v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-01-24 11:01:32    
আফেন্দীর গল্প

cri
    আফেন্দীর বাড়ির কাছেই একটা লোক থাকতো।তার রসবোধ ছিল একটু উত্কট ধরনের।একদিন ভোর না-হতেই সে আফেন্দির বাড়ির সামনে এসে দুমদুম করে তার দরজা পিটতে লাগলো।প্রচন্ড আফেন্দির ঘুম ভেংগে গেল।উঠে দরজা খুলে আফেন্দি দেখলো,তার প্রতিবেশী চিন্তিতভাবে দাঁড়িয়ে আছে।আফেন্দি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো " কী হয়েছে?এই সাতসকালে আমার সূখনিদ্রাটার দফা রফা করেছে কেন?"আফেন্দির রসিক প্রতিবেশী খুবই বিপন্ন ভাব করে বললো "আরে ভাই,মহা বিপদ!রাত্রে আমিও তো বিভোর হয়ে হা করে ঘুমুচ্ছিলাম হঠাত্ কোথা থেকে একটা ইঁদুর বিনা এত্তেলায় ঝাঁপ দিয়ে পড়লো আমার হা-করা মুখের মধ্যে।আমি ব্যাপারটা সমঝে উঠতে পারার আগে হতচ্ছাড়া আমার পেটে গিয়ে সোঁধিয়েছে।বলো তো আফেন্দী,এখন করি কী!ইঁদুরটা যে আমার পেটের মধ্যে মহা ঝামেলা লাগিয়েছে!"

    আফেন্দি বললো "কী আর করবে--একটাই তো উপায়!আবার হা করো,তারপর তাগড়া দেখে একটা জ্যান্তো বেড়াল গিলে ফ্যালো!ইঁদুরের জারিজুরী এখন আর কতোক্ষণ টিকবে!"এই বলে আফেন্দি দড়াম করে দরজা বন্ধ করে দিল।

    একদিন এক কৃপন লোক "আফেন্দিকে জিজ্ঞেস করল:আফেন্দি,টাকা-পয়সা তো তোমারও ভালো লাগে,তাই না?"আফেন্দী সঙ্গে সঙ্গে মাথা হেলিয়ে বলল, "হ্যা,নিশ্চয়ই ভাল লাগে"।

    কৃপন লোকটা প্রশ্ন করলো, "কেন?"আফেন্দী বললো, "কেন আর!টাকাপয়সা থাকলে আমি আর কিপ্টে লোকের সামনে দাঁড়িয়ে লজ্জা পাবে না।আসলে আমিও তো তখন বেহায়া হয়ে যাবে"।

    আফেন্দীর এক বন্ধ এক দিন আফেন্দীর সঙ্গে দেখা করতে তার বাড়ীতে এলো।আফেন্দী তখন বাড়ীতে নেই।বন্ধ দরজাটা দেখে আফেন্দির বন্ধুর একটু রসিকতা করার ইচ্ছা হোলো।দরজার ওপর সে বেশ গোটা গোটা করে লিখলো "গাধা"।তার পর ফিরে গেল।পরদিন রাস্তায় আফেন্দির সঙ্গে তার বন্ধুর দেখা।আফেন্দি বললো: "গতকাল সন্ধ্যেবেলা তুমি আমার বাড়ীতে এসেছিলে,কিন্তু সে সময়ে আমি বাইরে একটা জরুরী কাজে আটকে পড়ছিলাম।কিছু মনে করো না যেন"।বন্ধু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো: "তুমি কি করে জানলে আমিই তোমার বাগীতে গিয়েছিলাম?"আফেন্দি বললো: "কেন?আমার দরজার ওপরই তো তুমি তোমার নাম লিখে রেখে এসেছো!"

    আফেন্দি আর তার অনেক ইয়ার-দোস্ত ঘোড়ায় চড়ে বেড়াতে বেরিয়েছিল।অন্ধকার নেয়ে আসতে সবাই ঠিক করলো রাতটা কোথাও কাটিয়ে পরদিন যাত্রা শুরু করা যাবে।সব ক'টা ঘোড়া এক সঙ্গে বেঁধে রেখে সবাই গেল ঘুমোতে।পরদিন সকালে উঠে আফেন্দি দেখলো,বেঁধে-রাখা ঘোড়ার পালের মধ্যে কোন ঘোড়া-যে তার,তা সে চিনতেই পারছে না।আফেন্দি বুঝলো যে,এ কথা যদি ফাঁস হয়ে পড়ে,তা তার রসিক বন্ধুরা ঠান্ট মস্করা করে নাজেহাল করে ফেলবে।একটু ভেবে আফেন্দি হঠাত্ রাইফেল হাতে তড়াক করে লাফিয়ে উঠলো,বন্ধুদের চীত্কার করে বললো "গুণে দেখলাম,আমাদের ঘোড়াগুলোর মধ্যে কোন্থেকে এক বেওয়ারিশ ঘোড়া এসে জুটেছে।আমি এক্ষুণী ওটাকে গুলি করে ফেলছি,সবাই মিলে বেশ মাংস খাওয়া যাবে"।আফেন্দি রাইফেলের টিপ-যে কী রকম,তা বন্ধুদের ভালোই জানা ছিল,তাই তারা শশব্যস্তে যে-যার ঘোড়া অন্য দিকে টেনে সরিয়ে নিয়ে গেল।কয়েক মুহুর্তের মধ্যে দেখা গেল বাকি একটাই ঘোড়া এখন দাঁড়িয়ে আছে।আফেন্দি তখন রাইফেন রেফে ধীরে সুস্থ তার ঘোড়াটার পিঠে জিন চাপাতে লাগলো।

    দুই গাধার বোঝা নামে আরএকটি গল্প।এটি শেখ সাদীর বিখ্যাত গুলিপ্তা বইতেও বিখ্যাত হয়ে লেছে।

    এক দিন রাজা আর মন্ত্রী শিকারে গেছেন।সঙ্গে আফেন্দি।রোদের মধ্যে হাঁটতে রাজা আর মন্ত্রী লাগলেন।দুজনেই তাদের ওভারকোট খুলে আফেন্দিকে দিলেন।আফেন্দি ওভারকোট-দুটো কাঁধে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে হাঁটতে লাগলো।

    কিছুক্ষণ পর রাজা আফেন্দিকে উপহাস করে বললেন "কী হে আফেন্দি,তুমি দেখছি খুব কাজের লোক,এক-গাধার বোঝা বেশ অনায়াসেই বইতে পারছো"।

    একথা শুনে আফেন্দির বেশ রাগ হোলো,কিন্তু শান্তভাবেই সে বললো, "না হুজুর,এক গাধার বোঝা নয়,দুই গাধার বোঝা"।