v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2004-11-26 14:40:47    
জমি হারানো কৃষকদের জীবনযাত্রার নিশ্চয়তা বিধান

cri
   সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের অর্থনীতি উন্নয়নের ফলে জমির চাহিদা বেড়ে চলেছে । অনেক জায়গার কিছু কৃষক তাই জমি হারিয়েছেন । কিভাবে এই সব জমি হারানো কৃষকদের জীবনযাত্রার নিশ্চয়তা বিধান করা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্যসূচীতে পরিণত হয়েছে । আমাদের সংবাদদাতা সম্প্রতি চীনের দক্ষিণপূর্বাংশের চেচিয়াং প্রদেশে গিয়ে সাক্ষাত্কার নেয়ার সময়র জানতে পেরেছেন যে , এই প্রদেশ সামাজিক নিশ্চয়তা বিধান ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে কার্যনরভাবে জমি হারানো কৃষকদের জীবনযাত্রার অসুবিধার সমস্যা সমাধান করেছে ।

    গত কয়েক বছরে চেচিয়াং প্রদেশের অর্থনীতি উন্নয়নের গতি বরাবরই সমগ্র দেশের পুরোভাগে রয়েছে । কিন্তু শহর সম্প্রসারিত হওয়া , কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হাতে নেয়া ইত্যাদি কারণে গ্রামান্চলের বহু জমি ব্যবহার করা হয়েছে । অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য চাই জমি , কৃষকদের বেঁচে থাকার জন্যও চাই জমি । এই দ্বন্দ্ব দিন দিন প্রকট হয়ে উঠেছে ।

    সাও সিন শহরের নিকটে অবস্থিত মেই সু গ্রামে কয়েক হাজার অধিবাসী আছেন । ১৯৯২ সাল থেকে শহর অনবরত সম্প্রসারিত হয়ে চলার ফলে প্রতি বছর গ্রামের কিছু কিছু জমি ব্যবহার করা হয়েছে । সরকার ব্যবহৃত প্রতি হেক্টর জমির জন্য কৃষকদের আশি হাজার ইউয়ান রেনমিনপি ভর্তুকি দেয় । স্থানীয় কৃষকদের কাছে এটা একটি বেশ আয় হলেও তারা ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার কথা ভেবে চিন্তিত হন । গ্রামের ৬৫ বছর বয়স্ক অধিবাসী ছি জুয়ান পিন এরকম চিন্তিত হয়েছিলেন , তিনি বলেছেন , "আমাদের বয়স হয়েছে । অন্যান্য কাজ করতে পারি না , চাষাবাদ করতে পারি । আমার উদ্বেগ হচ্ছে এই যে , জমি বিক্রি হয়েছে । বয়োবৃদ্ধ হলে নির্ভর করতে পারার মতো আমাদের কিছু থাকবে না ।"

    কৃষকদের জমি হারানোর অর্থই নির্ভরতা হারানো । আর জমি আদায়ের পর একবারে আর্থিক ভরতুকি দেয়ার ব্যবস্থা তাদের ভবিষ্যতের জীবনযাত্রার পুরোপুরি নিশ্চয়তা বিধান করতে পারে না । এই সমস্যা সাও সিন জেলা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে খুবই চিন্তিত করে তোলে । ২০০১ সালে সাও সিন জেলার ভূমিসম্পদ ব্যুরো সমগ্র জেলার কৃষকদের জমি আদায়ের অবস্থা সম্পর্কে একটি জরীপ চালিয়েছে । এই ব্যুরোর দায়িত্বশীল ব্যক্তি সি পাও ফু বলেছেন , জরীপ থেকে দেখা গেছে , জমি দেয়ার পর কৃষকদের জীবনযাত্রার নিশ্চয়তা হারানোর সমস্যা খুবই প্রকট । তিনি বলেছেন ,

    "আমরা জরীপ চালিয়ে দেখেছি , সাও সিন জেলার জমি হারানো কৃষকদের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী ও কার্যকর জীবনযাত্রার নিশ্চয়তাবিধান ব্যবস্থা প্রতিশ্ঠা করতে হবে । এই ব্যবস্থার সমস্যার সমাধান আসলে জমি হারানো কৃষকদের ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার সমস্যার সমাধান ।"

    এক বছরেরও বেশী সময়ের জরীপ ও গবেষনার পর চেচিয়াং প্রাদেশিক সরকার দুই হাজার তিন সাল থেকে গোটা প্রদেশে জমি দানকারী কৃষকদের মৌলিক জীবনযাত্রার নিশ্চয়তা বিধান ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে । এই ব্যবস্থা অবসর বীমা ব্যবস্থার মতো । কৃষকরা নির্দিষ্ট ফি দিলেই নির্দিষ্ট বয়সের পর নিয়মিত অবসরভাতা পেতে পারেন । সরকার , কৃষক ও সমষ্টি যৌথভাবে পুজি সংগ্রহ করে ।

    সাও সিন জেলার কথাই ধরা যাক , ষোলো বছরের বেশী বয়সের জমি দানকারী কৃষক এই ব্যবস্থায় অংশ নিতে হলে তিনি নিজে আর তার গ্রামের সমষ্টি মাত্র একবারে সাত হাজার ইউয়ান রেনমিনপি দিলে আর সরকার আরো ষোলো হাজার ইউয়ান রেনমিনপি যোগ দিলেই হবে । তাহলেই নারীরা ৫৫বছর আর পুরুষরা ৬০ বছর বয়স হলেই প্রতি মাসে দু'শো বিশ ইউয়ান রেনমিনপি'র অবসরভাতা পেতে পারেন মৃত্যু পর্যন্ত। এই ব্যবস্থা প্রবর্তিত হওয়ার পর সাও সিন জেলার মেই সু গ্রামের যাবতীয় অধিবাসী স্বচছায় যোগ দিয়েছেন এবং চারশো'রও বেশী কৃষক অবসরভাতা নিতে শুরু করেছেন ।

    পূর্বে উল্লিখিত ছি জুয়ান পিন বলেছেন , মৌলিক জীবনযাত্রার নিশ্চয়তাবিধান ব্যবস্থা প্রবর্তিত হওয়ার পর তিনি তার ভবিষ্যতের জীবনযাত্রা সম্পর্কে আর বেশী চিন্তিত নন । তিনি বলেছেন ,

    "আমরা স্বামী-স্ত্রী দু'জনই অবসর বীমা ব্যবস্থায় যোগ দিয়েছি । এখন আমরা মাসে চারশো চল্লিশ ইউয়ান পাই । তাই আর বেশী চিন্তিত নই ।" 

    সাক্ষাত্কারে সংবাদদাতা দেখেছেন, যারা অবসরভাতা নিয়েছেন তারা এই ব্যবস্থার প্রতি সবচেয়ে সন্তুষ্ট । কিন্তু যারা দশ বারো বছর, এমন কি কয়েক দশক পরই কেবল অবসরভাতা নিতে পারবেন তাদের জীবনযাত্রা এখনো একটি সমস্যা । তারা কর্মসংস্থান পেতে চান , কিন্তু তাদের বেশীরভাগেরই প্রযুক্তির অভাব বলে তাদের পক্ষে কর্মসংস্থান পাওয়া বেশ কঠিন । এই সমস্যা সমাধানের জন্য সাও সিন জেলা তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে । সরকার প্রশিক্ষণের যাবতীয় খরচ বহন করেছে এবং তাদের ব্যক্তিগত পেশাগত প্রশিক্ষণ সংস্থা প্রতিষ্ঠায়ও উত্সাহ দিয়েছে ।