v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2004-10-28 20:08:46    
চীনের দক্ষিণাংশের শহর গুয়াযৌ

cri

    প্রিয়া বন্ধুরা, চীন একটি বিশাল দেশ।এবং তা মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যে ভরপুর।কোনো কোনো শহরের ইতিহাসও সুদীর্ঘ যেখানে গেলে লোকেরা সহজেই চীনের রীতিনীতি আর সংস্কৃততি জানতে পারেন।চীনে ভ্রমণ করা সত্যি খুব মজার ব্যাপার। চীনের দক্ষিণাংশের শহর গুয়াযৌ একটি ঐতিহাসিক প্রসিদ্ধ শহর এবং পর্যটকদের জন্যে একটি আদর্শ ও আকর্ষনীয় জায়গা। সারা বছর গোটা শহর যেন ফুলের উ্যানের মত। কারন সারা বছরই গ্রীশ্মকালের প্রাধান্য থাকায় গুয়াংযৌ শহরে সবুজ পুষ্পগুল্মপাদপের প্রাচুর্য দেখা যায়।সুতরাং গুওয়াংযৌ শহরকে ফুলের শহর বলে ডাকা হয়।প্রত্যেক বছর গুওয়াংযো শহরের সৌন্দর্য অজস্র পর্যটককে আকর্ষণ করে থাকে । গুয়াংযো শহর সম্বন্ধে গুয়াংযো শহরের আন্তজার্তিক পর্যটন সংস্থার কর্মকর্তা মিস উ চি ও ব্যাখ্যা করে বলেছেন

    গুয়াংযো হচ্ছে চীনের দক্ষিণাংশের কোয়াংতুং প্রদেশের রাজধানী। গুয়াংযৌয়ের ইতিহাস ও সংস্কৃতি , প্রাকৃতিক আর মানসিক দৃশ্য এবং সেখানকার খাবার ও কেনাকাটা ওই শহরের প্রধান বৈশিস্ট্য বিরল সু্ন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য, দক্ষিণ চীনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন রীতিনীতি , সুদীর্ঘ ইতিহাস আর সংস্কৃতি, বিপুল সংখ্যক দশর্নীয়স্থান, বিচিত্র আমোদ-প্রমোদ এবং উন্নত বাণিজ্য ও পযর্টন পরিসেবার বল্যানে গুওয়াংযো চীনের গুরুত্বপূর্ণ পযর্টন শহরগুলোর অন্যতম।

    মিস ইএব কথাগুলো গুওয়াংযৌ শহরের পযর্টন সম্পদের বৈশিষ্ট্যের চিত্র তুলে ধরেছে।এখানে উল্লেখ্য, গুওয়াংযৌ শহরের একটি কিংবদন্তী আছে। এতে বলা হয় প্রাচীনকালে পাঁচজন দেবতা পাঁচটি ভেড়ার পিঠে চড়ে সাগরের ঢেউ ভেংগে গুওয়াংযৌ এসে পৌছেন। তারা তাদের হাত থেকে পাঁচটি রংএর ধানের শীষ মাটিতে ছড়িয়ে দেন। তারা এক সংগে প্রাথনা করেন, এখন থেকে ক্ষুধা ও খরার বিদায়। গত তিন হাজার বছর ধরে, বংশানুক্রমে এই কল্প-কাহিনী মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত হয়। গুওয়াংযৌ শহরের প্রতীক হিসেবে শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত একটি ছোট পাহাড়ে এখনও একটি বিশাল পাঁচ-ভেড়ার মুর্তি বসানো আছে। তারা যেন দিন-রাত হাজার হাজার পযর্টককে এই মোহনীয় গল্প বলছে।

    চীনে এমন কি হয়তো পৃথিবীতেও গুওয়াংযৌ শহরের মত এমন শহর খুব কম যার এত বেশী ডাক নাম আছে। ভেড়ার শহর, ধানের শীষের শহর, ফুলের শহর ইত্যাদি। গুওয়াংযৌকে ফুলের জগত বলেও মনে করা হয়।মার্চ মাসে শহরজুড়ে কেবল ফুলের সমারোহ।এ জন্যে চীনে গুওয়াংযৌ শহর প্রথম কিস্তিতে প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক আর সাংস্কৃতিক শহর, শ্রেষ্ঠ পযর্টন শহরের সুনাম লাভ করে।২০০১ সালে আন্তর্জাতিক ফুল সমিতি গুওয়াংযৌ শহরকে আন্তর্জাতিক উদ্যান শহর বলে আখ্যা দেয়।

