v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-01-31 16:04:46    
স্বতন্ত্র বিবাহ-প্রথ

cri
    চীনে পঞ্চাশাটিরও বেশী জাতি আছে। ঐতিহাসিক কারণে চীনের প্রত্যকটি জাতির আছে স্বতন্ত্র বিবাহ-প্রথা।

    চীনের কুইচৌ প্রদেশের মিয়াও জাতি অধ্যুষিত অঞ্চলে কন্যাকে পথ বাধা দেয়ার প্রথা প্রচলিত। কোনো গ্রামের মেয়ের বিয়ে হলে বর আর আত্মীয়-স্বজন মেয়েটির বাড়িতে আসে। কন্যাকে নিয়ে বরযাত্রীরা যখন গ্রাম থেকে বেরিয়ে আসে তখন গ্রামের ছেলেরা তাদের পথে কাঁটার বেড়া তৈরী করে। কাঁটার বেড়ার সামনে একটি টেবিলের উপরে মদের পেয়ালা আর মদের পাত্র রাখা হয়। ছেলেরা কাঁটার বেড়ার উপর হাত পেতে কন্যাকে কিছু পয়সা দিতে অনুরোধ করে। তারা লুসেন নামক বাদ্যযন্ত্র বাজাতে বাজাতে পাহাড়ী গানও গায় যাতে কন্যা স্বামীর বাড়ি গিয়েও পাড়া পড়শীদের কথা না ভুলে। কন্যা তাদের কিছু পয়সা দিলে ছেলেরা গান গাইতে গাইতে কন্যাকে মদ খাওয়ায় এবং কাঁটার বেড়ার তিংগিয়ে কন্যাকে দেয়া বরের উপহার সামগ্রী কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তখন কন্যাকে গান গেয়ে গেয়ে তাদের পথ দেড়ে দিতে অনুরোধ করতে হয়। ছেলেরা অন্তুষ্ট হলে কাঁটার বেড়া সরিয়ে দেয় এবং গান গাইতে কন্যাকে বিদায় জানায়।

                  মিয়াও জাতি                            

 মিয়াও জাতির কন্যার চেয়ে উত্তর চীনের কাজাক জাতির কন্যার উদ্যাগ বেশী। বিবাহ অনুষ্ঠান শুরু হলে সুন্দর পোষাক পরিহিত বর-কন্যা ঘোড়ায় চড়ে ছুটতে থাকে। কন্যা ঘোড়া ছুটিয়ে বরের কাছে গিয়ে চাবুক দিয়ে বরকে মারতে পারে। বর শুধু পালাতে পারে। সাধারণত কন্যা জোরে কশাঘাত করে না।

    চীনের ইয়ুননান প্রদেশে সাতাশটি সংখ্যালঘু জাতি আছে। অনেক জাতির বিবাহ-প্রথা পানির সংগে জড়িত। ঈ জাতির লোকেরা মনে করে, স্বচ্ছ পানি দিয়ে সুখস্বাচ্ছন্দ্যের পথের অমংগল ধুয়ে নেয়া যায়। কাজেই বর যাত্রী দল কন্যার গ্রামের মাথায় আসতেই কন্যার গ্রামের মেয়েরা বালতি আর কলসি ব্যবহার করে তাদের গায়ে পানি ঢেলে দেয়। ছেলেরা গ্রামের ভিতরে ছুটতে ছুটতে পথের দু'ধারে রাখা অনেকগুলো বালতির পানি মাটিতে ঢেলে দেয়ভ হাসাহাসির আনন্দমুখর পরিবেশে বরযাত্রীরা কন্যার বাড়িতে প্রবেশ করে।

