v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-03-03 12:33:47    
পেইচিংয়ে বিপ্লবী ইতিহাসের যাদুঘর

cri
    সারা চীনদেশে পেইচিংয়েই যাদুঘরের সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। পেইচিংয়ে বিপ্লবী ইতিহাসের যাদুঘর ,সামবিক যাদুঘর ,জ্যোতিবিদ্যার যাদুঘর ছাড়া রাজধানী যাদুঘর ,প্রাকৃতিক ইতিহাস যাদুঘর ,প্রাচীন মুদ্রার যাদুঘর ,শিল্পকলার যাদুঘর ,প্রাচীন ঘন্টার যাদুঘর ও প্রাচীন স্থাপত্যের যাদুঘরও আছে। আজকের অনুষ্ঠানে আপনাদেরকে পেইচিংয়ের প্রাকৃতিক ইতিহাস যাদুঘর,রাজধারী যাদুঘর আর প্রাচীন মুদ্রার যাদুঘরের পরিচয় দিচ্ছি।

    প্রাকৃতিক যাদুঘর পেইচিংয়ের থিয়ান ছিয়াও এলাকায় অবস্থিত। বাসে বা ট্রামে করে সেখানে যাওয়া যায়। প্রাকৃতিক যাদুঘরের ছাই রংয়ের প্রধান ভবন সবুজ লতাগুলেমর আস্তরনে আবৃত। এই যাদুঘর সারা বছর খোলা থাকে। প্রতিদিন আটটায় এর দরজা খোলা হয় এবং বিকেল পাঁচটায় বন্ধ করা হয়। প্রাপ্ত বয়স্কদের এবং ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রতিটি টিকেটের দাম যথাক্রমে দশ ইউয়ান আর ছ'ইউয়ান।প্রাকৃতিক যাদুঘর তিনটে ভাগে বিভক্ত। ভুগর্ভস্থ প্রদর্শনী কক্ষে ঢুকলে চোখে পড়বে লোমহর্ষক ডাইনোসোরের জগত। এখানে হুবহু ডাইনোসরের মডেল এবং ডাইনোসোর শিলীভুত ডিম সাজানো রয়েছে। দর্শকরা হাত দিয়ে ডাইনোসোর শিলীভুত ডীম স্পর্শ করতে পারেন। এই প্রদর্শনী কক্ষে এসে দর্শকদের আদিম যুগে ফিরে যাওয়ার মতিভ্রম ঘটতে পারে। ডাইনোসোর জগত দেখতে ছেলেমেয়েদের খুবই ভালো লাগে।

    একতরার প্রদর্শরীকক্ষে প্রাণী বিবর্তনের ইতিহাস অনুয়ায়ী একক জীবকোষের প্রাণী থেকে শুরু করে উচ্চশ্রেণার স্তন্যপায়ী প্রাণীপর্যন্ত সকল প্রজাতির প্রাণীর নমুনাও ছবি সাজানো রয়েছে। এগুলোর মধ্যে যেমন আছে বিচিত্র প্রবাল ,ইয়ুন নান প্রদেশের রংবেরংয়ের প্রজাপতি ,তেমনি আছে হিংস্র শকুন । এই প্রদর্শনী কক্ষে ঘুরে ঘুরে দেখলে যেমন দেখলে যেমন প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়, তেমনই প্রাণী জগত সম্পর্কে অনেক জ্ঞানও অর্জন করা যায়।

    'সুন্দর মানবদেহ' নামে দু'দলার প্রদর্শনী কক্ষে প্রবেশ করলে দর্শকরা মানুষের দেহ, সাংসপেশী আর কংকাল দেখতে পাবেন। শিশুর জন্ম,যৌন-ব্যাধি ও বিকলাংগ শিশু সম্পর্কেও তাঁরা অনেক মুল্রবান তথ্য পাবেন।'মানুষের উত্পত্তি'নামক আদিম মানয়ের প্রদর্শনীকক্ষে অনেক দর্শক প্রথমবারের মত আদিম বানরের আধুনিক মানুষে বিবর্তনত হওয়ার প্রক্রিয়া জান্তে পেরেছেন।আদিম মানয়ের এক একটি শিলীভুত কংকাল যেন দর্শকদের জন্য আমাদের পুর্বপুরুষের বিপদ-সংকুল জীবনযাত্রা বর্ণনা করছে।

