v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2004-10-18 14:13:43    
চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি সংরক্ষন

cri
    গোসার রাজার জীবনী বিশ্বের বৃহত্তম মহাকাব্য । নয়াচীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বিশেষ করে গত দশ বছরে গোসার রাজার জীবনী সংগ্রহ করা এবং পরিমার্জন করা জন্য চীন সরকার পর্যাপ্ত বৈষয়িক শক্তি আর জনশক্তি প্রয়োগ করেছে । তিব্বতী ভাষায় লেখা গোসার রাজার জীবনীর ৭৫ খন্ড ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে । শিল্পীদের কন্ঠে গাওয়া গোসার রাজার জীবনী যে রেকর্ডিং করা হয়েছে , তার সময় প্রায় ছ হাজার ঘন্টা ।

    চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি সংরক্ষনের কথা বলতে গেলে চীনের বহু ভন্ড বিশিষ্ট জাতীয় সংস্কৃতি আর লোক কৃষ্টির দশটি গ্রন্থের কথা প্রথমে উল্লেখ করতে হবে । উওরাধিকার সুত্রে প্রাপ্ত সাংস্কৃতিক সম্পদকে বিলুপ্তির কবল থেকে রক্ষা করার জন্য চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় এই দশটি বৃহদাকারের গ্রন্থ সম্পাদনার উদ্যোগ নিয়েছে । ১৯৭৮ সাল থেকে চীনের পঁন্চাশ হাজার বিশেষজ্ঞ , পন্ডিত এবং শিল্পকলা ও সাহিত্যের অনুরাগী এই বৃহত্ প্রকল্পের কাজে অংশ নিয়েছেন । পরিকল্পীত তিন শো খন্ডের মধ্যে ১৬৫ টি খন্ড ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে । এই প্রসংগে চীনের সংস্কৃতি উপ মন্ত্রী পান জেন জৌ বলেছেন ,

    বহুজাতিক চীনের ইতিহাস সুদীর্ঘ , চীনা কমিউনিষ্ট পার্টি ও কেন্দ্রীয় সরকারের দেতৃত্বে উত্তরাধিকার সুত্রে প্রাপ্ত জাতীয় সংস্কৃতি সুরক্ষা ও গবেষনার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে ।

    নববই বছর পুরোনো চীনা প্রকাশনালয় ঐতিহ্যিক দলিল-দস্তাবেজ প্রকাশের জন্য সুখ্যাতি অর্জন করেছে । এই প্রকাশনালয় থেকে প্রকাশিত , সাং রাজবংশীয় আমলে কচছবের খোলস ও প্রানীর হাড়ের উপরে খোদাই করা চীনা শব্দ সংকলন , চীনের বৌদ্ধশাস্ত্র, চীনা ভাষার অভিধান প্রভৃতি গ্রন্থ সারা বিশ্বে উরুত্বপুর্ণ প্রভাব বিস্তার করেছে । চীনা প্রকাশনালয়ের হান ভাষা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক জাই চিয়ান হং সি আর আইয়ের সাংবাদিকদের বলেছেন , আমাদের প্রকাশনালয় একাধিক প্রাচীন গ্রন্থ প্রকাশ করেছে , এই সব প্রাচীন গ্রন্থ চীনা ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির বাথক এবং প্রচীন কালের তথ্যের ভান্ডার । প্রাচীন চীনকে গভীরভাবে জানলেই আজকের চীন এমন কি ভবিষ্যতের চীকেও ভালোভাবে জানা যাবে ।

    চীনের জাতীয় গ্রন্থাগারে যে দুই কোটি বই পুস্তক সংরক্ষিত সয়েছে , সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশ লক্ষ প্রাচীন গ্রন্থ । কয়েক মাস আগে এই গ্রন্থাগারের উদ্যোগে যে ফোটো স্টেট করা ইয়োংলে বিশ্বকোষ প্রকাশের অনুষ্ঠানের অয়োজন করা হয়েছে তা দেশ বিদেশের পন্ডিতদের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে ।

    চীনের মিং রাজদরবারের সম্পাদিত ইয়োংলে বিশ্বকোষকে পৃথিবীর প্রথম বিশ্বকোষ বলা যায় । ১৪০৩ সালে এই বিশ্বকোষের সম্পাদনা শুরু হয় । এতে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে নানা রকমের আট হাজার বই । অনেক বিলুপ্ত বই এই বিশ্বকোষে খুজেঁ পাওয়া যায় । ইয়োংলে বিশ্বকোষ সংক্রান্ত একটি সেমিনারে চীনের জাতীয় গ্রন্থাগারের মহাপরিচালক রেন জি ইয়ু বলেছেন , ইয়োংলে বিশ্বকোষ প্রাচীন চীনের শ্রেষ্ঠ বিশ্বকোষ এবং মানব জাতির সাংস্কৃতিক ইতিহাসের একটি চিহ্ন ফলক । চীনের জাতীয় গ্রন্থাগারের একটি পরিকল্পনা অনুসারে আগামী দেড় বছরের মধ্যে মুল ভুভাগের ইয়োংলে বিশ্বকোষের ১৬৩টি খন্ড প্রকাশিত হবে , এর পরবর্তী দেড় বছরে বিদেশে সংরক্ষিত ইয়োংলে বিশ্বকোষের প্রায় দুশো টি খন্ড প্রকাশিত হবে ।

    চীন সরকার সংখ্যালঘু জাতির প্রাচীন গ্রন্থ সংসক্ষনের উপরেও গুরুত্ব আরোপ করেছে । চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্যে দশটিরও বেশী সংখ্যালঘু জাতির তেরটি লিখিত ভাষা উদ্ভাবন করা হয়েছে বা উন্নত করা হয়েছে । চীন সরকারের অধীনস্থ বিশেষ সংস্থা সারা দেশের সংখ্যালঘুজাতির প্রাচীন গ্রন্থ, লোক শিল্প, স্থানীয় অপেরা, লোকসংগীত , নৃত্য ও মুখেমুখে প্রচলিত মহাকাব্য সংরক্ষণের দায়িত্ব পালন করছে ।

    চীনের তিববতের সমাজ বিজ্ঞান একাডেমীর মহাপরিচালক জিওযাংজুমেই জানিয়েছেন , চীনে তিববতবিদ্যা গবেষনার ৫০টি সংস্থা আছে । তিববতের সংস্তৃতির সংরক্ষণ ও গবেষনায় বিশ্ববিশ্রুত সাফল্য অর্জিত হয়েছে । তিনি বলেছেন , চীনের সমাজ বিজ্ঞান একাডেমী এবং শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিভাগের অধীনস্থ বিশেষ সংস্থা জাতীয় ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি রক্ষা ও সংগ্রহ করা এবং এর উন্নতি সাধন করার কাজে নিয়োজিত রয়েছে । কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ অর্থ বরাদ্দ করায় জাতীয় সংস্কৃতি সন্তোষজনবভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে ।

    চীনের সংবিধান , জাতীয় স্বায়ত্ব শাসন আইন , পুরাকীর্তি সংরক্ষণ আইন এবং রচনা আইনে জাতীয় সংস্কৃতি সংরক্ষণের বিশেষ ধারা রয়েছে । চীন সরকার ১৯৮৫সালে বিশ্বের সংস্কৃতি ও উত্তরাধিকার সুত্রে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ চুক্তিও স্বাক্ষর করেছে ।