                                                                                হুইগুর জাতি

    উত্তর চীনের হেই লং জিয়াং তাউর জাতির কোনো মেয়ের বিয়ে স্থলে তার বাবামা ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে কন্যা আর পণ-সামগ্রি নিয়ে বরের বাড়িতে যায়, মন্দির বা বড় গাঝ দেখলে মন্দিরের দরজায় আর গাছের ডালে লাল ফিতা বেঁধে রাখতে হয়। ঘোড়ার গাড়িটা বরের বাড়ির আংগিনার বাম দিক থেকে দক্ষিণ দিকে এক পাক ঘেরাতে হয় এবং দক্ষিণ পশ্চিম দিকে থামতে হয়। তারপর বর কন্যা আনতে হয়ে পরস্পরকে শ্রদ্ধা জানায়। বর-কন্যা বাসর ঘরে প্রবেশ করতেই কেউ কেউ কন্যার গায়ে ধান বা গম ছিটিয়ে দেয় , কেউ কেউ বা কন্যার মুখের সামনে আয়না ধরে রাখে। এ সব করার উদ্দেশ্যে হচ্ছে অমংগল দূর করা। বর কন্যার লাল পর্দা সরিয়ে দেয়ার পর বরের দিদি বা ভাবী কন্যার চুল আঁচড়ে দেয়।

   

তাই জাতি

চীনের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলে আর তৃণভূমিতে ঘোড়া সংখ্যালঘু জাতির প্রধান বাহন। সুতরাং ঘোড়াদৌড়ের প্রতিযোগিতা বিবাহ অনুষ্ঠানের একটি অপরিবার্য্য অংগ। চীনের উত্তরাঞ্চলের এ লুন ছুন জাতির বিয়ের অনুষ্ঠানে বরের বাড়ির আর কন্যার বাড়ির ঘোড়সওয়াররা ঘোড়দৌড়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বর পক্ষের ঘোড়সওয়াররা সাধারণত প্রথমে লক্ষ্যস্থলে পৌঁছানোর জন্য প্রাণপনে ঘোড়া ছুটায়। কন্যা পক্ষের ঘোড়সওয়াররা সাধারণত পিছনে পিছনে ঘোড়া ছুটিয়ে বরপক্ষকে নিজেদের মুখ উজ্জ্বল করার সুযোগ দেয়।

    পশ্চিম চীনের পামির মালভূমিতে তাজিক জাতির বিয়ের অনুষ্ঠান তিনদিন ধরে চলে। প্রথম দিন, বর কন্যা যার বাড়িতে থাকে, আত্মীয়স্বজনরা গেয়েনেচে তাদের অভিনন্দন জানায়। দ্বিতীয় দিন, ভেড়াকে ছিনিয়ে নেয়া আর ঘোড়দৌড়ের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর পর মাথায় হলুদ আর সাদা

 তিব্বতী জাতি

রঙের পাগড়ি জড়ায়। কন্যা হলুদ আর সাদা রঙের রুমাল-বাঁধা-আংটি পরে। সাদা রঙ দুধের প্রতীক আর হলুদ রঙ ঘিয়ের প্রতীক। দুই রঙ মেশানোর মানে বর কন্যার সুখশান্তি। বর কন্যাকে আনতে শ্বশুর বাড়িতে যায়, বর কন্যা পরস্পরকে উপহার সামগ্রিদেওয়ার পর নিকা নামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠিত হয়। তৃতীয় দিন, বর কন্যা একই ঘোড়ায় চড়ে বরের বাড়িতে ফিরে যায়। কন্যার বাড়ি থেকে উপহার সামগ্রি আর খাবার এলে বর কন্যাকে নিয়ে আবার শ্বশুর বাড়িতে যায়। তার পর কন্যা সুখের পর্দা সরিয়ে স্বাভাবিক দাম্পত্যজীবন শুরু করতে পারে।

    পশ্চিম চীনের তিব্বত মালভূমিতে তিব্বতী জনগণের বিবাহ-প্রথারও নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে। বরযাত্রী একটা গর্ভবতী ঘোড়া নিয়ে কন্যার বাড়িতে গিয়ে প্রথমে কন্যার পিঠের কাপড়ের ভিতরে একটি রংগিন তীর ঢুকিয়ে দেয়, এর মানে হলো, কন্যা বরের স্ত্রী হলো। কন্যাকে ঘোড়ার উপরে বসিয়ে বরযাত্রীরা গান গাইতে গাইতে ফিরে যায় কন্যা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে। বরের বাড়িতে পৌঁছুলে বরের বাবামা প্রত্যক অথিতিকে একটি করে সারা রঙের রেশমী রুমাল উপহার দেয়। বর কন্যাও বাবামাকে সাদা রঙের রেশমী রুমাল উপহার দেয়। বিয়ের ভোজ চলে সাধারণত তিন দিন ধরে।