যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষের চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন ঘটছে দুর্বার গতিতে। তাই মানুষ আজ ছোট্ট কুটিরে আবদ্ধ না থেকে বরং এই বিশাল পৃথিবীর কোথায় কি ঘটছে, কেন ঘটছে এ সব জেনে তার আপন বুদ্ধির বিকাশ ঘটাতে এগিয়ে এসেছে অতীতের স্মৃতিকে পিছনে ফেলে। এ সব চিন্তা করেই সি আর আই এর সঙ্গে নিজেকে উন্নয়ন। সিআরআই যে ডাকে আমার দায়বদ্ধতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে সে ডাকে সাড়া না দিয়ে পারা যায় না।
এ বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। এই নারী সুষমা লক্ষী, কখনো কন্যা, কখনো স্ত্রী, কখনো বা জননী রূপে সঞ্চরন করছেন। চীনের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে চীনের নারীরা যে অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন তা থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের নারী গোষ্ঠী শিক্ষা নিয়ে তারাও নিজ নিজ দেশের সর্বক্ষেত্রে উন্নয়নের বিপ্লব ঘটাতে ব্রতী হচ্ছেন। কন্যা জায়া জননী অনুষ্ঠানটি আমাদের মত দরিদ্র দেশের নারী সমাজের জন্য গাইড, ফ্রেন্ড এ্যান্ড ফিলোসোফার। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের দেশের নারীরা চীনা নারীদের সাথে সুখ-দুঃখ, প্রেম-ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন সহমর্মিতায়।
সি আর আই বাংলা বিভাগে বর্তমান অর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে তথা অবকাঠামোর শিশু শ্রম বন্ধের উপায় বিষয়ক কোন অনুষ্ঠান নেই। প্রাণী জগতে প্রতিটি জাতির অবয়বে তাদের বংশধররা জন্ম লাভ করে জাতিগত আচরণ লাভ করে। মানব শিশুই মানবের তৈরী সামাজিক যাদুস্পর্শে কেউ সুখী আর কেউ আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত অবস্থায় পেট নামক রাক্ষসের তৃপ্তির তাগিদে শিশু কাল হতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে মরছে। শিশু শ্রম প্রথা বন্ধ-কল্পে ধারাবাহিক অনুষ্ঠান প্রচার অত্যাবশ্যক বলে মনে করি। যাতে থাকবে কে বা কারা এগিয়ে আসলে শিশুদের দুর্বিসহ জীবন ব্যবস্থার অবসানের মাধ্যমে ধুলীর ধরণীতে স্বর্গীয় পরিবেশ ফিরে আসবে। শিশু শ্রমিকের বাস্তব অভিজ্ঞতাভিত্তিক সাক্ষাত্কার এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পরামর্শমূলক অনুষ্ঠান শ্রোতাদের আকৃষ্ট করবে।
চীন ও বাংলাদেশের অর্থনীতির "অতীত-বর্তমান এবং ভবিষ্যত্" শিরোনামে ধারাবাহিক অনুষ্ঠান করুন । স্বাধীনতা অর্জনের ৩৩ বছর পরেও কৃষি, শিল্প, ব্যবসা বানিজ্য এবং অন্যান্য খাতে ব্যাপক বৈদেশিক সাহায্য সহযোগিতা সত্ত্বেও সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য উত্পাদন বৃদ্ধির অভাব কেন? বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে চীনের অগ্রগতি ও সফলতার কারণগুলো কি? এ সব প্রশ্নের যথাযথ উত্তরের উপর দেশী-বিদেশী অর্থনীতিবিদ, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী আর নীতি নির্ধারনকারী পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত্কারের আলোকে রচিত হবে অনুষ্ঠানটি।
সি আর আই এবং আমার যোগসুত্র ও ঘনিষ্ঠতা লিখার মাধ্যমে প্রকাশ করা অত্যন্ত দুরুহ । তবে যদি বলি সি আর আই এর সঙ্গে আমার দেহ-মন আষ্টে-পৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছে তাহলে কোন ক্রমেই ভুল বলা হবে না। সেই ১৯৮৮ সাল থেকে সি আর আই ও বেতার কর্মিদের সাথে আজ পর্যন্ত মৈত্রির বন্ধনে জড়িয়ে রয়েছি। ১৯৯৭ সালে সি আর আই রচনা প্রতিযোগিতার তৃতীয় শ্রেণীর পুরস্কার, ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস হতে গ্রহণ, সৌহার্দপূর্ণ ও বন্ধুভাবাপন্ন চীনাদের সাথে মত বিনিময় এবং আন্তরিকতাপূর্ণ আতিথেয়তা চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। জীবনের নানান উত্থান-পতনের মাঝে বর্তমানে আমি কর্মময় জীবনের সাথে থিতিয়ে গেছি। মোট কথা তখনকার আমি আর এখনকার আমার মধ্যে ব্যাপক ব্যবধান। এত কিছুর পরেও সি আর আই এর সঙ্গে আমার মৈত্রীর বাধনের শক্ত গিরোটি এতটুকু আলগা হয় নি। বরং জীবনের নানা টানা পোড়নে তা আরো মজবুত হয়েছে।
মোঃ বাবুল হোসেন
প্রধান শিক্ষক, পচামাড়িয়া গার্লস স্কুল
রাজশাহী, বাংলাদেশ
|