v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-03-10 17:02:29    
বিপদে সম্মুখীন হলে শিশুদের কি করতে হয়

cri
    সবাই জানেন যে, শিশুরা মানবজাতির ভবিষ্যত্ আর আশা । কিন্তু সুস্থভাবে আর আনন্দের সংগে বড় হলেই কেবল তারা রাষ্ট্রশাসন আর নির্মানকাজে দক্ষ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠতে পারবে । শিশু সম্প্রদায় সমাজের এক দুর্বল দল, বয়স্ক মানুষের চেয়ে তারা বেশী সহজেই ক্ষতির শিকার হতে পারে । ক্ষতি প্রতিরোধ করার কোনো উপায় তাদের নেই । বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এমন কি শিশু-হরন ও বিক্রয় বা প্রতারনা করার ঘটনা প্রায় ঘটে । পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে চীনে শতকরা দশ ভাগ শিশু ক্ষতি এড়ানোর কোনো উপায় জানে না । অপরিচিত লোককের দাবী প্রত্যাখ্যান কনবতে জানে না বলে শতকরা আশি ভাগ শিশু ক্ষতির শিকার হয় । তাহলে এই বৈচিত্র্যময় সুন্দর বিশ্বে শিশু-সম্প্রদায় কি ধরনের বিপদের সম্মুখীন হতে পারে এবং বিপদ ঘটার সময়ে তা প্রতিরোধ করার জন্যে তাদের কি করতে হয়? বিষয়টি অনেক আগে থেকেই চীন সরকার আর চীনের বিভিন্ন মহলের দৃষ্টি আকর্যন করেছে । এখানে এমন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাক যে বিষয়টি হল, আত্মরক্ষার জ্ঞান ও সচেতনতা জোরদার করার সংগে সংগে আমাদের বাচ্চারা কিভাবে অস্তিত্ব রক্ষা তথা আত্মরক্ষার কলাকৌশল শিখতে পারে । যাতে তারা দুষ্ট লোকের ক্ষতিসাধন থেকে দূরে থেকে আনন্দের সংগে বড় হয়ে ওঠতে পারে ।

    পেইচিংয়ের নাগরিকদের নিশ্চয়ই এখনো মনে আছে যে, ১৯৯৮ সালের এক উল্কা বর্ষণ রাতে এক ছোটো মেয়ে তার ছোটো ভাইয়ের সংগে বাইরে উল্কা-বৃষ্টি দেখতে গিয়েছিল সেই দিনই তারা দুষ্টলোকের পাল্লায় পড়েছিল । ছোটো মেয়েটি সেদিন থেকে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি, সে মারা গেছে । ঘটনাটি থেকে বোঝা কঠিন নয় যে, অপরিচিত লোকের সামনে আমাদের বাচ্চাদের ভালো-মন্দ যাচাই করার শক্তি আর আত্মরক্ষা ও প্রতিরোধমূলক বোধ অত্যন্ত দূর্বল। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ বলেছেন, প্রাচীনচীনে দুষ্টলোকের মুখে চিন্হিত দাগ ছিল বলে তাদেরকে চেনা সহজ ছিল । কিন্তু এখন খারাপ লোকের মুখে কোনো চিন্হ নেই বলে বাস্তব জীবনে ভাল লোক আর খারাপ লোককে পৃথক করা বাচ্চাদের পক্ষে সত্যিসত্যি সহজ নয় ।

