v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2004-12-20 16:28:52    
চীনের মুসলমান

cri
    চীনের ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী খ্রীষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে চীনে ইসলাম ধমের প্রচার শুরু হয়। চীনের এই ধর্ম পশ্চিম আর মধ্য এশিয়া থেকে মুসলমান বণিকদের মাধ্যমে রেশমী পথ দিয়ে চীনে প্রবেশ করে। চীনে ইসলাম ধর্ম দীর্ঘকাল ধরে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে এবং বিকাশ লাভ করে, অবশেষে তা চীনের হুই জাতি আর উইগুর ও কাজাখ ইত্যাদি সংখ্যালঘু জাতির অবলম্বিত ধর্মে পরিণত হয়েছে।

    চীনে ছড়িয়ে পড়ার সংগে সংগে ইসলাম ধর্ম চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির সংগে মিশে গিয়ে চীনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ধর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    ইসলাম ধর্ম চীনে হুই ধর্ম নামেও পরিচিত ছিলো। চীন গণপ্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবার পর এই ধর্ম চীনদেশে ইসলাম ধর্ম নামে সুপরিচিত হয়েছে। চীনের দশটি সংখ্যালঘু জাতি ইসলামধর্মাবলম্বী। তারা হলো হুই, উইঘুর, কাজাখ, কির্গিজ, উজবেক, তাতার, তাজিক, সালা, তোংসিয়াং, এবং পাওআন জাতি। উইগুর কাজাখ, কিরগিজ, উজবেক, তাতার, তাজিক ইত্যাদি জাতি প্রধানত উত্তরপশ্চিম চীনের সিনচিয়াং অঞ্চলে বসবাস করে। হুই, সালা,তোংসিয়াং পাওআন ইত্যাদি জাতির লোকেরা প্রধানত উত্তরপশ্চিম চীনের কানসু, নিংসিয়া, ছিংহাই, শেনসি এবং দক্ষিণপশ্চিম চীনের ইয়ুন্নান ইত্যাদি প্রদেশ আর অঞ্চলে বসবাস করেন। তাছাড়া হুই জাতির কিছু না কিছু মুসলমান প্রায় সারা চীনদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোতে থাকেন। চীনের মুসলমানরা সাধারণত সুন্নী সম্প্রদায়ভুক্ত, তবে তাজিক জাতির মুসলমানরা শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত।

   ১৯৪৯ সালে চীন গণপ্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবার পর ধর্মবিশ্বাসের স্বাধীনতার নীতি ভালোভাবে কার্যকরী করা এবং ব্যাপক মুসলমানদের ধর্মীয় জীবন ও রীতিনীতিকে সম্মান করার জন্যে ১৯৫৩ সালে চীনের ইসলামী সমিতি পেইচিংয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। চীনের সকল মুসলিম জাতির এই কেন্দ্রীয় ধর্মীয় সংগঠনের উদ্দেশ্য হলোঃ ধর্মীয় স্বাধীনতার নীতি কার্যকরী করার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারকে সহায়তা দেয়া এবং ইসলাম ধর্ম আর মুসলমান সম্প্রদায়ের বৈধ অধিকার ও স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করা, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের সংগে বন্ধুত্বমুলক আদানপ্রদান, সফরবিনিময় আর সংহতি ও সহযোগিতা বিকশিত ও জোরদার করা এবং বিশ্ব শান্তি রক্ষা করা। তাছাড়া এই সমিতির উদ্যোগে ইসলামের ধর্মীয় অনুষ্ঠান, তত্পরতা আর প্রশিক্ষণও আয়োজিত হয়, ধর্মগ্রন্থ প্রকাশনা এবং ইসলামধর্মের সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি নিদর্শন সুরক্ষা ও সংস্কার, ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষা, বিদেশে ছাত্র পাঠানো, নতুন ইমাম আর ধর্মসেবকদের শিক্ষিত করে তোলা ইত্যাদি কাজ পরিচালিত হয়।

    বর্তমানে চীনে মুসলমানদের মোট সংখ্যা এক কোটি আশি লক্ষেরও বেশী, মসজিদের মোট সংখ্যা প্রায় তিরিশ হাজার, ইমাম প্রমুখ ধর্মীয়সেবকদের মোট সংখ্যা প্রায় পঞ্চাশ হাজার। যে সব প্রদেশ, অঞ্চল মহানগর, বিভাগ আর জেলায় মুসলমানরা বসবাস করে, সেই সব জায়গায় বিভিন্ন পর্যায়েন ইসলামী সমিতির স্থানীয় শাখা প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। বিশিষ্ট মুসলিম ব্যক্তিরা চীনের ইসলামী সমিতি আর বিভিন্ন স্থানীয় ইসলামী সমিতির নেতৃস্থানীয় পদে রয়েছেন এবং চীনের বিভিন্ন পর্যায়ের গণকংগ্রেস আর গণরাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলণের সদস্য হিসেবে মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করে সরকারের নীতি নির্ধারণ আর আলোচনা পরামর্শে অংশগ্রহণ করেন। চীনের ইসলামী সমিতির সর্বোচ্চ ক্ষমতাসংস্থা হলো চীনের ইসলাম ধর্মের জাতীয় সম্মেলণ, যা প্রতি চার বছরে একবার করে অনুষ্ঠিত হয়।

    চীনে প্রকাশিত ইসলাম সংক্রান্ত পুস্তক আর সাময়িকী খুব বেশী। ইমাম আর আলেম আ ইসলাম গবেষকদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্যে চীনে উল্লেখিত সমিতির উদ্যোগে চীনের ইসলামী ধর্মশাস্ত্র মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

    এই সমিতির উদ্যোগে বা সাহায্যে চীনের মুসলমানদেরকে মক্কায় হজ করতে পাঠানো হয়।