চীনের ঐতিহাসিক তথ্য থেকে জানা গেছে, সুদূর থান রাজত্ব সালেই চীনে বর্তমান হকি খেলার সাদৃশ্যসূলক এক ধরণের খেলা প্রচলিত ছিল। কিন্তু প্রতিযোগিতার একটি দফা হিসেবে বর্তমান হকি খেলার প্রচলন চীনে অপেক্ষাকৃত দেরীতে শুরু হয়েছে।
বর্তমানে চীনে হকি খেলার অবস্থা কেমন এই প্রশ্ন নিয়ে আমি চীনের হকি সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান ,এশিয় হকি ফিডারেশনের সদস্য জনার হাও চেন ছিংয়ের একটি সাক্ষাত্কার নিয়েছি। জনাব হাও ১৯৭৫ সালে চীনের ক্রীড়া সহলের অন্য তিনজন ব্যক্তির সংগে একত্রে পাকিস্তানে গিয়ে তিন মাস হকি শিখেছিলেন। তারাই চীনে আধুনিক হকি খেলা এনেছেন।
জনাব হাও আমাকে বলেছেন, হকি খেলার কলাকৌশল শিখতে চীন ১৯৭৫ সালে পাকিস্তানে চারজন কোচ পাঠিয়েছিলো। ১৯৭৫ সালে পেইচিং ক্রীড়া ইন্সটিউট এবং অন্তর্মংগোলিয়া স্বায়ওশাসিক অঞ্চল সর্বপ্রথমে পুরুষদের হকি দল গঠন করে। এরপর চীনে জাতীয় হকি প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং অন্যান্য দেশের সংগে হকি খেলার ব্যাপারে আদানপ্রদান শুরু হয়। ওই বছরেই পাকিস্তানের একটি যুব হকি দল চীন সফর করে। কয়েক মাস পর চীনের তখন সবেমাত্র গঠিত হকি দল অনেকগুলো উন্নত কলাকৌশল শিখেছিল। চীনে এপর্যন্ত প্রদেশ পর্যায়ের দশ বারোটি হকি দল গঠিত হয়েছে।
চীনে মেয়েদের হকি খেলা আশির দশকে শুরু হয়।১৯৮০ সালে চিয়াংসি প্রদেশে চীনের হকি খেলার গ্রাম বলে পরিচিত অন্তর্মংগোলিয়া মেয়েদের হকি দল গঠন করে। ১৯৮০ সালে চীনে মেয়েদের প্রথম জাতীয় হকি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এখন চীনে মেয়েদের বারোটি হকি দল আছে।
উল্লেখ্য করা যেতে পারে যে, যদিও চীনে মেয়েদের হকি খেলা দেরীতে শুরু হয়েছে তবুও কঠোর প্রশিক্ষা পাওয়ার ফলে এবং অদম্য মনোবল আর উত্সাহের কারণে চীনে মেয়েদের হকি খেলার মান দ্রুত উন্নত হতে পেরেছে। এখন চীন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান, এশিয়ায় মেয়েদের হকি খেলার তিনটে শক্তিশালী দেশ বলে পরিচিত। চীনের মেয়েদের হকি দল ১৯৯০ সালে প্রথম বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় এবং পৃথিবীতে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করে।
১৯০৮ সালে চতুর্থ ওলিম্পিক গেমসে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরুষদের হকি খেলা অনুষ্ঠিত হয় এবং মেয়েদের হকি খেলা ১৯৮০ সালে বাইশতমো ওলিম্পিক গেমসের আনুষ্ঠানিক ক্রীড়ায় স্থান পয়ে।চীন সরকার হকি খেলার উন্নয়নকে বেশ গুরুত্ব দেয়। সিচুয়াং প্রদেশের চুন্চিন শহরের কুয়াং ইয়াং পে জায়গায় হকি খেলার শীতকালিন প্রশিক্ষণের ঘাঁটি নির্মিত হয়েছে। পেইচিং শহরের ওলিম্পিক ক্রিড়া কেন্ত্রে কৃত্রিম তৃণভূমিতে এবং কাংসু প্রদেশের নির্মীয়মান দুটো কৃত্রিম তৃণভূমিতে হকি দলগুলো প্রশিক্ষণ নিতে পারে এবং প্রতিযোগিতা চালাতে পারে। আমাদের বিশ্বাস, রাষ্ট্রীয় গুরুত্ব ও সমাজের বিভিন্ন মহলের যতন নেয়ার ফলে এবং হকি মহলের অক্লান্ত প্রয়াসের ফলে চীনের হকি খেলা অবশ্যই আরো দ্রুত উন্নত হবে।
ক্রীড়ার অভ্যাস প্রভৃতির কারণে চীনে খুবই কম লোক ক্রিকেট খেলে । বর্তমানে চীনে জাতীয় ক্রিকেট দল নেই।
|