    বাচ্চাদের মাঝে প্রতিরোধবোধ সৃষ্টি করার জন্যে সম্প্রতি চীনের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ছ'থেকে তেরো বছর বয়স পর্যন্ত তিন-চার বাচ্চাকে নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছে । চাংছি নামে একজন তেরো বছর বয়েসের ছেলেকে পরীক্ষা করার সময়ে ছেলেটি অপরিচিত লোকের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে । তাদের প্রশ্নগুলো হল, তোমার বাড়ি কোথায়? তোমার পরিবারে কয়েকজন লোক আছে?তোমার বাবামার নাম কি? দিনের বেলায় কোন সময়ে তোমার বাড়িতে লোক থাকে না? ইত্যাদি ইত্যাদি । কিন্তু ছেলেটিকে অন্য একটি জায়গায় যেতে অনুরোধ করা হলে চাংছি যেন কিছু সতর্ক হয়েছে এবং বলেছে, আমি যাব না, আমি বাবামাকে বলিনি, তাদেরকে না জানালে তারা চিন্তা করবেন । সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ বলেছেন, এমন সময়ে একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, অপরিচিত লোককে না বলতে হবে । যদি অপরিচিত লোকের সংগে কথা বলে বা তার সংগে চলে যায় তাহলে নানা ধরনের অপরাধ সাধন হতে পারে ।যদি তোমার চাবি চুরি হয় তাহলে তোমার বাড়িতে চোর বা ডাকাত ঢুকে চুরি বা ডাকাতি করতে পারে । যদি অপরিচিত লোকের সংগে চলে যায় তাহলে শিশু-অপহরন বা বিক্রয় হতে পারে । তাই আমাদের ছোটো বেলা থেকেই এমনভাবে সচেতন হওয়া উচিত যে অপরিচিত লোককে 'না' বলা প্রয়োজন । এটা আমাদের বাচ্চাদের জন্যে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ।

    ওয়াংচিয়াইউ আর সিন চেলিন নামে দুজন ছেলেমেয়েকে পরীক্ষা চালানোর সময়ে মেয়েটি অত্যন্ত সর্তকতার সংগে লোকটির প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেছে এবং ছেলেটি লোকটিকে খুব সহযোগিতা করেছে । কিন্তু লোকটি তার চাবি চুরি করেছে কথাটি শুনে ছেলেটি সাহসের সংগে সামনে এগিয়ে গিয়ে লোকটিকে জিজ্ঞাস করেছে--আমার পকেট থেকে আমার চাবি আপনি নিয়েছেন কেন? যদি আমার জিনিস হারায় তাহলে আমি আপনাকে নিয়ে নালিশ করব । পরে কেউ ছেলেটিকে জিজ্ঞাস করে যে, যদি লোকটি সত্যি খারাপ লোক তাহলে তুমি কি করবে? ছেলেটি উত্তর বলে, তার সংগে মারামারি করব, নইলে তাড়াতাড়ি পুলিশ বিভাগে খবর দেব । কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ হুশিয়ারী জানিয়ে বলেন, এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মনে রাখতে হবে যে, প্রান প্রথম সম্পদ দ্বিতীয় । যখন কোনো অপরিচিত লোক তোমাকে বলবে যে, বাচ্চা, আমি তোমার বাবামাকে চিনি, চলো, আমরা একসংগে বেড়াতে যাই । তখন তুমি তাকে বলবে, না, মাফ করুন, আমি আপনাকে চিনি না । আপনার সংগে আমি যেতে পারি না ।

    আজ আমরা বাচ্চাদেরকে খারাপ লোককে চিন্হিত করার কিছু কলাকৌশল শিখিয়েছি এবং তাদের স্মরন করিয়ে দিচ্ছি যে, ক্লাস শেষে তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরে যাও, অপরিচিত লোকের দেয়া পানিয় খেয়ো না, অপরিচিত লোককে "না"বলতে শেখো ।

    বয়স্ক লোকেরা আশা করেন যে, বাচ্চারা সুস্থভাবে আনন্দের সংগে বড় হয়ে উঠবে । কিন্তু এই আশা বাস্তবায়িত হতে হলে বাচ্চাদের প্রতিরোধজ্ঞানবোধ জোরদার ছাড়াও তাদের জন্যে সৃষ্ট সামজিক পরিবেশ তাদের বড় হয়ে উঠার পক্ষে উপকারী হওয়া উচিত । আশা করি বাচ্চাদের জীবনযাপনে চিরকালই শুধু নিল আকাশ, সাদা সাদা মেঘ আর সবুজ মাটি থাকবে ।