v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2004-10-27 13:03:51    
মুসু জাতির বিবাহ ব্যবস্থা

cri
    চীনের দক্ষিণ পশ্চিমাংশের ইয়ুননান প্রদেশ ও সিছুয়ান প্রদেশের সীমানা বরাবর নিনলাং ই জাতি স্বায়ত্তশাসিত জেলায় অবস্থিত লুকু হ্রদের আশেপাশের এলাকায় বংশপরস্পরায় মুসু জাতি লোকদের বাস। তাদের মধ্যে এখনো মাতৃপ্রধান সমাজের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বিস্ময়কর বিবাহ ব্যবস্থা--নরনারীর পক্ষে স্বামী-স্ত্রী রুপে একত্রে বাসের আচার ব্যবহার প্রচলিত। আগে মুসু জাতির লোকেরা বাইরের লোকদের কাছে অপরিচিত ছিল। কিন্তু দশ-বারো বছর আগে চীন তথা বিশ্বের কাছে ইয়াননবছুনাম নামে একজন প্রসিদ্ধ মডল যখন সুপরিচিতি পেয়েছেন, তখন থেকে লুকু হ্রদও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের পক্ষে একটি আকর্ষনীয় পর্যটন স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    নিন্লাং জেলা সমুদ্রের উপরিতল থেকে ১৭০০ মিটারেরও বেশি উঁচুতে অবস্থিত। নিন্লাং জেলা শহরের অদূরে লুকু হ্রদের আশেপাশে মুসু জাতির লোকেদের বাস। মুসু জাতির অধ্যুষিত এলাকায় কোনো শিল্প নেই । লোক কম এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ খুব ভাল। এই এলাকায় মুসু জাতির ২০ হাজারেরও বেশি লোক অতি প্রাচীনকালের মতো সাম্যবাদী জীবনযাপন করছে: সূর্যোদয়ের সংগে সংগে কৃষিকর্ম শুরু আর সূর্যাস্তের পর নিদ্রা।

    লুকু হ্রদের আয়তন ৫০ বর্গ কিলোমিটারেরও বেশি। মুসু জাতির লোকেরা এই হ্রদের সম্পদের উপর নির্ভর করে জীবনযাপন করছে। হ্রদ এলাকার প্রচুর পাহাড় ও বন সম্পদের দরুন মুসু জাতির লোকেদের ঘরবাড়ি নির্মানের জন্য পর্যাপ্ত সামগ্রী যোগানো হয়েছে। মুসু জাতির লোকদের প্রায় সব কিছু কৃষিক্ষেত পাহাড়ের পাদদেশে আছে। প্রচুর জল সম্পদ আছে বলে মুসু জাতি খরা বা ব্ন্যার কবল থেকে রেহাই পায়। প্রতিবছর কৃষিক্ষেতে তারা বীজ বপন করে এবং ঘাস না কাটা আর সার না দেয়া হলেও পর্যাপ্ত ফসল পাওয়া য়ায়। খাদ্যশস্যের প্রাচুর্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অজনের সুবাদে মুসু জাতির লোকেরা বংশ পরস্পরায় নিশ্চিন্তভাবে জীবনযাপন করে।

    মুসু জাতির সমাজ ব্যবস্থা মাতৃপ্রধান সমাজের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এখানে জীবনযাপনের জন্য যে সব দ্রব্য লাগে, সেগুলো নারীরা নিয়ন্ত্রন করে থাকেন। পৃথিবীতে মুসু জাতির তথাকথিত বিবাহ ব্যবস্থা যে এত বিস্ময়কর আর অসাধারণ, তাতে নরনারীর পক্ষে আনুষ্ঠানিক বিবাহের সম্পর্ক পর স্বামীস্ত্রী বূপে একমাত্র বাসের আচার ব্যবস্থা প্রচলিত। মুসু জাতির মেয়েদের বয়স যখন ১২ বছর, তখন তাদের প্রাপ্তবয়স্কা বলে মনে করা হয়। তারা স্বতন্ত্রভাবে স্বামী বেছে নিতে পারে, সে ব্যাপারে বাবামা সহ পরিবার পরিজন হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

    মুসু জাতির নরনারীর পক্ষে আইন অনুযায়ী কোনো আনুষ্ঠানিক বিবাহ সম্পর্ক নেই, বরং সহাবন্থানই। তাদের আদান-প্রদান একেবারে ভালবাসার উপর নির্ভর করে, কোনো পারিবারিক জীবন আর দায়িত্ব নেই। যেদিন তাদের ভালবাসা ভেঙ্গে যায়, সে দিন তাদের সম্পর্ক শেষ। মহাবস্থানরত দু'পক্ষের আলাদা হওয়ার স্বাধীনতা আছে, তাতে কেউ অভিযোগ করতে পারবে না।

    মুসু জাতির লোকদের যে সন্তান জন্ম গ্রহণ করে, স্ত্রীপক্ষের পরিবার তাদের দেখাশুনা করে। পুরুষপক্ষ তাদেরকে লালন পালনের দায়িত্ব পালন করে না। সুতরাং বেশ কিছু ছেলেমেয়ে নিজেদের বাবাকে চেনে না।

    মুসু জাতির পরিবার পরিকল্পনার কোনো সমস্যা নেই। পরিবারিক জীবনের বেশি ভার ও চাপের দরুন মুসু জাতির নারীরা যত সন্তান তত সুখ এই ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছে।

    মুসু জাতির লোকদের মতে তাদের পক্ষে মহাবস্থানের ব্যবস্থা সবচাইতে উপযোগী। কারণ এই ব্যবস্থার কারণে পরিবারের সব বিরোধ ও অসুবিধা এড়ানো যায়। অব্শ্যই বাইরের সাংস্কৃতিক প্রভাবের দরুন বিবাহের ব্যাপারে মুসু জাতির লোকদের পুরানো ধারণার পরিবর্তন শুরু হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত আনুষ্ঠানিক পরিবারও দেখা দিয়েছে।