v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2004-12-27 15:49:26    
উয়েনযৌ

cri
    চীনের জেচিয়াং প্রদেশ চীনের পূর্বাঞ্চলে উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত।চীনের কয়েকটি শিল্পোন্নত প্রদেশের মধ্যে সেচিয়াং প্রদেশ একটি।এই প্রদেশ শুধু যে অর্থনীতির দিক থেকে উন্নত তাই নয়, পর্যটকদর পক্ষে একটি আকর্ষণীয় জায়গা বলে গণ্য করা যায়। সেখারকার চিত্তাকর্ষক পরিবেশ , সুন্দর দৃশ্য, সাংস্কৃতিক আকর্ষণ এবং বৈচিত্রময়রীতিনীতি দেশি-বিদেশী পর্যটকদের আর্কষণ করে থাকে।

    উয়েনযৌ জেচিয়াং প্রদেশের একটি পুরনো বাণিজ্য শহর ।তার ইতিহাস ১৩০০ বছরের বেশী সময়ের।ইতিহাসে উয়েনযৌর অর্থনীতি চীনের অন্যান্য জায়গার চাইতে অপেক্ষাকৃত উন্নত। গত ২০ বছর ধরে , অর্থাতচীনের সংস্কার ও উন্মুক্ত নীতির কল্যাণে উয়েনযৌর লোকদের মেধা পুরোপুরি প্রকাশিত হয়েছে ।তারা ব্যবসার ক্ষেত্রে লক্ষ্যনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন।সেখানকার হস্তশিল্প সারা চীন দেশে সুনাম অর্জিত হয়েছে।চীনের বিভিন্ন জায়গায় উয়েনযৌর তৈরী পণ্যদ্রব্যপাওয়া যায়।যার ফলে উনযৌ চীনের সবচেয়ে সচ্ছল শহরগুলোর অন্যতম।

    উয়েনযৌ শহরের বড় রাস্তায় অথবা ছোট গলিতে হাঁটলে অজস্র বাণিজ্যিক সাইন-বোর্ড দৃষ্টিগোচর হয়।এ সব বাণিজ্যিক সাইন-বোর্ডথেকে লোকেরা সহজেই এই শহরের নিবিড় বাণিজ্যের পরিবেশ অনুভব করতে পারেন। চীনের অন্যান্য শহরের মতো অর্থনীতি বিকশিত হওয়ার পাশাপাশি উয়েনযৌ শহরের চেহারাও রাতারাতি বদলে যাচ্ছে।সারি সারি আকাশচুম্বী অট্রালিকা যেখানেসেখানে দেখা যায়, হাইওয়ে চার দিকে প্রলম্বিত হয়েছে ।ভিকটোরায়া হোটেল, সহস্রাব্দি চত্বর, উয়েনযৌ জাদুঘর ইত্যাদি ইত্যাদি অট্রালিকা শহরের শোভা বাড়িয়ে দিয়েছে।কিন্তু শহরের আধুনিকীকরণ উপভোগ করার সংগে সংগে আপনারা এই শহরের গভীর রসসম্পন্ন আর ঐতিহ্যিক দিক অনুভব করতে পারেন।উয়েনযৌ শহরের কেন্দ্র স্থান অর্থাত সবচেয়ে জনব্যস্ত উমা সড়কে শত বছরের পোড়-খাওয়া ইউরোপীয় শৈলীর পুরানো স্থাপত্যগুলো ঠিক আগের মতো আর্কষণীয়।এই সড়কের পাশাপাশি ছোট ছোট গলিতে হস্তশিল্পের সংগে জড়িত ছোট ছোট কারখানা গুণে শেষ করার উপায় নেই।এ সব কারখানায় এথনও ঐতিহ্যিক উত্পাদনের পদ্ধতি আর আকার বজায় রাখা হয়।তবে পুরোপুরি হাতের তৈরী পণ্যদ্রব্যের গুণমান সুন্দর, দামও সস্তা।এ সব ছোট ছোট কারখানা উয়েনযৌর বৈশিষ্টের প্রতিনিধিত্ব করে এবং এসব কারখানার মাধ্যমে উয়েনযৌ "শত কারিগরের জম্মস্থানের" সুনাম পেয়েছে।হস্তশিল্পগুলোর মধ্যে উয়েনযৌ সূচিশিল্প এবং উওয়াংইয়ান কাঠের ভাস্কর্য উয়েনযৌএর সবচেয়ে স্ববৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হস্তশিল্প । পর্যটকরা এসব তস্তশিল্প কিনতে খুব আগ্রহী।উয়েনযৌ সূচিশিল্প , সুযৌ সূচিশিল্প , হুনান সূচিশিল্প, সিছুয়ান সূচিশিল্প , গুয়াংডোং সূচিশিল্প এবং পেইচিং সূচিশিল্পকে চীনের ছয়টি বড় বিখ্যাত সূচিশিল্প হিসেবে গণ্য করা হয়।সস্তদশশতাব্দী শুরুতে উয়েনযৌতে বিশেষ সূচিশিল্পের দোকান চালু হয়।উয়েনযৌ সূচিশিল্পে পাখি আর ফুল, অশীতিপর বৃদ্ধবৃদ্ধা , প্রাচীনকালের সুন্দরী মেয়ে এবং ঘোড়া থেকে শুরু করে পাশ্চাত্যের বিখ্যাত চিত্রাংকন আর স্থাপত্য পর্যন্ত নানান বিষয়বৈচিত্র্য।উয়েনযৌর প্রধান বাণিজ্য সড়ক উমা সড়ক, উছোও সড়ক, রেনমিন পুর্ব সড়কে আপনি সূক্ষ্ম উনযৌ সূচিশিল্প কিনতে পারেন।

