সদ্যপ্রাপ্ত রাজনৈতিক ক্ষমতাকে সুদৃঢ় করার জন্য শি হুয়াং তি রাজ্যের বিভিন্ন লোকের হাতে যে সব অস্ত্রশস্ত্র ছিল তা সংগ্রহ করে ধ্বংস করান । তিনি তাঁর অধিকৃত ছয়টি রাজ্যের কোন কোন পূর্বতন রাজাদের এবং সম্ভ্রান্তবংশীয় ধনী ব্যক্তিদের সীমান্ত এলাকায় নির্বাসিত করেন ও অন্যান্যদের রাজধানী সিয়ান ইয়াং-এ বসবাস করতে বাধ্য করেন । পুরাতন অভিজাত সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক চিন্তাউত্খাত করার প্রয়াসে খৃঃপূঃ ২১৩ সালে শি হুয়াং তি প্রকাশ্যে বিরাট সংখ্যক পুস্তক পুড়িয়ে ফেলেন । তবে এই পুস্তক-দগ্ধ যজ্ঞে চিকিত্সাশাস্ত্র , জ্যোতির্বিদ্যা এবং কৃষিশিক্ষা বিষয় পুস্তকসমূহকে রেহাই দেওয়া হয় । আর যে সকল পন্ডিত ও বিদ্যার্থীরা নতুন শাসন ব্যবস্থার বিরোধিতা করেন অথবা যারা বর্তমানকে আক্রমণ করে প্রাচীনের প্রশংসা করেন তাদের জীবন্ত কবর দেওয়া হয় ।
শি হুয়াং তি এবং তাঁর উত্তরাধিকারী দ্বিতীয় সম্রাট (রাজত্বকাল খৃঃপূঃ ২০৯--২০৭) উভয়েই বিবেকহীনভাবে জনগণের শ্রমশক্তি নিজেদের কার্যসাধানে প্রয়োগ করেন । তাঁরা কৃষকদের নিকট থেকে এমনকি দুই--তৃতীয়াংশ পর্যন্ত উত্পাদিত শস্য খাজনা হিসেবে আদায় করেন । এর ফলে কৃষকদের জমি জমিদার এবং ব্যবসায়ীদের হস্তগত হয় । এই সম্রাটদ্বয় ৩০০,০০০ মানুষকে চীনের মহাপ্রাচীর নির্মাণ করতে বাধ্য করান , এবং ৫০০,০০০লোককে লিংনানে (কুয়াংতোং) সেনা শিবিরে পাঠান । রাজপ্রাসাদ এবং শি হুয়াং তি'র সমাধি নির্মাণের জন্য ৭০০.০০০লোক নিয়োগ করা হয় এবং অগণিত লোককে বাধ্যতামূলকভাবে রাস্তা নির্মাণের কাজে নিয়োগ করা হয় । গুরুতর করভার এবং বাধ্যতামূলক শ্রমদানের ফলে কৃষকেরা নিজেদের জমি চাষ করার সময় পেত না এবং মহিলাদুরূহ হয়ে ওঠে । ফলস্বরূপ , খৃঃপূঃ ২০৯ সালে ছেন শেং (খৃঃ পূঃ ?--২০৮) এবং উ কুয়াং ( খৃঃ পূঃ--২০৮) -এর নেতৃত্বে কৃষকেরা বিদ্রোহ ঘোষণা করেন । বিদ্রোহী কৃষকেরা কেবলমাত্র নিড়ানি এবং মৃগুরের সাহায্যে ছিন রাজবংশের শাসনের অবসান ঘটায় ।
|