v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-03-07 18:27:29    
চীনে প্রসবকালে স্বজনের উপস্থিতি এখন আর স্বপ্ন নয়

cri
    এখন চীনদেশের হাসপাতালে প্রসবকালে স্বজনের উপস্থিতির ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে অর্থাত্ স্ত্রীর প্রসবকালে স্বামী বা মা অথবা বোনেরা তার পাশে থাকবেন । প্রবাদ আছে, দশ মাসে গর্ভে ধরা, আর এক মুহূর্তে প্রসব করা । প্রসব করার দুষকর প্রক্রিয়া নারীদের জন্যে এক অবিস্মরনীয় অভিজ্ঞতা। প্রসবকালে স্বামীর উপস্থিতি শুধু মানসিক দিক থেকে স্ত্রীকে সমর্থন করে না বরং স্বাভাবিক প্রসবের প্রক্রিয়ায় এটা একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করবে ।

    চৌইয়ানান একটি স্টোক এক্সচেমের কর্মী । এ বছর তার বয়স আটাশ বছর। মা হবার কয়েক দিন আগে প্রসবকালে তিনি স্বামীর উপস্থিতিকে বেছে নিয়েছেন ।

    এ সম্পর্কে চৌ ইয়ানান বলেছেন, সন্তান প্রসব করা নারীদের সারা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক কাজ, এটা এক ঝুঁকিপূর্ণ কাজও । প্রসব-সময় যতই ঘনিয়ে আসছিল, মানসিকভাবে আমি ততই চিন্তিত হচ্ছিলাম । প্রসবকালে স্বামীর উপস্থিতিতে আমি এই কঠিন সময় কাটিয়ে উঠতে চেয়েছি, তার স্বামী স্যুকান বলেছেন, বাচ্চাটা স্বামীস্ত্রী দুজনেরই । তাই প্রসবকালে দুজনেরই সংগে থাকা ভাল । বিয়ে হওয়ার পরের এই বেশ কয়েক বছরে আমরা পরষ্পরের কাছ থেকে কখনো দূরে থাকিনি । তাই প্রসবকালে তারপাশে থাকতে পারলে ভাল ।

    ১৯৯৪ সালে চৌইয়ানান আর তার স্বামী স্যুকানের মধ্যে পরিচয় ঘটে । সাত বছর-দীর্ঘ প্রণয়ের পর তাদের বিয়ে হয় । কাজের সময় ছাড়া স্বামীস্ত্রী দু'জনের মধ্যে একমিনিটের জন্যেও ছাড়াছাড়ি হয়নি ।স্বামীর সংগেই চৌ ইয়ানান হাসপাতালে যান । আজকাল চৌ ইয়ানানের মতো প্রসবকালে স্বামীর উপস্থিতিকে বেছে নেয়া প্রসূতীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে ।

    চৌ ইয়ানান বলেছেন, স্বামী পাশে থেকে আমাকে উত্সাহ দেন, আমাকে সান্ত্বনা দেন, আমি এখন আর তেমন দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত নই । প্রসবকালে স্বামীর উপস্থিতি তার জন্যে এক অমর স্মৃতি হয়ে থাকবে । আমাদের পরবর্তীকালের জীবনযাপনে এক ভিন্ন স্মৃতি হয়ে থাকবে ।

    ছেন লিনমেই চারদিন আগে মা হয়েছেন । এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, যখন আমাকে প্রসবরুমে পাঠানো হয় তখন ভয়ে আমার পা ও শরির কেপে উঠে এমন কি আমার রক্ত-চাপও বেড়ে যায় । স্বামীর উপস্থিতিতে মানসিকভাবে আমি সাহস পাই । প্রসবকালে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । আমার স্বামীও জানবেন তার স্ত্রীর পক্ষে প্রসবকরা একটা সহজ কাজ নয় ।

    হাসপাতালের প্রসব বিভাগের প্রধান মাডাম চাই কুইরোং বলেছেন, প্রসবকালে স্বামীর উপস্থিতিতে প্রসবরুমের পরিবেশের পরিবর্তন হয়েছে, প্রসব-প্রক্রিয়া হয়েছে, এটা প্রসূতীর জন্যে কল্যানকর । দুপুর সাড়ে বারটায় চৌ ইয়ানান প্রসব রুমে প্রবেশ করেন এবং সুষ্ঠুভাবে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন । স্বামী স্যুকান বাচ্চার নাড়ি কাটেন ।

    চৌ ইয়ানান বলেছেন, প্রসবকালে আমার পাশে স্বামীর উপস্থিতির ভূমিকা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ । যেমন, প্রসবরুম আমার কাছে এক অপরিচিত পরিবেশ, তেমনে চারপাশে রয়েছে অপরিচিত ডাক্তার আর নার্স । স্বামী পাশে থাকলে আমি তার হাত ধরতে পারি আর মানসিক দিক থেকে আমি নিশ্চিন্ত হয়েছি । ফলে সুষ্ঠুভাবে আমি বাচ্চার জন্ম দিয়েছি।নিঃসন্দেহে প্রসবকালে স্বামীর উপস্থিতি স্ত্রীর জন্যে ভাল । স্বামীর জন্যেও ভাল । তিনি প্রসবকালে স্ত্রীর কষ্ট আর ব্যাথা বুঝতে পারবেন এবং স্ত্রী আর সন্তানকে আরও ভালবাসবেন ।

    নানা কারনে প্রথম দিকে চীনে মাত্র শতকরা বিশ ভাগ প্রসূতী স্বামীর উপস্থিতি বেছে নিতেন, কিন্তু অধূনা মানুষের চিন্তা-চেতনার দ্রুত পরিবর্তন হওয়ায় এখন শতকরা সওর ভাগ প্রসূতী প্রসবকালে স্বামীর উপস্থিতি বেছে নেন ।