v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-01-04 15:08:20    
তিব্বতে গিয়ে তিব্বতী সংস্কৃতির সংগে পরিচিত হোন

cri
    যারা প্রথম তিব্বতে ভ্রমন করতে যান তারা স্বাভাবিকভাবে তিব্বতের প্রাকৃতির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন । তবে তিব্বতে ভ্রমনের সময়ে আমার মনে হয় , প্রাকৃতির সৌন্দর্যের চেয়ে তিব্বতীদের জীবন ও তিব্বতী সংস্কৃতি আরো বেশী মনোমুগ্ধকর ।

    ভোরে যখন সুর্য ধীরে ধীরে আকাশে উঠে , তখন আপনি সম্ভবতঃ ভ্রমর-গুঞ্জনের মত এক আওয়াজে ঘুম থেকে জেগে উঠবেন । সেই আওয়াজ দুর থেকে শোনা যায় , আবার আস্তে আস্তে মিলিয়ে যায় । সেই আওয়াজের মধ্যে ধাতু ধাক্কা লাগার শব্দ মিশে থাকায় তা বেশ শ্রুতিমধুর । জানালা খুলে চোখে পড়বে , তিব্বতী পোষাক পরিহিত নারী পুরুষ , বৃদ্ধবৃদ্ধা আর ছেলেমেয়েরা দলে দলে জানালার সামনে দিয়ে তীর্থের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন , তাঁরা পিতলের চক্র ঘুরাতে ঘুরাতে গদগদ করে স্তোত্র ও পড়ছেন ।

    এই সব তীর্থযাত্রী তিব্বতের বৌদ্ধধর্মাবলম্বি , তিব্বতে অধিকাংশ মানুষই বৌদ্ধধর্মেই বিশ্বাস করেন । খ্রীষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে বৌদ্ধধর্ম চীনের মুলভুভাগ , নেপাল আর ভারত থেকে তিব্বতে প্রসারিত হয় এবং স্থানীয় বোন ধর্মের সংগে মিলে ধাপে ধাপে বৌদ্ধধর্মের একটি গুরুত্বপুর্ণ শাখায় পরিণত হয় । তিব্বতী বৌদ্ধধর্মই তিব্বতী জনসাধারনের প্রধান ধর্ম ।

    তিব্বতে ভ্রমনের সময়ে মাঝেমাঝে স্তোত্র পড়ার আওয়াজ আপনার কানে আসে । এর একটি মাত্র শব্দ না বুঝলেও আত্মবিস্মৃত ভক্তদের মুখের শ্রদ্ধাপ্লুত ভাব দেখে আপনি মুগ্ধ হবেন ।

    গেসার রাজার জীবনী তিব্বতের সবচেয়ে বিখ্যাত মহাকাব্য এবং পৃথিবীর বৃহতম মহাকাব্য । রুপকথায় গেসার একজন দেবতা , দৈত্য দানব পরাস্ত করতে মানবজাতিকে সাহায্য করার জন্য তিনি মর্ত্যে অবতারনা করেন । তিনি অত্যস্ত সাহসী , যুদ্ধ করতে পারদর্শী , তাঁর শক্তির অন্ত নেই । নিজের দায়িত্ব পালনের পর তিনি স্বর্গে ফিরে যান । গত বিশ তিরিশ বছরে মুখে মুখে প্রচলিত গেসার রাজার জীবনী লিখে রাখা এবং রিকর্ডিং করার জন্য চীন সরকার প্রচুর জনশক্তি ও বৈষয়িক শক্তি প্রয়োগ করেছে যাতে বিশ্বের এই সাংস্কৃতিক রত্ন বিলুপ্ত না হয় ।

    ওয়াংতুই লাসার পুদারা প্রাসাদের পাশের একটি বাড়িত বড় হয়েছেন । তিনি সাহিত্যের অনুরাগী , মাঝে মাঝে কবিতা আর গানের কথা লিখেন । গেসার রাজার জীবনীর প্রসংগ তোলা হলে তিনি কথাশিল্পীর মত অনর্গল বলতে লাগলেন ।

    গেসার রাজার জীবনী তিব্বতী জাতির বিশ্বকোষ , তার বহু অংশ তিব্বতীদের জনপ্রিয় লোকসংগীতের সাহায্য গাওয়া যায় । এই মহাকাব্যে প্রাচীনকালের তিব্বতীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান , সামরিক আর সামাজিক রীতি , বিবাহপ্রথা , এবং আচার ব্যবহার প্রতিফলিত হয়েছে । ছোটো বেলা থেকেই শিল্পীদের কন্ঠে গাওয়া গেসার রাজার জীবনী শুনতে আমার ভালোলাগে । শুধু তিব্বতীরা নয় , বিদেশীরাও গেসার রাজার জীবনী পড়তে পছন্দ করেন , জানা গেছে , গেসার রাজার জীবনী ইংরেজী , রাসিয়ান , ফরাসি , হিন্দী , ও মংগোলিয় ভাষায় অনুদিত হয়ে প্রকাশিত হয়েছে ।

    বাসাংরোপু তিব্বতের সমাজ বিজ্ঞান একাডেমির সংখ্যালঘু জাতি বিষয়ক গবেষনাগারের পরিচালক । বহু বছর ধরে তিনি তিব্বতের সংস্কৃতি নিয়ে গবেষনা চালিয়েছেন । তিনি বলেছেন : তিব্বতী জাতির সংস্কৃতির ইতিহাস সুদীর্ঘ এবং তা চীনা জাতির সাংস্কৃতিক ভান্ডারের একটি সুউজজ্বল মুক্তা । স্থানীয় বোন ধর্ম আর বৌদ্ধ ধর্ম আশ্রিত সংস্কৃতি ছাড়া তিব্বতী জাতির লোক কৃষ্টিও অত্যন্ত সমৃদ্ধ । তিব্বতী জাতির লোক সংগীত ও চিত্র অদ্বিতীয় , অন্যানা জাতির সংস্কৃতির সংগে তিব্বতী জাতির সংস্কৃতির আদান প্রদানও ব্যাপক তা তিব্বতের প্রাচীর চিত্রে প্রতিফলিত হয়েছে ।