এখন চীনে আন্টিবাইয়টিক্স কিনতে ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্রের দরকার । এই নিয়মবিধির প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্টিবাইয়টিক্সের অপব্যবহার রোধ করা এবং ওষুধ ব্যবহারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা । তাহলে প্রশ্ন জাগে , কোন্ ধরণের ওষুধ হচ্ছে আন্টিবাইয়টিক্স ? আন্টিবাইয়টিক্সের অপব্যবহারের ক্ষতি কি ? এবং আন্টিবাইয়টিক্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে কি কি ভুল ধারণা আছে ? এই সব প্রশ্ন নিয়ে আমাদের সংবাদদাতা চীনের আনসান শহরের ওষুধ তত্ত্বাবধান ব্যুরোর বাজার বিভাগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির একটি সাক্ষাত্কার নিয়েছেন ।
জানা গেছে , আন্টিবাইয়টিক্স বলতে সাধারণত: রোগের জীবানুকে মেরে ফেলতে বা রোগের জীবানুর সক্রিয়তা রোধ করতে সক্ষম ওষুধপত্রকে বোঝায় ।বিভিন্ন ধরণের আন্টিবাইয়টিক , সাল্ফা ড্রাগ্স ইত্যাদি কেমোসিনথেসিস ওষুধ এর অন্তর্ভুক্ত। নাগরিকদের অতিপরিচিত সেফালোথিন,এরিথ্রোমাইসিন ইত্যাদি সবই আন্টিবাইয়টিক্সের অন্তর্ভুক্ত। সাধারণভাবে বলতে গেলে আণ্টিবাইয়টিক্সের অপব্যবহারের ফলে মানুষের দেহে ওষুধ সহিষ্ণু জীবানু বাড়ে ।ফলে বিষক্রিয়া, এনাফাইল্যাক্টিস প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি অশুভ প্রতিক্রিয়া বাড়ে এবং দ্বিগুন রোগ সংক্রমনের সুযোগ বাড়ে । যার ফলশ্রুতিতে রোগীরা প্রায়ই সময়মত সঠিক চিকিত্সার সুযোগ হারায় ।
এখন অনেক পরিবার ছোট ওষুধের বাক্স রাখে । কিন্তু আন্টিবাইয়টিক্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে । যেমন ধরা যাক , অনেকে মনে করেন , ওষুধ যত বেশী দামী ততই ভালো , সস্তা ওষুধ ভালো হতে পারে না । কিন্তু সঠিক ওষুধ ব্যবহার করলে সাত আট টাকা দামের ওষুধও ঠিকমত রোগ সারাতে পারে । আন্টিবাইয়টিক্সের অপব্যবহারের প্রবণতা খুবই বেশী দেখা যায় । অনেকে সর্দি সারানোর জন্য আন্টিবাইয়টিক্স ব্যবহার করেন । যদিও আন্টিবাইয়টিক্স রোগজীবানু প্রতিরোধ করতে পারে , কিন্তু রোগের ভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে না । অথচ বেশীর ভাগ সর্দি হয় রোগের ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে । ওষুধের যথেচ্ছ অপব্যবহার শুধু পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াই বাড়াতে পারে । ফলে জীবানু ওষুধ সহিষ্ণুতার গুণ পায় । অনেকে গুরুতরভাবে রোগাক্রান্ত হওয়ার সময়ই শুধু যথাসময়ে ও পরিমাণমত ওষুধ খান , কিন্ত্ত রোগের অবস্থা একটু প্রশমিত হলেই আর সময়মত ও পরিমাণমত খান না । জানতে হবে , আন্টিবাইয়টিক্সের কার্যকরিতা রক্তে ওষুধের কার্যকর ঘনত্বের উপর নির্ভরশীল । রক্তে ওষুধের কার্যকর ঘনত্ব না হলে তা শুধু যে জীবানুকে পুরোপরি মেরে ফেলতে পারে না তাই নয় , বরং জীবানুকে ওষুধ সহিষ্ণু হতে সাহায্য করে। আবার অনেকে মনে করেন , আন্টিবাইয়টিক্স মাত্রেই প্রদাহ কমাতে পারে । যততাড়াতাড়ি সম্ভব আরোগ্য লাভের আশায় তারা এমন কি একই সময় কয়েক ধরণের আন্টিবাইয়টিক্স ব্যবহার করেন । তারা জানেন না, প্রতিটি আন্টিবাইয়টিকের জীবানু প্রতিরোধের বর্ণালী ভিন্ন। সঠিকভাবে ওষুধ ব্যবহার না করলে, অনুপাত কম হলে চিকিত্সার আশানুরুপ ফল পাওয়া যায় না এবং অতিরিক্ত হলে ওষুধের বিষক্রিয়া ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বাড়ে এবং স্বাস্থ্যের ক্ষতির আশংকা দেখা দেয় ।
আন্টিবাইয়টিক্স খাওয়ার সময়টাও গুরুত্বপূর্ণ । তা সরাসরি ওষুধের কার্যকরিতার সংগে সম্পর্কিত। মৌখিক আন্টিবাইয়টিক্স সাধারণত: আহারের এক ঘন্টা আগে বা আহারের দুই ঘন্টা পরে খাওয়া উচিত । অবশ্য টেট্রাসাইক্লিন রিফামপিন ইত্যাদি খালি পেটেও খাওয়া যায় । তা ছাড়া কোনো কোনো আন্টিবাইয়টিক খেলে পাকস্থলী ও অন্ত্রের প্রতিক্রিয়া, আমাশয় ইত্যাদি প্রবনতা দেখা দিতে পারে । এই প্রবনতা দেখা দেয়ার সংগে সংগেই এই ওষুধ খাওয়া বন্ধ করতে হয় ।
|