v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2004-12-20 10:30:20    
ইয়েনলন শৃংগের পদদেশে অবস্থিত প্রজাপতি ঝরনা

cri
    ইয়ান্নান প্রদেশের ডালি থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে ছানসেন পাহাড়ের ইয়েনলন শৃংগের পদদেশে অবস্থিত প্রজাপতি ঝরনা।প্রজাপতি ঝরনার আয়তন ৫৯টিরও বেশী বর্গ কিলোমিটার।ঝরনার পানি আয়নার মতো স্বচ্ছ।ঝরনার কিনারা সারি সারি সবুজ গাছপালায় আচ্ছন্ন।প্রত্যেক বছরের বসন্তকালের শেষ দিকে এবং শ্রীষ্মকালের প্রথম দিকে অজস্র প্রজাপতি চার দিক থেকে ঝরনার পাশের গাছপালার ছায়ার নিচে জড়ো হয়।বৈচিত্রময় প্রজাপতি যেন নাচের আসরে যোগ দিতে আসে। সবচেয়ে আশ্চর্য ব্যাপার হলো, যখন হাজার হাজার প্রজাপতির মাথাগুলো লেজগুলোর সংগে সংযুক্ত হয়ে গাছপালায় উল্টো করে ঝুলায় তখন পানিতে প্রজাপতির অজস্র প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয় ।এই চমকপ্রদ দৃশ্য দেখে পর্যটকরা চক্ষুস্থির হয়ে যায় । প্রজাপতি ঝরনা শুধু যে প্রজাপতির স্বর্গ তাই নয় তাতে একটি সুন্দর রুপকথাও আছে। কিংবদন্তীতে বলা হয়েছে, প্রজাপতি ঝরনার আগের নাম ছিল "অতল পুকুর"।অনেক অনেক দিন আগে, ছেনসেন পাহাড়ের ইয়েলন শৃংগের পদদেশে ভিয়েগু নামে একজন সুন্দর বাই জাতির মেয়ে বাস করতেন।এই পাহাড়ে একজন তরুণকান্তি শিকারি থাকতেন।তারা দুজনেই সুখী প্রেমিক-প্রেমিকা।তবে ভিয়েগু মেয়ে বাই জাতির রাজকুমারীর পছন্দ হল।এক দিন রাজকুমারী ভিয়েগু মেয়েকে প্রাসারে ছিনিয়ে আনতে লোকদের পাঠান ।একটি নিরব রাত্রে ভিয়েগু মেয়ের প্রেমিক প্রাসারে অনুপ্রবেশ করে ভিয়েগু মেয়েকে মুক্ত করেন।যখন তারা ইয়েলন শৃংগের পদদেশে পৌছলেন তখন রাজকুমারীর পাঠানো লোকেরা তাদের পথ প্রতিরোধ করল ।তাদের হাতে ধারে পড়ার আগে তারা দু জনেই হাতে হাত মিলিয়ে "অতল পুকুরে" ঝাঁপিয়ে পড়লেন।চোখের পলকে অতল পুকুর থেকে এক জড়া প্রজাপতি আকাশে উড়ে পরষ্পরের পিছনে লাগে থাকে।এক এক জনের ছায়া হয়ে যায়।তারপর নানান ধরনের প্রজাপতি চার দিক থেকে এসে নাচ করতে লাগলো।দু জন প্রেমিক-প্রেমিকাকে স্মরন করার জন্য বাই জাতির পূর্ব পুরুষরা "অতল পুকুরকে" প্রজাপতি ঝরনার নাম দেন।প্রজাপতি ঝরনা "ভালভাসার ঝরনা" বলে দেশ-বিদেশে আখ্যায়িত করা হয়।প্রত্যেক বছর হাজার হাজার পর্যটক ওখানে প্রজাপতি ঝরনার রহস্য দেখতে যান।প্রজাপতি ঝরনার দুই পাশে দুটো রেশম গাছ।গাছ পাতায় আচ্ছন্ন , গাছে ফোটানো ফূল দেখতে প্রজাপতির মতো।মানুষ এই গাছকে প্রজাপতির গাছ ডাকে।প্রত্যেক বছরের গ্রীষ্মকালের প্রথম দিকে যখন গাছে ফুল পুরোপুরি ফুটায় তখন হাল্কা হলুদ রংয়ের ছোট ছোট ফুল থেকে সুগন্ধ চার দিকে ছড়িয়ে পড়ে।এই সুগন্ধ হাজার হাজার প্রজাপতিকে আকর্ষণ করে থাকে ।বার্ষিক প্রজাপতি সমাবেশে প্রজাপতির "জনসমাবেশের " অদ্ভুত দৃশ্য উপভোগ করার জন্য লোকেরা প্রজাপতি ঝরনার পাশে হাজির হন।বাই জাতির যুবক-যুবতীদের মধ্যে অনেকেই সুন্দর পোশাক পরে প্রজাপতির ঝরনার পাশে আসে।তারা গান গাওয়ার মাধ্যমে নিজেরে প্রেমিক-প্রেমিকাকে খুঁজেপাওয়ার চেষ্টা করে।