    বন্ধুরা, আপনারা যে সংগীত শুনছেন তা হচ্ছে মন্দির ঘড়ির আওয়াজ নামক গুওয়াংডোংএর একটি স্থানীয় সংগীত। গুওয়াংযৌ শহরে অজস্র বৃক্ষরাজি আছে, আছে উদ্যান আর প্রাচীনকালের লাইব্রোরী, আরো আছে বেশ কয়েকটি জার্মান আর উসলামি স্টাইলের স্থাপত্য, ঘড়ি ভবণ এবং গার্জি। চীনের প্রাচীনকালের বেশ কয়েক জন বিখ্যাত কবি এখানে ভ্রমণ করার পর অনেক সুন্দর সুন্দর কবিতা লিখে পরবর্তীকালের বংশধরদের জন্যে রেখে গেছেন।ইতালির বিখ্যাত পযর্টক মার্কো পোলো এখানে তার পদ চিহৃ রেখেছেন। চীনের থাং রাজবংশের পর থেকে গুওয়াংযৌ সর্বদাই চীনের অন্যতম বৃহতম বন্দর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ও অঞ্চলের জাহাজগুলো গুওয়াংযৌ বন্দরে এসে মালপত্র খালাসও বোঝাই করে। গুওয়াংযৌ শহরের কেন্দ্র থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি পাইইয়েন পাহাড় নামক দর্শনীয় স্থান আছে। লোকেরা যদি পাহাড়ের শীর্শে উঠে দাড়ান, তাহলে শহরের চার দিকের দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। গোটা শহরে বণভূমি শতকরা ৯৫ ভাগের পাঁচনব্বই বেশী। অজস্র প্রাচীন বৃক্ষ, সবুজ ঘাস এবং পাখির গান সত্যিই খুব আকর্ষনীয়। 

    বন্ধুরা, যখন আপনারা গুওয়াংযৌ শহরের ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি এবং প্রাকৃতি দৃশ্য উপভোগ করতে যাবেন, তখন মনে রাখতে হবে, এখানকার আরেকটি বৈশিষ্ট্য আপনাদের উপভোগ না করার কোন কারন নেই।

    আপনারা যে আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন তা গুওয়াংযৌ শহরের একটি চা-ঘর থেকে রেকর্ড করা হয়েছে। চীনে একটি কথা আছে, খাওয়া-দেওয়া উপভোগ করতে চাইলে শুধু গুওয়াংযৌ যান। গুওয়াংযৌর খাবার অত্যন্ত নাম-করা।সেখানে নানা ধরনের খাবার পাওয়া যায়।শহরের যে কোনো রেস্তোঁরায় প্রকৃত গুওয়াংযৌ স্টাইলের খাবার পাওয়া যায়। স্থানীয় খাবার ছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য জায়গার সুস্বাদু খাবারও গুওয়াংযৌ শহরে দুষ্প্রাপ্য নয়।যেমন ধরুন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ভারত, ইতালি ইত্যাদি দেশের খাবার ওখানে খুব জনপ্রিয়।সামুদ্রিক খাবার, নানা ধরনের ছোট কেক, স্ন্যাকস ইত্যাদি খাবার পযর্টকদেরও আকর্ষণ করে।

    গুওয়াংযৌ শহরে ভ্রমণ করতে আসলে আপনারা শুধু এখানকার খাবার উপভোগ করতে পারেন তাই নয়, এখানকার কেনাকাটার আমোদ-প্রমোদও উপভোগ করতে পারেন।আপনারা একটু আগে যে সংগীত শুনেছেন তা গুওয়াংযৌ শহরের একটি বাণিজ্য কেন্দ্র থেকে রের্কড করা হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওখানে কেবল উপচে পড়া মানুষ।

   গুওয়াংযৌ শহরের হাল্কা শিল্প উচ্চ মানের। অনেক শ্রেষ্ঠ পণ্যদ্রব্য দেশ-বিদেশে বিখ্যাত। গুওয়াংযৌকে কেনাকাটার স্বর্গ বলে মনে করা হয়।সেখানে ছোট বড় দোকানপাটগুলোতে আপনারা যা খুশী তাই কিনতে পারেন।জিনিসপত্র দেখতে সুন্দর কিন্তু দাম সস্তা। ওখানে বেশ কয়েকটি নাম-করা কাপড়ের পাইকারী বাজার আছে। তা ছাড়া, গুওয়াংযৌ শহরে অনেক বিখ্যাত স্থানীয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শপিং মল আছে। যেমন ওয়ালিন শিল্পকর্ম কেন্দ্রের জু আর এন্যাটো কাঠের তৈরী আসবাবপত্র, গাওডি কেন্দ্রের কাপড়চোপড় আর নিত্যপ্রয়োজনীয় শিল্পকর্ম দ্রব্য, ভিয়েডে কেন্দ্রের পুরাকীর্তি, অংকনশিল্প, ফাছিন কেন্দ্রের ফুল ও পাখি, ছিনপিন বাজারে চীনের ঐতিহাসিক ঔষুধ ইত্যাগি ইত্যাদি।

    একটা কথা আছে, চীনের গুওয়াংযৌ হলো ফুলের সমুদ্র, খাবারের নগর, পযর্টকদের আদর্শ জায়গা, জীবনযাপনের স্বর্গ।এটা হলো গুওয়াংযৌ সম্বন্ধে লোকেদের ধারণা।