    উয়েনযৌ সূচিশিল্প সম্বন্ধে বর্ণনা করার পর, এখন আপনদের হুয়াংইয়াং কাঠের ভাস্কর্য দেখাতে নিয়ে যাবো।এই ভাস্কর্য হচ্ছে চীনের বিখ্যাত ভাসুরদের কাঠের ভাস্কর্য কর্মগুলোর অন্যতম।হুয়াংইয়া কাঠ এক ধরনের কাঠের নাম ।এই কাঠে ভাস্কর্য কাজ হয় বলে হুয়াংইয়া কাঠের ভাস্কর্য নামটির জম্ম হয়েছে। এই কাঠ শক্ত তবে মসৃণ।এই গাছ খুব ধীরে ধীরে বড় হয় । তা ছাড়া ঐতিহ্যিক কাঠের ভাস্কর্যের পদ্ধতিতে কাঠের উপাদান কড়াকড়িভাবে যোগাড় করা হয়। সুতরাং কাঠ ভাস্কর্যের সফলতার হার খুব নিচু।খোদাই শিল্পী ই শিও শিয়েন ব্যাখ্যা করে বলেছেন,

    সীমিত উপাদানের কারনে দীর্ঘকাল ধরে ছোট আকার আমাদের হুয়াংইয়া কাঠ ভাস্কর্যের প্রধান রীতিনীতি। বিংশ শতাব্দীর সত্তর আর আশির দশকের উপাদান বাইরে থেকে কেনা হয়। বড় নমুনা পাওয়ার সংগে সংগে আমাদের ভাস্কর্য কাজও আস্তে আস্তে বড় হয়েছে। এখন উয়েনযৌতে যে সব দোকান এই ভাস্কর্য ব্যবমায় নিয়োজিত সেই সব দোকানে আপনি দু ধরনের ভিন্ন শৈলির শিল্পকর্ম দেখতে পারেন, এমন একটি কাঠের ভাস্কর্য যার শিল্পকর্ম অত্যন্ত সূক্ষ্ম, মানুষের মুখের ভাব হোক, কাপড়ের হাতার হাল্কা কুঞ্চন হোক সবই প্রাণরসে পরিপূর্ণ।এটা হলো ঐতিহ্যিক হুয়াংইয়া কাঠের ভাস্কর্য ।আরেকটি কাঠের ভাস্কর্য এত সূক্ষ্ম নয়।যে মানুষ খোদাই করা হয় তাকে সাধারণত একটু অতিরঞ্চিত করা হয়।

    উয়েনযৌর বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন দোকানগুলো দেখার পর শহরের জনব্যস্ত কেন্দ্র স্থান থেকে শহরের উপকন্ঠের রসনিহিত দৃশ্য একটু দেখে আসি।উয়েনযৌ শহর থেকে ২০ কিলোমিটারের বেশী দূরে অবস্থিত ইয়াংচা জেলা।একটি নদীর স্বচ জলধারা একেঁবেঁকে বয়ে যাচ্ছে।এটা হলো উয়েনযৌর বিখ্যাত প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থান---নানসি নদী।এই নদীর দু পারের দৃশ্য সুন্দর।দেখার মতো জায়গা অনেক আছে ।নদীর দু তীরে দু শোটির বেশী প্রাচীন গ্রাম বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে আছে ।এ সব গ্রামে অনেক মিং আর ছিং রাজবংশের প্রাচীন স্থাপত্য সংরক্ষিত আছে।ইনটো গ্রাম এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়।এই গ্রামের সুন্দর দৃশ্য আর উর্বর জমি এবং স্ববৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বাণিজ্য সংস্কৃতি অজস্র পর্যটককে আকর্ষণ করেছে।আমেরিকান পর্যটক মিস ডেভিস বলেছেন,

    এখানকার দৃশ্য অত্যন্ত সুন্দর।এখানকার সব কিছু অক্ষতভাবে রক্ষা করা হয়।অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ ব্যাপার হলো মানুষ সত্যই এখানে বসবাস করেন।এর পাশাপাশি সবকিছু সংরক্ষণ করা হয়েছে।যারা শহরে থাকে তারা এখানকার মানুষের জীবনযাত্রার উপায় দেখতে চান।চীনের পক্ষে এটা একটি সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার সংরক্ষণের ভালো পদ্ধতি।