    বতর্মানে প্রজাপতি এক সংগে জড়ো হওয়ার ঋতু না হওয়ায় প্রজাপতি ঝরনায় আসলে আপনার অনুতাপ করার কোনো কারন নেই।কেননা প্রজাপতি ঝরনার পাশের "প্রজাপতি জগতে" পর্যটকরা বৈচিত্রময় আর উড়ে যাওয়ায় ব্যস্ত প্রজাপতিগুলোকে উপভোগ করতে পারেন।"প্রজাপতি জগত" প্রজাপতি ঝরনার দক্ষিণ দিকে অবস্থিত।তার আয়তন প্রায় এক হাজার বর্গকিলোমিটারের।এখন এটা এমন একটি প্রদর্শনী ভবন হয়েছে যার আকার পৃথিবীতে সবচেয়ে বড়, উত্পাদিত প্রজাপতির রতমারিতাও সবচেয়ে বেশী।এই প্রদর্শনী ভবন দেখতে একটি গ্রীন হাউসের মতো।ভবনের ভিতরে ঢুকে লোকেরা সংগে সংগে গরম লাগে ।জিজ্ঞাস করে জানা গেছে ,প্রজাপতির জীবনযাত্রার প্রকৃতি মেটানোর জন্য ভবনের তাপমাত্রা সারা বছরে ২৫ থেকে ৩৫ পর্যন্ত সেন্টিগ্রীর মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।এই ভবনে বিভিন্ন ধরনের প্রজাপতি দেখা যায়। এ সব বৈচিত্রময় প্রজাপতি দেখলে মনে হয় আপনারা প্রজাপতির সমুদ্রে এসে পড়েছেন। উপভোগের ফসলতা যাতে আরো ভাল হয় সেই জন্য পর্যটক আর প্রজাপতিগুলোর মধ্যে কোনো প্রতিবন্ধ নেই । যখন পর্যটকরা এই ভবনে পরির্দশন করেন তখন এ সব বৈচিত্রময় প্রজাপতি অনবরত পর্যটকদের মাথায় আর বাহুতে বাসতে শুরু করে ।প্রজাপতি ভবনের পরিচালক জেন উয়েন হাও ব্যাখ্যা করে বলেছেন, চীনে ১৩০০টিরও বেশী প্রজাতির প্রজাপতি আছে। ইয়ান্নানে সাত শোরও বেশি প্রজাতির প্রজাপতি আছে, কেবল এই ভবনে শতাধিক প্রজাতির প্রজাপতি আছে।তিনি বলেছেন,

    প্রজাপতির ভবন এমনভাবে নির্মান করা হওয়া উচিত নানা ধরনের আবহাওয়ায় যা থেকে প্রজাপতি বাইরে উড়তে পারে।পোকার শীতের দিন বাঁচানোর অব্যস আছে।তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমরা তাদের এই অভ্যস পরির্বতন করতে পারি।পর্যটকদের চাহিদা মেটানোর জন্য আমরা যে কোনো সময় এ সব প্রজাপতিকে বাইরে উড়ে যেতে দিতে পারি।পরিচালক জেন বলেছেন, প্রত্যেক দিন হাজার হাজার প্রজাপতি এখানে বংশবৃদ্ধি করে থাকে। পর্যটকরা এই ভবনে একদম নিকটে প্রজাপতি রাজ্যের সৌন্দর্য আর রহস্য অনুভব করতে পারেন।এই পোকা জগতে প্রজাপতি হচ্ছে মানব জাতির সবচেয়ে আদরণীয় প্রাণীগুলোর অন্যতম।জানা গেছে, পর্যটকরা যাতে প্রাকৃতিক জগতে প্রজাপতির অদ্ভুদ দৃশ্য দেখতে পারেন সেই জন্য এই ভবনের বাইরে আরেকটি ৩০ মু জামি অধিকারী প্রজাপতির বংশবৃদ্ধি ঘাঁটি গড়ে তোলা হয়েছে।ডালি পর্যটন ব্যরোর্র পরিচালক হো ই জেন ব্যাখ্যা করে বলেছেন,

    বতর্মানে আমরা প্রজাপতি ঝরনার সংস্কৃতি আর আত্মা খুঁজে বের করার উপায় বিবেচনা করছি ।আমরা এখন কৃত্রিম প্রসবের ব্যবস্থা নিচ্ছি ।যাতে যথোচিত সময়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রজাপতিকে উড়তে দেয়া হয়।