v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2004-12-10 09:52:11    
পিচ বাগানে চমত্কার ফলন

cri
    পেইচিংয়ের উপকণ্ঠের পিংকু অন্চলের হাজার খানেক হেক্টর ক্ষেতে পিচফুল ফুটেছে শুনে সংবাদদাতা বসন্তের একটি রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে পিংকু অন্চলে এসে সুবিশাল ক্ষেতে হাজার হাজার পিচগাছে অজস্র পিচফুল ফোটার অর্পূব সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করেছেন। সংবাদদাতা আরো জানতে পেরেছেন যে , এই সুবিশাল সুগন্ধ পিচফুলের সাগর শুধু স্থানীয় জনসাধারণের জীবনযাত্রাকে সুন্দর করেই তোলে নি , বরং তাদের জীবনযাত্রাকে সমৃদ্ধিশালীও করে তুলেছে । একটি রাস্তার ধারে পিচগাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে সংবাদদাতা একজন কৃষকের সংগে আলাপ করতে লাগলেন । এই কৃষকের নাম ওয়ান জে সুন । তিনি বলেছেন ,

    "পিচগাছ চাষে আমি আদৌ কোনো রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করি না । গুবরে পোকা ইত্যাদি পোকা দিয়ে ক্ষতিকর পোকাকে খেয়ে ফেলে নিশ্চিণ্হ করে দিই । আমার চাষ করা পিচফলে কোনো ক্ষতিকর পোকা নেই ,রংও ভালো। বীচি পযর্ন্ত খুবই মসৃণ । খুবই মিষ্টি । সাধারণ পিচফলের মিষ্টির মাত্রা নয় থেকে দশ ডিগ্রি । আমার চাষ করা পিচফলের মিষ্টির মাত্রা এগারো বারো ডিগ্রি হয় । খুবই মিষ্টি ,খুবই সুস্বাদু ।"

    ওয়ান জে সুনের পরিবার এখন পাঁচ শো'টিরও বেশী পিচগাছের চাষ করছে । তিনি সংবাদদাতাকে বলেছেন , অতীতে তার পরিবারের ক্ষেতে শুধু গমের চাষ করা হতো । কিন্তু এই জায়গাটার জমি অনুবর বলে উত্পাদন পরিমান বেশী হতো না । বাষির্ক আয় হতো মাত্র দশ হাজার ইউয়ান রেনমিনপি'র কাছাকাছি । পরে স্থানীয় কৃষিবিজ্ঞানীরা ক্ষেতেএসে তাদের বললেন যে , এই জমি পিচ চাষের উপযোগী । তিনি পরীক্ষামূলকভাবে গমের বদলে পিচগাছের চাষ করতে লাগলেন । প্রথম বছর পিচগাছ লালন করলেন। দ্বিতীয় বছরেই পিচগাছে পিচফল ধরলো । সযত্নে পরির্চয্যার ফলে তার পিচগাছগুলোতে ধরা পিচফলগুলো যেমন লাল লাল সুন্দর তেমনি আকারে বড় বড় । ওই বছরেই তার পরিবার পিচফল বেচে সত্তর হাজার ইউয়ান রেনমিনপি'রও বেশী অর্থ উপাজর্ন করেছে । বিশ হাজার ইউয়ানের বরাদ্দকে বাদ দিয়ে তার পরিবারের নীট আয় হয়েছে পন্চাশ হাজার ইউয়ানেরও বেশী । তিনি তার স্ত্রীর সংগে সিদ্ধান্ত নিলেন , তারা পিচগাছের চাষ করতে থাকবেন।

    ওয়ান জে সুনের স্ত্রী ওয়ে চিন ফং হচ্ছেন উত্তরচীনের একজন মনখোলা নারী । কথা বলেন দ্রুত । কাজও করেন চটপটে । তিনি বলেছেন, তিনি এখন বাড়ীতে পিচের চাষ করতে খুবই ভালবাসেন । পিচফুল ফুটতে আর পিচফল দিনদিন বড় হয়ে উঠতে দেখে তার মনে কত যে আনন্দ পায় । তাছাড়া আয়ও বেশী ,স্বাধীনতাও বেশী । তিনি বলেছেন ,

    "অন্যদের জন্য মজুরি খাটতে যেতে আমি চাই না । তাতে সময়ের বেশ কড়াকড়ি । এখন আমার সময়ের কড়াকড়ি নেই । তাছাড়া এখন আমার স্বাধীনতা বেশী , আয়ও বেশী । পিচ বেচা শেষ করে আমি শাকশব্জী বেচবো । বাড়ীর বাইরে শাকশব্জীরও চাষ করছি ।এভাবে বাষির্ক আয় আশি নব্বই হাজার ইউয়ানের কম হবে না ।"

    ওয়ে চিন ফং বলেছেন ,পিচ চাষের পর তার পরিবারের অবস্থা দিনদিন ভালো হয়েছে । এখন তারা বাস্তুভিটার বাড়ী মেরামত করেছেন এবং নতুন পণ্য বাড়ীও কিনেছেন । তাদের দুই সন্তানের উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে পড়ার বিভিন্ন ফি দেয়াও আর কোনো সমস্যা নয় ।

    রাস্তার ধারের একটি প্লাস্টিকের চাঁদোয়ার দিকে অংগুলি নিদের্শ করে ওয়ে চিন ফং সংবাদদাতাকে বলেছেন , আয় বৃদ্ধির পর তার পরিবার চাঁদোয়া তৈরী করে অমৌশুমী পিচের চাষও করছে । চাঁদোয়ার পিচ অপেক্ষাকৃত আগে পাঁকে বলে সেগুলো ভালো দামে বিক্রি করা যায় ।

    ওয়ান জে সুনের গ্রামের নাম ইয়ু চি সান গ্রাম । এই গ্রামে মোট ষাটটিরও বেশী পরিবার আছে । তার পরিবার পিচের চাষ করে সুফল অজর্ন করেছে দেখে এখন এই গ্রামের প্রতিটি পরিবার পিচগাছের চাষ করছে এবং তাদের আয় বেশ কয়েকগুণ বেড়েছে । ওয়ান জে সুনের প্রতিবেশী ওয়ান সি হো সংবাদদাতাকে বলেছেন ,দু'শোটি পিচগাছের চাষ করার পর তার পরিবারের অবস্থাও বদলে গেছে । তিনি বলেছেন ,

    "ফসল চাষের সময়ে ফলন তেমন ভালো হতো না । পিচ চাষের পর আয় আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে । মোটামুটি হিসাবে বাষির্ক আয় ত্রিশ হাজার ইউয়ান রেনমিনপি'র মতো ।"

    বতর্মানে শুধু পিংকু নয় , পেইচিংয়ের উপকণ্ঠের অনেক অন্চলে স্থানীয় বৈশিষ্ট্য অনুসারে বিভিন্ন ধরণের ফলগাছের চাষ করা হচ্ছে । ফলগাছশিল্প কৃষি ও পাশ্বর্জাত দ্রব্যের প্রক্রিয়াকরণ,পযর্টন ,ভোজন ইত্যাদি শিল্পের বিকাশ ত্বরান্বিত করেছে এবং পেইচিংয়ের উপকণ্ঠের কৃষকদের জীবনযাত্রার পরিবতর্ন ঘটিয়েছে ।