    প্রাকৃতিক যাদুঘর দেখার পর এবার আমরা পেইচিংয়ের গুও জি চিয়ান রাস্তায় ধারে অবস্থিত রাজধানী যাদুঘর দেখতে যাব। তিব্বতের বৌদ্ধ ধর্মের প্রসিদ্ধ ইয়ংহোগুং মন্দিরের সংগে সংলগ্ন গুও জি চিয়ান রাস্তা রাষ্ট্রীয় পরিষদ কর্তৃক সংরক্ষিত একটি বাস্তা।এই রাস্তায় পেইচিং অপেরা ,পুরাকির্তি ও প্রাচীরচিত্র নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে একটি বিশেষ সাংসকৃতিক পরিবেশ।

    পুরনো গুও জি চিয়ান রাস্তা পার হয়ে রাজধানী যাদুঘর দরজা পৌরয়ে গেলে চোখে পড়বে বিরাটকায় পুরনো পাইন গাছ'প্রচুর পাথরের ফলক ও মথিমান্বিত কনফুসিয়াস মন্দির। বাকি ছ'দিনে সকাল ন'টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা থাকে।টিকেটের দাম সস্তা।প্রাপ্ত বয়স্কদের আর ছেলেমেয়েদের জন্য প্রাকৃতি টিকেটের দাম যথাক্রম।রাজধানী যাদুঘরের আঙিনায় গাছ-গাছালির ফাঁকে ফাঁকে যে পাথরের ফলকগুলো দেখা যায়, সেগুলোর উপরে খোদাই করা হয়েছে চাং জু জেং ,জেনাবেল সি কো ফা প্রমূখ রাজনীতিবিদ ও সংষ্কারবিদসহ চীনের ইউয়ান, মিং ও ছিং রাজবংশীয় আমলের বিশিষ্ট ঐতিহাসিক ব্যক্তিদের নাম। বৃষ্টির চোটে তাদের অনেকের নাম ধুয়েধুয়ে এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে । কিন্তু হাত বুলালে পাথরের ফলকের ভেতরে লুকানো প্রাচীন সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সপন্দন অনুভব করা যায়।তা ছেং ভবনে প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র এবং পুজার উপকরণ দেখানো হয়।

    'চিয়ান লং সি জিং' নামক প্রদর্শনীকক্ষে এক শো নববইটি পাথরের ফলকে প্রাচীন পুঁথিপত্রের লেখা খোদাই করা হয়েছে। কেউ কেউ বলেন, রাজধানী যাদুঘর পেইচিংয়ের একটি সাংস্কৃতিক তীর্থস্থান ।

    প্রাচীন মুদ্রার যাদুঘর জনবহুল তে সেং মেন এলাকায় অবস্থিত।দুই ইউয়ানের টিকেট কেটে এই যাদুঘরের লাল ফটাকা পৌরয়ে ভেতরে গেলে বাইরের কোলাহর আচম্কাই যেন শুন্যে মিলিয়ে যায়। নিরিবিলি প্রদর্শনীকক্ষ যেন প্রাচীন মুদ্রার জগত।

    বিদেশীদের জন্যও উন্মুক্ত পেইচিংয়ের এই একমাত্র প্রাচীন মুদ্রার যাদুঘরে নানা রকমের চার হাজারেরও বেশী মুদ্রা সংরক্ষিত রয়েছে।এগুলোর মধ্যে যেমন আছে দক্ষিণ সানমি প্রদেশে আবিস্কৃত প্রাচীনতম কড়ি ,যুদ্ধমান রাষ্ট্রমুহের যুগে ব্যবহৃত ছুরির আকারের মুদ্রা, তেমনই আছে ছিন,ও হান রাজবংশীয় আমলের মুদ্রা। প্রতিটি যুগের মুদ্রার আছে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও পুরাকালের জীবনরস। যেটা সবচেয়ে আর্কষনীয় সেটা হচ্ছে 'জিয়াও জি' নামে উত্তর সুং রাজবংশীয় আমলের তৈরী কাগজে মুদ্রা।বিশেষজ্ঞদের মতে চীন তথা সারা পৃথিবীতে এই কাগুজে মুদ্রা সবচেয়ে আগে আবিষ্কৃত হয়েছিলো। এই সব মুদ্রা যারা দেখতে আসেন, তাদের অধিকাংশই ছাত্রছাত্রী ,দেশবিদেশের বিশেষজ্ঞ এবং প্রাচীন মুদ্রা অনুরাগী মানুষ।