নামঃ আনগোলা প্রজাতন্ত্র
স্বাধীনতা দিবসঃ ১১ই নভেম্বর (১৯৭৫)
জাতীয় দিবসঃ ১১ই নভেম্বর (১৯৭৫)
জাতীয় পতাকাঃ মঝখানে একটি সোনার বৃত্ত আকারের খাজঁকাটা ঢাকা আর একটি কাটারি আড়াআড়িভাবে থাকে। বৃত্ত আকারের খাজঁকাটা ঢাকা ও কাটারির মধ্যে একটি সোনার তারা। কালো রং হলো আফ্রিকা মহাদেশের গৌরবের প্রশংসা। লাল রং হলো ঔপনিবেশিকদের সংগে সংক্রাম চালানো গণ বীরদের রক্তের প্রতীক।তারা মানে আন্তর্জাতিকতাবাদ ও প্রগতির ব্রত, তার পাঁচটি কোণ হলো ঐক্য, স্বাধীনতা,ন্যায়পরায়ণতা, গণতন্ত্র অগ্রগতির প্রতীক। খাজঁকাটা ঢাকা ও কাটারি হলো শ্রমিক ও কৃষক এবং সৈন্য বাহিনীর ঐক্যের প্রতীক, সঙ্গে সঙ্গে তা হলো অতীতের সংক্রামী কৃষক ও সৈন্যদের স্মরণ।
জাতীয় প্রতীকঃ নিচে খাজঁকাটা ঢাকা ও সবুজ তরুশাখার জটখানে একটি খোলা বই, তার অর্থ দেশের উন্নয়নে শিক্ষা ও সংস্কৃতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বইয়ের উপর একটি উদীয়মান সূর্য, মানে দেশটি তরুণ । সূর্যের আলোয় কোদাল ও কাটারি আড়াআড়ি আছে, তা মানে আন্তর্জাতিকতাবাদ ও জনগণ চিরকালের মতো সামনে এগিয়ে চলে। তার উপরে একটি সোনার তারা, তার অর্থ জাতীয় পতাকার মত। নিচের হলুদ রংয়ের ফিতায় পোর্তুগীজ ভাষায় লেখা আছে "আনগোলা প্রজাতন্ত"।
রাষ্ট্র প্রধানঃ প্রেসিডেন্ট জৌসে এডুওয়ার্ডো ডোস সান্টোস,১৯৭৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শপথ গ্রহন করেছেন।
প্রাকৃতিক গোলঃ এই দেশ আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। তার উত্তর দিকে কোংগোপ্রজাতন্ত্র আর কোংগো প্রজাতন্ত্র গণ তান্ত্রিক অবস্থিত, পূর্ব দিকে জাম্বিয়া, দক্ষিণ দিকে নামিবিয়া এবং পশ্চিম দিকে এটল্যান্টিক মহাসাগর। তার আয়তন ১২.৪৬ লক্ষ বর্গকিলোমিটার। উপকূল রেখার দৈর্ঘ্য ১৬৫০ কিলোমিটার। দেশের অধিকাংশ ভূভাগ হলো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০০০ মিটারের বেশী উঁচু মালভূমি। গোটা দেশের পূর্বাঞ্চল উঁচু, পশ্চিমাঞ্চল নিচু, এটল্যান্টিকের উপকূল অঞ্চলহলো সমতলভূমি। দেশের অধিকাংশ ভূভাগ গ্রীষ্মমন্ডলীয় স্যাভ্যান্ন্যা অঞ্চ, কিন্তু দক্ষিণাঞ্চল হলো প্রায়-গ্রীষ্মমন্ডলীয় আহ্বাওয়া-বিশিষ্ট।
লোকসংখ্যাঃ ১.৩১০ কোটি (২০০১)। রাষ্ট্রীয় ভাষা পোর্তুগীজ। সংখ্যাগরিষ্ঠ অধিবাসীরা বান্টু(Bantu) ভাষা বলে। অধিবাসীদের মধ্যে ৪৯ শতাংশ ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী, ১৩ শতাংশ খ্রিস্টান ধর্মের অন্য সম্প্রদায়ভুক্ত,অন্যান্যর ফেটিশিজমে বিশ্বাসী।
রাজধানীঃ লুয়ান্দা(Luanda)
