v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-03-15 19:58:33    
সুচৌ হানচৌ শহর প্রাচ্যের ভৌনস

cri

    গত কয়েক বছরে চীনের পর্যটন শিল্পের দ্রুত উন্নীত হয়েছে । ১৯৯২ সাল ছিলো চীনের পর্যটন বর্ষ ।১৯৯২ সালে চীনের পর্যটন শিল্পের আয় হয়েছিল : তিন শো পঁচানব্বই কোটি মার্কিন ডলার । নানা পর্যটনদলের সদস্য হিসাবে যারা চীনে এসেছিলেন ,তাদের সংখ্যা চলল্শি লক্ষ । ১৯৯৩ সালে চীনে -আসা পর্যটকদের সংখ্যা চার কোটি পনের লক্ষে পৌঁছেছিল । তাদের মধ্যে বিদেশীদের সংখ্যা গাড়ে ছেচল্লিশ লক্ষ। গত বছর চীনের পর্যটন শিল্পের আয় চার শো সাত্ষট্টি কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে ।

    চীনের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই আছে নানা ধরনের প্রাচীন দর্শনীয় স্থান আর নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য । সেগুলোর প্রতিটিরই নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে । কোনো কোনো দর্শনীয় স্থানে আকাশছোঁয়া পাহাড়ৈর নীচে স্বচ্ছ ঝরনা কলকল শব্দে বয়ে যায় । সূর্যের আলোয় কোনো কোনো দর্শনীয় স্থানের প্রাচীন স্থাপত্যকীর্তি ঝলমল করতে থাকে ।এখন আপনাদের কাছে চীনের দুটো দর্শনীয় স্থান হানচৌ শহর সুচৌ শহরের সংক্ষিপ্ত পরিচিত দিচ্ছি ।চীনের লোকেরা প্রায়ই বলে , আকাশে আছে স্বর্গ ,আর মর্ত্যে আছে সুচৌ আর হানচৌ । এই কথার মানে : সুচৌ শহর আর হানচৌ শহর মর্ত্যের স্বর্গ ।

    চীনের কিয়াং সু প্রদেশের থাই হদের তীরে এই সুচৌ শহর চীনের অন্যতম প্রাচীন সাংস্বৃতিক আর ঐতিহাসিক শহর । সুচৌ শহরের আয়তন এক শো কুড়ি বর্গ কিলোমিটার । সুচৌ শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর উপরে আছে ছোট-বড় অনেক সেতু । নদীর ধারে শহরবাসীদের বাড়িঘর । সুচৌ একটি নদীমাতৃক শহর । এয়োদশ শতাব্দীতে ইটালির পর্যটক মার্কো পোলো সুচৌ শহরের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে বলেছিলেন :সুচৌ শহর প্রাচ্যের ভৌনস।

    পূঁহিপত্রের সাক্ষ্য অনুযায়ী ,এক সময়ে সুচৌ শহরে তিন শোরও বেশী সেতু ছিল । কালক্রমে কোনো কোনো সেতু ধ্বসে পড়েছে । বুনিয়াদী গঠনকাজের প্রয়োজনে কোনো কোনো সেতুকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে । কিন্তু বেশ কয়েকটি সেতু এখনো সুরক্ষিত আছে । যেমন ,দক্ষিণ উপকন্ঠের বাওতাই সেতু । একান্নটি থাম সম্বলিত । এই মহিমা ব্যঞ্জক সেতুর দৈর্ঘ্য চার শোমিটার । দূর থেকে দেখলে মনে হয় , হদের স্বচ্ছ পানির উপরে বাঁধা জেড পাথরের একটি বিরাট কোমর্বন্দ ।

    সুচৌ শহরের আর একটি নামঃ বাগান শহর। সারা সুচৌ শহরে ছড়িয়ে আছে এক শো সওরটিরও বেশী বাগান । বেশীর ভাগ বাগান চার শো বছর আগে তৈরি হয়েছিলো । অলক্ক কয়েকটি বাগানের ইতিহাস এক হাজার বছরের । দক্ষিণ চীনের উদ্যান -রচনাশৈলীর বৈশিষ্ট্যগুলো সমন্বিত করে সুচৌ শহরের বাগানগুলো গড়ে তোলা হয়েছে । এক একটি বাগান যেন এক -একটি শিল্পকলার জাদুঘর ।সেগুলোর মধ্যে "ছাংলাং থিং" "সি জি লিন" "জুওজেং ইউয়ান" আর "লিও ইউয়ান" সবচেয়ে আকর্ষনীয় । এই চারটে বাগানে চীনের সং রাজত্বকালের ,ইউয়ান রাজত্বকালের ,মিং রাজত্বকালের আর ছিং রাজত্বকালের উদ্যান-রচনাশৈলীর পরিচয় পাওয়া যায় ।

    হানচৌ শহর চীনের চে কিয়াং প্রদেশের রাজধানী । হানচৌ শহর প্রাচীনকালে চীনেরও রাজধানী ছিল । হানচৌ শহরের পশ্চিম হ্রদের সৌন্দর্যবিশ্ব বিখ্যাত। পশ্চিম সি হ্রদ যেন দক্ষিণ চীনের একজন সুন্দরী , যার পেলবতা আর লাবন্য অতুলনীয় ।

    পশ্চিম হ্রদের তিন দিকে সবুজ পাহাড় আর এক দিকে হানচৌ শহরের বাড়িঘর । সূর্য উঠলে পশ্চিম হ্রদের টলটলে পানির উপর আলো ঝিকমিক করে।পশ্চিম হ্রদের মধ্যভাগে "সিয়াও ইং চৌ" " সান তান ইন ইয়ু" আর "হু সিন তিং" নামে তিনটা জায়গার শোভা অতি মনোরম ।

    পশ্চিম হ্রদের উত্তর পশ্চিম ভাগের তান সেতু পাই বাঁধের শেষ প্রান্ত। বাঁধটির দুধারে দুটো পীচ গাছের মাঝখানে একটি করে উয়িলো গাছ । বসন্তের সমাগমে ফুলে ফুলময় পিচ গাছ, সবুজ উয়িলো গাছ ,হ্রদের স্বচ্ছ পানি আর বৃক্ষশোভিত পাহাড়ের সমন্বয়ে সতেজ প্রানপ্রাচুর্যে ভরপুর একটি দৃশ্য দেখা দেয় । হানচৌ শহরের "লিউ লাং ওয়েন ইং" "হুয়া কাং কুয়ান ইয়ু" "পিংহু ছিউ ইয়ু" প্রভৃতি নামের কয়েকটি জায়গার অপরুপ সৌন্দর্যও বিশেষভাবে উপভোগ করার মত ।