বর্তমানে চীন নামে অভিহিত এই দেশে সুদূর কাল থেকে যে মানুষ বাস করে আসছে তার প্রমাণ বিগত কয়েক দশকের প্রত্নতাত্ত্বিক খননে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । পুরাতন প্রত্নপ্রস্তর-যুগীয় মর্কট-মানবদের জীবাশম-সংক্রান্ত উপাদান ১৯২৯ সালের পর থেকে পেইচিং শহর থেকে পঞ্চাশ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে চৌখৌতিয়ান নামক স্থানে বহুবার আবিস্কৃত হয়েছে । বিশেষজ্ঞদের গবেষণা থেকে জানা যায় যে , মর্কট- মানব যা পেইচিং মানব বলেও পরিচিত প্রায় পাঁচ লক্ষ বছর আগে ভূ-গঠনের চতুর্থ যুগের প্লাইসেটামিন পর্বে চীনে বাস করত । ১৯৫৪ সালে শানসী প্রদেশের সিয়াংফেন জেলার অন্তর্গত তিংছুন গ্রামে মধ্যপ্রস্তর যুগীয় মানুষের দাঁতের জীবাশ্ম এবং বহু সংখ্যক প্রস্তর-নিমিত যন্ত্রাদি আবিস্কার হয় । অন্ত-প্রত্নপ্রস্তর-যুগীয় নৃবিদ্যায় আখ্যায়ত হোমো স্যাপিয়েন (বর্তমানে উপর গুহামানব )নামে পরিচিত হাড়ের জীবাশ্ম এবং বহু সংখ্যক প্রস্তরনিমিত যন্ত্রাদি ও হাড়নিমিত শিল্পদ্রব্য ১৯৩৪ সালে চৌখৌতিয়ানের ড্রাগন-হাড় পাহাড়ের উপরাংশের গুহা থেকে পাওয়া গিয়েছে । তাছাড়া , কুয়াংতোং প্রদেশের শাওকুয়ানের মাপা , হুপেই প্রদেশের ছাংইয়াং এবং কুয়াংসী প্রদেশের লিউচিয়াং এবং হোথাও ( পীতনদীর বাঁকে ) অঞ্চলগুলিতে প্রত্নপ্রস্তর-যুগের মানুষদের জীবাশ্ম এবং তাদের ব্যাবহৃত দ্রব্যাদি আবিস্কৃত হয়েছে ।
বিরাট এলাকয় ছড়িয়ে থাকা নবপ্রস্তর-যুগের বিভিন্ন নিদর্শন চীনের বহু স্থানে আবিস্কৃত হয়েছে । এই সকল নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে প্রত্নপ্রস্তরযুগ এবং নবপ্রস্তর-যুগের অন্তর্বর্তী সময়কার চিত্রিত কৃষ্ণ মৃন্ময়পাত্র আর ক্ষুদ্র ক্ষৃদ্র প্রস্তরনির্মিত পরিচিত--আধুনিক হোনান , শানসী এবং সেনসী প্রদেশ থেকে কানসউ প্রদেশ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার ভূগর্ভ থেকে পাওয়া গিয়েছে । কৃষ্ণ মৃন্ময়পাত্রের নমুনা--যা লোংশান সংস্কৃতি মানে পরিচিত - প্রধান্তঃ শানতোং প্রদেশ এবং চীনের মধ্য মালভূমির বিশাল এলাকার ভূগর্ভ থেকে পাওয়া গিয়েছে । মাইক্রোলিথিক সংস্কৃতির নিদর্শন চীনের মহাপ্রাচীরের উত্তরাঞ্চলে আবিস্কৃত হয়েছে , এবং নবপ্রস্তর-যুগীয় দক্ষিণ চীনের বৈশীষ।ট্যবহনকারী নিদর্শন ইয়াংসি নদীর দক্ষিণাঞ্চলের অনেক স্থানে আবিস্কৃত হয়েছে ।
|