পশ্চিমাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা


       এখানে চীনের পশ্চিমাঞ্চল বলতে বোঝায় : কানসু প্রদেশ, কুইচৌ প্রদেশ, নিংসিয়া অঞ্চল, চিংহাই প্রদেশ, শ্যানসি প্রদেশ, সিছুয়েন প্রদেশ, তিব্বত অঞ্চল, সিনচিয়াং অঞ্চল, ইউননান প্রদেশ এবং ছোংছিং মহানগর । এই দশটি প্রদেশ ,অঞ্চল ও মহানগরের আযতন চীনের ভূভাগের মোট আযতনের তিন ভাগের দুই ভাগ এবং লোকসংখ্যা চীনের মোট লোকসংখ্যার ২২.৮ শতাংশ । চীনের পশ্চিমাঞ্চল খনিসম্পদে সমৃদ্ধ , শক্তিসম্পদ( জলশক্তি সম্পদ সহ), পর্যটনসম্পদ ও ভূমিসম্পদের দিক থেকে এই অঞ্চলের প্রাধান্য বা উত্কৃষ্টতা খুবই স্পষ্ট । বড় বড় নদীর উজান দিকে অবস্থিত চীনের পশ্চিমাঞ্চল দশটিরও বেশি দেশের সীমান্তের সংগে সংলগ্ন । সেই সব দেশের সংগে চীনের পশ্চিমাঞ্চলের স্থল সীমারেখার মোট দৈর্ঘ্য ৩৫০০ কিলোমিটার । তাই বিদেশের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার দিক থেকে এই অঞ্চল দ্বিতীয় সুবর্ণ অঞ্চল বলে অনেকের ধারণা । 

  ২০০০ সালে চীনের পশ্চিমাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম সূচিত হয় । পুঁজি বিনিয়োগ, বিনিয়োগের পরিবেশ, বিদেশ ও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার, বিজ্ঞান ও শিক্ষা উন্নয়ন এবং মেধাবান ব্যক্তিদের আকৃষ্ট করা ইত্যাদি দিক থেকে রাষ্ট্র পশ্চিমাঞ্চলের জন্যে অগ্রাধিকার দেয়ার নীতি গ্রহণ করেছে , ফলে পশ্চিম অঞ্চলটি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের এক আকর্ষণীয স্থানে পরিণত হয়েছে । ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত চীনের পশ্চিমাঞ্চলে মোট কয়েক ডজন গুরুত্বপুর্ণ নতুন প্রকল্প নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে , তার পুঁজিবিনিয়োগের মোট পরিমাণ প্রায় এক হাজার বিলিয়ন ইউয়ান। 

  চীন সরকার পশ্চিমাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়নের সামগ্রিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে ( চীনের পশ্চমাঞ্চলের আওতাভুক্ত রয়েছে দশটি প্রদেশ, অঞ্চল ও মহানগর , কিন্তু আসলে পশ্চিমাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতাধীনে আরও আছে অন্তর্মঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এবং কুয়াংসি চুয়াং জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ) এবং পশ্চমাঞ্চলে পুঁজিবিনিয়োগের জন্য বিদেশী ব্যবসায়ীদের উত্সাহ দেয়ার জন্য বিশেষ সুবিধার নীতি প্রণয়ন করেছে । যেমন চীন সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে , পশ্চিমাঞ্চলে স্থাপিত উত্সাহ দেয়ার যোগ্য ধরনের বৈদেশিক পুঁজিবিনিযোজিত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যে বর্তমান শুল্ক ও কর বিষয়ক অনুকূল নীতি কার্যকরিকরণের মেয়াদ শেষ হওযার পর তিন বছরের মধ্যে তবুও ১৫ শতাংশের নিম্ন হার অনুসারে তাদের কাছ থেকে আয় কর আদায করা হবে, রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর আরও বেশী কমানো যাবে , কর আদায়ের সর্বনিম্ন হার হবে শতকরা দশ ভাগ । একই সময়ে পশ্চিমাঞ্চলের প্রতিটি প্রদেশ, অঞ্চল বা মহানগরই উপকূলীয় প্রদেশ ও অঞ্চল বা শহরের মতো বিশেষ সুবিধা ভোগ করতে পারে , নিজের উদ্যোগেই ৩ কোটি মার্কিন ডলার পর্যন্ত বৈদেশিক পুঁজিবিনিয়োজিত প্রকল্প চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করতে পারে বা পার্মিশন ইশ্যু করতে পারে । ফলে চীনের পশ্চিমাঞ্চল বিদেশের কাছে উন্মুক্ত হওয়ার একটি নতুর উজ্জ্বল দিগন্তে এবং বিদেশী ব্যবসায়ীদের পুঁজিবিনিয়োগের প্রথম বাছাইয়ের স্থানে পরিণত হচ্ছে ।