v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-02-01 10:23:39    
চৌ রাজবংশের ইতিকথা

cri

    ঐ যুগের সামাজিক উত্পাদনসম্পর্ক নিশ্চিতরূপে শাং যুগের চেয়েও উন্নত ছিল । তাম্রলিপি এবং "সঙ্গীত-কাব্য গ্রন্থ" এবং ঐতিহাসিক গ্রন্থ" থেকে আমরা জানতে পারি যে ঐ যুগে শ্রেনীবিভাগ বিদ্যমান ছিল । এই শ্রেণীবিভাগ হয়েছিল ভূমির ব্যক্তিগত মালিকানার ভিত্তিতে । দেবপুত্র অর্থাত্ রাজা কিছু জমি এবং জমিতে বসবাসকারী লোকেদের রাজকুমারদের প্রদান করতেন । রাজকুমারেরাও অনুরূপভাবে তাদের প্রাপ্ত জমি ও জমিতে বরবাসকারীদের নিজেদের মন্ত্রীদের মধ্যে বন্টন করতেন । এইভাবেই উদ্ভব হয় জমি এবং জমিতে বসবাসকারী মানুষদের মালিকানাস্বত্বপ্রাপ্ত একটি ভূস্বামীশ্রেণী । অন্যদিকে , যারা সরাসরি জমি চাষ করত তাদের নিজেদের কোন জমি ছিল না । তারা ভূস্বামীদের কাছ থেকে ক্ষুদ্র এক খন্ড জমি নিয়ে তা চাষ করত এবং ঐ জমিতে নিজের এবং পরিবারের অন্যান্য লোকদের ন্যুনতম ভরণপোষণের জন্য প্রয়োজনীয় ফসল উত্পাদন করত , আর রাজা , রাজকুমার ও মন্ত্রীদের জমি বিনা মজুরিতে চাষ করত । ঐ সব সরাসরি জমি চাষকারীরা ভূস্বামীদের কাছ থেকে জীবনযাপনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পেত না । তাদের উত্পাদনের যন্ত্রপাতি , বাড়ীঘর , শাকসব্জীর বাগান ইত্যাদির ব্যবস্থা নিজেরাই করত । ভূস্বামীরা ঐ সব ব্যক্তির উপর মালিকানাস্বত্ব বজার রাখতেন ।

    পশ্চিম চৌ-এর শ্রেণীবিভাগ প্রথার সঙ্গে জড়িত ছিল জ্যেষ্ঠপুত্র সম্পত্তির উত্তরাধিকার হবার ব্যবস্থা । এই যুগে অভিজাত শ্রেণীর মধ্যে রাজনৈতিক পদ এবং সম্পদের উত্তরাধিকারী হবার যোগ্যতা অর্জন করতেন প্রথম স্ত্রীর গর্ভজাত জ্যেষ্ঠপুত্র । এই জ্যেষ্ঠপুত্র যিনি পিতার পদ এবং জমি পেতেন তাঁকে "জোং জি" অর্থাত্ উত্তরাধিকারী বা ওয়ারিস নামে অভিহিত করা হত । এইভাবে চৌ গোষ্ঠীর রাজা হতেন চৌ সাম্রাজ্যের "জোং জি" , রাজকুমারেরা হতেন নিজ নিজ রাজ্য বা জায়গীরের "জোং জি" এবং মন্ত্রীরা হতেন নিজ নিজ পরিবারের "জোং জি" । বিভিন্ন রাজনৈতিক পদে অধিষ্ঠিত ঐ সব "জোং জি" প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন পরিমাণের জমির মালিক ছিলেন ।

    পশ্চিম চৌ-এর সংস্কৃতি যে মাং আমলের সংস্কৃতির বিত্তিতে অগ্রগতি লাভ করেছিল তার নিদর্শন আমরা তত্কালীন শিল্পসৃষ্টি এবং ঐ যুগে ব্যবহৃত লিপির আকৃতিতে দেখতে পাই । সাহিত্যের দৃষ্টিতে , "সঙ্গীত-কাব্য গ্রস্থ" এবং "ঐতিহাসিক গ্রস্থে" উল্লিখিত রাজকীয় হুকুমনামা ও উপাখ্যান বর্ণনার ভাষা শাং আমলের তুলনায় উন্নত ছিল । পশ্চিম চৌ বংশের শেষার্ধের কয়েক শত খোদিত তাম্রলিপি আজও বিদ্যমান আছে । প্রাকৃতিক ও অতিপ্রাকৃত শক্তির প্রতি চৌ-বাসীদের ধারণা শাং-বাসীদের চেয়েও অপেক্ষাকৃত স্পষ্ট এবং সুসম্বদ্ধ ছিল ।

    পশ্চিম চৌ গোষ্ঠীর শেষ শাসক ছিলেন রাজা ইয়ৌ । পশ্চিমাঞ্চলের ছ্যুয়ান রোং নামক এক উপজাতির হাতে তিনি নিহত হলে তাঁর পুত্র রাজা ফিং খৃঃ পূঃ ৭৭০ সালে হাওচিং-এর পূর্বদিকে অবস্থিত লুও-ই(বর্তমানকালের হোনান প্রদেশের অন্তর্গত লুওইয়াং ) নামক স্থানে তাঁর রাজধানী স্থানান্তরিত করেন । ঐ সময় থেকে শুরু হয় পূর্ব চৌ বংশের শাসনকাল । খৃঃ পূঃ ২২১ সালের মধ্যবর্তী সময় "যুদ্ধতর রাজ্যসমূহের সময়পর্ব" নামে খ্যাত । পূর্ব চৌ-এর পাঁচ শত বছর শাসনকালে চীনা সংস্কৃতি যথেষ্ট অগ্রগতি এবং অত্যুত্তম সাফল্য অর্জন করে ।