চীনে চান্দ্রবর্ষের দ্বাদশ মাসকে লা মাসও বলা হয় । তাই দ্বাদশ চান্দ্রমাসের আট তারিখকে লাবা উত্সব হিসেবে লাবা উত্সবের ইতিহাস বেশ পুরোনো । পন্চম শতাব্দীতে দক্ষিণ ও উত্তর রাজবংশের আমলেই দ্বাদশ চান্দ্রমাসের আট তারিখকে লাবা উত্সব হিসেবে ধার্য করা হয়েছে ।
পুরোনো পেইচিংবাসীরা বরাবরই লাবাকে বসন্ত উত্সবের আগমনের সংকেত হিসেবে গণ্য কে এসেছেন । এই দিন পরিবারে পরিবারে লাবা মণ্ড খাওয়া হয়।
লাবা জাই-এর উত্পত্তি সম্পর্কে অনেক কিংবদন্তী আছে । এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী প্রচলিত কিংবদন্তটি অনুসারে , প্রাচীন ভারতের রাজকুমার চোতামো সিতাতো লোকালয়ের জন্ম, জরা , অসুখবিসুখ ও মৃত্যুর দুঃখকষ্ট মর্মে মর্মে অনুভব করে এ থেকে মুক্তির পথ অন্বেষণের জন্যে সিংহাসনের আশা ছেড়ে বিচক্ষণ ব্যক্তিদের সংগে দেখা সাক্ষাত্ করতে ভারতের বিখ্যাত বিখ্যাত পাহাড়পর্বত ও বড় বড় নদনদী ভ্রমণ করেছিলেন । দ্বাদশ চান্দ্রমাসের আট তারিখে নিলি নদীর তীরে পোঁছে ক্ষুধায় ও ক্লান্তিতে তিনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন । একজন রাখাল বালিকা তাকে বাঁচিয়েছিলেন এবং তার সংগে নিয়ে আসা মোটা খাদ্যশস্য এবং কিছু বুনো ফলমূল ও ঝরণার পানি দিয়ে মণ্ড রান্না করে তাকে খাইয়েছিলেন । রাজকুমার জেগে উঠে বেশ তেজস্বী অনুভব করেন এবং পূর্ণ ।উপলব্ধি লাভ কের সাক্যমুনিতে পরিণত হন । এরপর বোদ্ধধর্মাবলম্বীরা লাবাকে "দেবত্ব লাভের উত্সব" বলে ডাকেন । চীনে বোদ্ধধর্ম ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতি চানদ্রবর্ষের দ্বাদশ মাসের আট তারিখ বিভিন্ন বোদ্ধমন্দির চাল আর শুকনো ফলমূল দিয়ে মণ্ড রান্না করে বোদ্ধমূর্তির উপাসনা করে থাকে । জনসাধারণও এর অনুকরণ করে থাকেন । সামন্ততান্ত্রিক যুগে সমাটরা লাবা উত্সবের সময়ে লাবা মণ্ড দিয়ে সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের পুরস্কৃতও করতেন ।
জনসাধারণ লাবা জাউ তৈরী করে প্রথমে বোদ্ধমূর্তি ও পূর্বপুরুষদের উপাসনা করেন , তারপর আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও পাড়াপড়শীদের মধ্যে পরস্পরকে উপহার দের এবং অবশেষে নিজেরা উপভোগ করেন ।
লাবা জাউ বিভিন্ন রকমের এবং খুবই সুস্বাদু
লাবা উত্সবের সময়ে লাবা জাউ তৈরী করার অভ্যাস ছাড়াও উত্তরচীনের জনসাধারণের মধ্যে কলসীতে চালের তৈরী সিরকা ঢেলে রসুন জারিত করার অভ্যাসও আছে ।
|