সংক্ষিপ্ত ইতিহাসঃ ১৪৮২ সালে পোর্তুগীজ ঔপনিবেশিকদের জাহাজ আনগোলায় পৌঁছে। ১৯২২ সালে পোর্তুগাল সারা আনগোলা দখল করে। ৫০-এর দশকের পরে, আনগোলা গণমুক্তি আন্দোলন(Movemento popular de libertacao de Angola-MPLA), আনগোলা জাতীয় মুক্তি ফ্রন্ট(FNLA) এবং আনগোলা পুরোপুরি স্বাধীনতা জাতীয় ইউনিয়ন(Uniao nacional para independencia total de Angola-UNITA) পৃথকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ৩১ শে জানুয়ারী তিনটি সংগঠন এবং পোর্তুগাল কর্তৃ পক্ষের যৌথ উদ্যোগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়।১১ই নভেম্বর এফ.এন.এল.এই আনগোলা গণ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত ঘোষণা করে। ১৯৯২ সালে আগষ্ট মাসে আনগোলা সংসদ দেশের নাম আনগোলা প্রজাতন্ত্র বদল করে রেখেছে।
রাজনীতিঃ প্রচলিত শাসনতন্ত্র১৯৭৫ সালের ১১ই নভেম্বর প্রবর্তিত হয়। শাসনতন্ত্র অনুযায়ী দেশে বহু-পার্টি ব্যবস্থা প্রবর্তন হয়।দেশের প্রেসিডেন্ট সাধারণ ভোটদানে নির্বাচিত হন, কার্যমেয়াদ ৫ বছর, আবার নির্বাচিত হতে পারেন। প্রেসিডেন্ট হলেন সরকারের প্রধান এবং সশস্ত্র শক্তির সর্বাধিনায়ক । সংসদ আর সরকারের ক্ষমতা পৃথক।আদালত ও বিচারপতির স্বাধীনভাবে বিচার করার অধীকার আছে।
অর্থনীতিঃ আনগোলা তার পেট্রোলিয়াম আর হীরার প্রচুর উত্পাদনের জন্য বিখ্যাত।আগে তার খাদ্যশস্যের উত্পাদন নিজের চাহিদা পূরণে যথেষ্ট ছিলো আর তার কোফির উত্পাদনের পরিমান পৃথিবীতে তৃতীয় স্থানে ছিলো। কিন্তু দীর্ঘকালিন অভ্যন্তরীণ যুদ্ধের কারণে দেশের অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়ন গুরুতরভাবে ব্যাহত হয়েছে। আনগোলা হলো সাহারার দক্ষিণ দিকে আফ্রিকান অঞ্চলের নাইজেরিয়ার পর দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উত্পাদনকারী দেশ। আনগোলার পেট্রোলিয়াম প্রধানতঃ রপ্তানি হয়, পেট্রোলিয়ামের রপ্তানি আয় মোট রপ্তানি আয়ের মধ্যে ৯০ শতাংশ দখল করে। পেট্রোলিয়ামের উত্পাদন আনগোলা দেশের মোট উত্পাদন মূল্যের ৪৫ শতাংশ এবং দেশের আর্থিক আয়ের ৮৫শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশ দখল করে।
পররাষ্ট্র নীতিঃ আনগোলা সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদের বিরোধিতা করে, এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নীতি ও জোট নিরপেক্ষ পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করে।
চীনের সঙ্গে সম্পর্কঃ ১৯৮৩ সালে ১২ই জানুয়ারী চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।
(আরো ছবি)
|