v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-01-07 14:26:14    
CRI এবং আমার স্বর্ণ মুহূর্ত

cri
    এই পার্থিব জগতে মনের তন্ত্রীতে কত কিছু ঘটে থাকে জীবনে, কিন্তু সব ঘটনাতো আর মনের গহ্বরে বা হৃদয়ে সঞ্চিতহয়ে থাকে না, থাকে সেই সব ঘটনা বা বিষয় যেগুলি জীবনে বাস্তব চিত্রের আমুল পরিবর্তন নিয়ে আসে। কিংবা কোন পরম আনন্দের অথবা চরম দুঃখ বেদনার ক্ষেত্রগুলিমনের স্বর্ণ-সিংহাসনে চিরকাল স্থান করে নেয়। আমার ডি-এক্সিং জীবনের পরম মুহূর্তটি আমার চলার পথে অভূতপুর্ব সাড়া জাগিয়েছে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান।

    আমার প্রধান প্রধান কয়েকটি সখের মধ্যে অবশ্যই শ্রেষ্ঠ হলো ডি-এক্সিং। ১৯৮৭ সালের জুলাই মাসের কোন এক দিন। গুমট আবহাওয়া, তার মধ্যে হালকা হাওয়ার মৃদু প্রলেপ। রেডিও নিয়ে বসে আছি। রাত ৮:৩০ মিনিট। রেডিওর নব ঘোরাতে ঘোরাতে ভেসে এলো রেডিও পেইচিংয়ের মিস্টি মধুর, ভাষার ছন্দ মেশানো , কোকিল কন্ঠ। সেই দিনই প্রশ্ন উত্তর অনুষ্ঠানে আমার চিঠি স্থান পেল। আজও ভুলতে পারি না সেই বিশেষ মুহূর্তটি। আমার ডি-এক্সিং জীবনের নতুন দিগন্ত খুলে দিল আজকের চীন আন্তর্জাতিক বেতার। সেই দিন মনের মধ্যে কি রকম অনুভূতি, আবেগের উচ্ছ্বাস হয়েছিল তা ভাষায় প্রকাশ করা দুরূহ। বিশ্বের অন্যান্য বেতার থেকে উল্লেখযোগ্য সাড়া পাচ্ছিলাম না, তখন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানের কাছ থেকে জীবনের চলার পথের বাস্তব দিকগুলির নির্দেশনা পেয়ে মনের মধ্যে এক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। আমি তখন থেকে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ি। শুধু দুর্বল হয়ে পড়েছি তাই নয়, চীন বেতারের সঙ্গে গভীর ভালোবাসায় আবদ্ধ হয়ে পড়েছি। এর কারণ উল্লেখ্য করতে গিয়ে বহু কথাই উল্লেখ করতে হয়। সবগুলি প্রতি আলোকপাত না করে কয়েকটি উল্লেখ করলেই যথেষ্ট।

    ক) সি আর আই এর সংবাদ ও অন্যান্য পরিবেশনাগুলির সত্যতা, নিরপেক্ষতা, বস্তুনিষ্ঠতা আছে।

    খ) শ্রোতাদের চাহিদার প্রতি দৃষ্টি রেখে অনুষ্ঠান প্রচার করার ফলে শ্রোতাদের জ্ঞানের ভান্ডারের শ্রীবৃদ্ধি হচ্ছে।

    গ) প্রত্যেক শ্রোতাকে সমান গুরুত্ব দেওয়া । এটা সি আর আই বাংলা অনুষ্ঠানের একটি মৌলিক বৈশিষ্ট। এমনই সময়ে চীন বেতারের সঙ্গে আমার নিগুঢ় সম্পর্ক স্থাপন করে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি।

    ঘ) প্রতি বছর জ্ঞান যাচাইমুলক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে শ্রোতাদের বিনা খরচে চীন ভ্রমনের সুযোগ দেওয়া। এর ফলে শ্রোতারা তাঁদের প্রিয় দেশকে ভালোভাবে জানতে পারে।

    ঙ) এক মাত্র সি আর আই ফেরত খাম প্রেরণ করে। এর ফলে শ্রোতারা সি আর আই বাংলা অনুষ্ঠানেচিঠি লিখতে উত্সাহিত হয়।

    চ) বর্তমানে প্রতি মাসে কুইজ প্রতিযোগিতা শ্রোতাদের নিয়মিত অনুষ্ঠান শুনতে উত্সাহ দেয়।

    ছ) সি আর আই বাংলা অনুষ্ঠানের কর্মকর্তাদের কোকিল কন্ঠও শ্রোতাদের বাড়তি আনন্দ দেয়। বাচন ভঙ্গি, আন্তরিকতায় সকল শ্রোতাই মুগ্ধ।

অনুষ্ঠান নিয়মিত শোনার মাধ্যমে বিশ্বের একটা চিত্র যেমন স্বচ্ছ কাঁচের মত মনের মধ্যে ভেসে ওঠে, বিশেষ করে প্রিয় চীন দেশের সম্পর্ক ধারণা লাভ করি, তেমনি নিজের জীবন গড়ার মৌলিক বা নৈতিক প্রেরণা পেয়ে চলেছি। দৃষ্টান্ত টেনে বলা যেতে পারে, "সংস্কৃতি সম্ভার, চলোনা ঘুরে আসি, ইতিহাসের অরণ্যে বিচরণ, রসনা বিলাস, ওরা অনন্য , সংগীতা, চাওয়া-পাওয়া, এসো চীনা শিখি, অন্তরংগ আলাপন, মুখোমুখি , সমাজ দর্পন" এই অনুষ্ঠানগুলি মানুষের নৈতিক চরিত্রের পরিবর্তনও উন্নয়নের মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচারের যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তার কোন তুলনাই হয় না।

    উপসংহারে এসে বলা যায়, অনুষ্ঠান শুনার অনুভুতি কি? অনুভুতি, সেতো অনুভব করার ব্যাপার, প্রকাশ করার ব্যাপার নয়। কিন্তু আমার স্বর্ণমুহূর্তটির কথা লিখতে বসে প্রকাশ না করে পারি না। অথচ প্রকাশ করার কোন ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। তবুও জানাতে হবে চীন বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান কেমন লাগে? আমার অনুভুতি কি? হ্যাঁ এক কথায় অপুর্ব অনন্য । দীর্ঘ ৩৬ বছরে ধরে সি আর আই বাংলা অনুষ্ঠান জ্ঞানের পরিধিকে শ্রোতাদের মধ্যে প্রসারিত করেছে যে ভাবে তা ভাবতে অবাক লাগে। গত ১৫ই জুলাই থেকে নতুন আঙ্গিকের বর্ধিত অনুষ্ঠানের দ্বারা আমরা বা শ্রোতারা নানা ভাবে উপকৃত হচ্ছি। চীন আন্তর্জাতিক বেতার থেকে কখনো পেয়েছি দুঃখে সান্তনার প্রলেপ, কখনো পেয়েছি বিপদে পরামর্শ। এক কথায় চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান হলো আমার ফ্রেন্ড, ফিলোসফার এ্যান্ড গাইড। আমার বিশ্বাস, সি আর আই আগামী প্রজন্মের শ্রোতাদের কাছে আরো বেশি প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবে। আমার ক্লাবের সদস্যদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাই।

    মোঃ আশরাফুল হক, সভাপতি

    ওয়ার্ল্ড রেডিও টি.ভি. লিসনার্স সেন্টার এ্যান্ড লাইব্রেরী

    মুর্শিদাবাদ জেলা, পশ্চিম বঙ্গ, ভারত