v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-02-03 16:01:21    
ইসলামী বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা

cri

    বহু জাতি অধ্যুষিত উত্তর-পশ্চিম চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্ব শাসিত অঞ্চলে ১০টি জাতি ইসলাম ধর্ম বিশ্বাস করে। সিনচিয়াংয়ের জনসংখ্যা ১ কোটি ৯০ লক্ষেরও বেশি। এদের মধ্যে মুসলমানদের সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি। গত কয়েক বছরে সিনচিয়াংয়ের বিভিন্ন অঞ্চলের মসজিদের ধর্ম প্রচারকদের চাহিদা মেটানোর জন্য স্বায়ত্ত শাসিত অঞ্চল সরকার ইসলামী ইনস্টিটিউট, ইসলামী বিদ্যালয় প্রভৃতি ধর্মীয় উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে।

    ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত সিনচিয়াং ইসলামী বিদ্যালয় স্বায়ত্ত শাসিত অঞ্চলের রাজধানী উরমছি শহরের উত্তরাংশে অবস্থিত। দু'মাসে একবার করে এই বিদ্যালয়ে সিনচিয়াংয়ের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ২শো শিক্ষার্থাকে স্বাগত জানানো হয়।

    এই সব শিক্ষার্থা মধ্যে রয়েছেন যেমন প্রবীণ বন্ধুরা, তেমনে প্রাণোচ্ছল অল্পবয়সী লোকেরা। কিন্তু বেশির ভাগ বন্ধু শিক্ষার্থীর জন্য এটি তাদের প্রথম ইসলামী বিদ্যালয়ে প্রবেশ।

    পূর্ব সিনচিয়াংয়ের হামি থেকে আসা সত্তর বছর বয়স্ক মোঃ সুবি বিদ্যালয়ে প্রবেশের অভিজ্ঞতা প্রসংগে বলেছেন, বিদ্যালয়ের পরিবেশ খুবই সুন্দর।   কর্মীরা আমাদের হোষ্টেল ও খাবার ঘর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে দিয়েছেন। ধর্মীয় ব্যক্তি হিসেবে বিদ্যালয় আমাদের নিজেদের স্থান, আমাদের তাকে ভালভাবে সুরক্ষা করতে হবে।

    সিনচিয়াং ইসলামী ছাত্রদের বেশির ভাগ সিনচিয়াংয়ের বিভিন্ন অঞ্চল ও জেলার সমজিদ থেকে আসা প্রাথমিক স্তরের ইমাম। তাদের মধ্যে বহু লোকের ধর্মীয়, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক জ্ঞান সীমিত। সুতরাং বিদ্যালয় তাদের পড়ানোর জন্য সিনচিয়াং ইসলামী ইনস্টিটিউট ও সিনচিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রবীণ শিক্ষক ও ধমীয় প্রচারকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

    শিক্ষার্থীদের নামাজ পড়ার সুবিধার জন্য বিদ্যালয়ে একটি বিরাট মসজিদ নির্মান করা হয়েছে। দিনে পাঁচবার নামাজ পড়া ছাড়াও প্রতি শুক্রবার পবিত্র জুমার নামাজও আদায় করা হয়। এখানকার পড়াশুনা প্রসংগে দক্ষিণ সিনচিয়াংয়ের একটি গ্রামীণ মসজিদ থেকে আসা ইমাম লুজিমামাদিখাই বলেছেন, "আমরা একদিকে লেখাপড়া করি, অন্যদিকে ধমীয় উপাসনায় নিয়োজিত হই। বিদ্যালয়ের উদ্যোগে আমরা উরুমচিতে গিয়ে মসজিদ পরিদর্শন করেছি আর ওখানকার ধমীয় ব্যক্তিদের সংগে আদান-প্রদান করেছি। আমি সত্যিকারভাবে ধর্মীবলম্বীদের মধ্যেকার আদান-প্রদানের আনন্দ অনুভব করেছি।

    সিনচিয়াং ইসলামী বিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষার্থী কৃষি ও পশুপালন অঞ্চল থেকে এসেছেন। সেজন্য কতকগুলো ফোরাম আয়োজনের জন্য বিদ্যালয় কিছু সংখ্যাক কৃষি কিশেষজ্ঞকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছে। ফোরাম মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষবাদ, পশুপালন প্রভৃতি সম্পর্কিত জ্ঞান শিখে নিয়েছি। বিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর যে সব শিক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলো বাস্তব অনুশীলনে ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে স্থানীয় মুসলমানদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। পশ্চিম সিনচিয়াংয়ের কেচিলেসুকরকেচি স্বায়ত্ত শাসিত বিভাগের একটি মসজিদ থেকে আসা এশাকারি মসজিদ স্থানীয় মসজিদে বিশাধিক বছরে ইমাম হিসেবে ধমীয় কাজে নিয়োজিত হয়েছেন। আগেকার অভিজ্ঞতা প্রসংগে তিনি বলেছেন, আগে আমরা বাইরে নামাজ পড়তাম, মাটিতে শুধু কম্বল আর মাদুর বিছিয়ে। এখন বিভিন্ন অঞ্চলে মসজিদ নির্মান করা হয়েছে, ভিতরে কম্বল বিছানো এবং সাইক্রোফন প্রভৃতি ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়। উরুমচির ইসলামী বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য সরকার বিনাখরচে আমাদের পাঠায়। তারা আমাদের খাওয়া ও থাকার ভাল শর্ত যুগিয়েছে এবং সুধী অধ্যাপকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এতে প্রমাণিত হয়েছে, সরকার আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি মর্যাদা প্রদর্শন করে।

    জানা গেছে, সিনচিয়াং ইসলামী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকে প্রায় ৫ হাজার ইসলাম ইমামকে ধর্মীয় বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

    এখন সিনচিয়াংয়ের বিভিন্ন অঞ্চলে মোট ২৩ হাজারটিরও বেশি মসজিদ আছে। শহর হোক বা গ্রামাঞ্চল হোক না কেন মুসলমানরা নিকটবর্তী মসজিদে গিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যের সংগে নানা রকমের ধর্মীয় অনুশাসনে অংশ নিতে পারেন। গত তিরিশাধিক বছরে পেশায় নিয়োজিত একজন প্রবীণ ইমাম বলেছেন, গত ৫০ বছরে সিনচিয়াংয়ের ধর্মীয় ব্রত প্রসারিত হয়েছে। ধর্মীয়কাজকর্ম আনুষ্ঠানিক কক্ষপথে প্রবেশ করেছে এবং মুসলমানদের জীবনযাপন অধিক থেকে অধিকতর ভাল হয়েছে।