের জনগণ সক্রিয়ভাবে চাঁদা দেন। হয়তো আমাদের টাকা বেশী নয়, কিন্তু এতে আমরা দুর্গত অঞ্চলের জনগণের প্রতি আমাদের হৃদয়ের মমতা দেখিয়েছি। তাই, আমি মনে করি, টাকা, মর্যাদা, এগুলো গুরুত্বপূর্ণ নয়, আমাদের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সাহায্য আর আদর।
এই ধরনের ঘটনা,আমি বিশ্বাস করি, আমাদের আশে-পাশে খুব বেশী। যদিও, এখণ আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রোধ করার ক্ষমতা নেই, কিন্তু কোনো সময়ে আমরা হাতে হাত মিলিয়ে দুর্যোগের সম্মুখীন হই। আমি মনে করি, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের আশে-পাশে, আরো এক ধরণের মানুষের অন্যজনের সাহায্য খুব প্রয়োজন। দরিদ্র বলে তারা স্কুলে যেতে পারে না। অনেক দরিদ্র অঞ্চলে, অনেক ছেলে-মেয়ে অর্থাভারের কারণে স্কুলে যেতে পারে। যখন অন্যান্য সমবয়সী ছেলে-মেয়ে স্কুলে পড়া-লিখা করে, তখন দরিদ্রতার কারণে তারা স্কুল ত্যাগ করে। সমাজের উন্নয়নের সংগে সংগে অধিক থেকে অধিকতর জনগণ এসব ছেলে-মেয়ের প্রতি নিবিড় দৃষ্টি রাখেন। ১৯৯৪ সালে পেইচিংয়ে "আশা প্রকল্প" নামে একটি তত্পরতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার উদ্দেশ্যে হলো: বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার জনগণের সাহায্যের দরিদ্র জনগণকে সাহায্য দেয়া। ২০০৪ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত চীনে মোট দু শো ছয়টি " আশা স্কুল" প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটা দরিদ্র ছেলে-মেয়ের জন্যে স্কুলে গিয়ে পড়া-লিখার সুযোগ সরকরাহ করে। অধিক থেকে অধিকতর দরিদ্র ছেলে-মেয়ে অন্যজনের সাহায্য আরেকবার পড়া-লিখা করেন। তাদের মুখের হাসি দেখার সময়ে, আমার মন খুব মিষ্টি। কারণ আমার মনে হয়, তাদের মনে এই বিশ্বে অনেক ভালো মানুষ আছে, এই বিশ্ব প্রেমে ভরপুর হয়।
ওকে, এখন আমাদের সংগে আজকের সর্বশেষ গান শুনুন। তার পর, আজকের অনুষ্ঠান শেষ হবে।
আমার প্রিয় বন্ধুরা, আমরা একই বিশ্বে থাকি, আমাদের জীবনে পারস্পরিক আস্থা আর সাহায্য থাকা উচিত। যদি আমরা প্রত্যেকজন নিজ্বের আদর অন্যজনকে দেই, তাহলে আমি বিশ্বাস করি, আমাদের জীবন, আমাদের বিশ্ব আরো সুন্দর হবে।
|