সামাজিক নিশ্চয়তাবিধান


      বার্দ্ধক্য বীমা

  সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের মূল বার্দ্ধক্য বীমা ক্রমেই আরও ব্যাপকভাবে প্রবর্তিত হয়েছে , আগে বার্দ্ধক্য বীমা প্রধানত রাষ্ট্রায়ত্ত ও কলেক্টিভ শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রবর্তিত ছিল তা সম্প্রসারিত হয়ে সকল শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার পর্যায়ভুক্ত কর্মপ্রতিষ্ঠানেও চালু হয়েছে , বেসরকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিক ও কর্মচারীদের অধিকার ও স্বার্থও সুনিশ্চিত হয়েছে । ২০০২ সালের শেষ নাগাদ সারা দেশে ১১ কোটি ১২ লক্ষ ৯০ হাজার শ্রমিক ও কর্মচারী এবং ৩ কোটি ৬০.৮ লক্ষ অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি মূল বার্দ্ধক্য বীমায় অংশ নিয়েছে। ২০০৩ সালের শেষ দিকে সারা দেশে মোট ১৫ কোটি ৪৯ লক্ষ লোক মূল বার্দ্ধক্য বীমায় অংশ নিয়েছে , এই সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে ৭৫.৩ লক্ষ বেশী । এর মধ্য বীমাটিতে অংশগ্রহণকারী শ্রমিক ও কর্মচারীদের সংখ্যা ১১ কোটি ৬৩.৮ লক্ষ এবং বীমাটিতে অংশগ্রহণকারী অবসরপ্রাপ্তদের সংখ্যা ৩ কোটি ৮৫.২ লক্ষ । 

  চিকিত্সা বীমা 

  মূল চিকিত্সা বীমা ইতিমধ্যেই যাবতীয় শহরের সব ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও কর্মপ্রতিষ্ঠানে, রাষ্ট্রীয় সংস্থা ও সামাজিক সংস্থায় প্রবর্তিত হয়েছে , এটা চীনে সবচেয়ে ব্যাপকভাবে প্রবর্তিত সামাজিক বীমাব্যবস্থার অন্যতম । ২০০২ সালে চীনের চিকিত্সা, স্বাস্থ্যরক্ষা, মহামারি প্রতিরোধ ইত্যাদি স্বস্থ্যরক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে ২.৯ লক্ষ হয়েছে , রোগীদের জন্য বেডের মোট সংখ্যা ৩২.১ লক্ষ ; স্বাস্থ্যকর্মীদের মোট সংখ্যা ৪৪.৪ লক্ষ । পেইচিং, সাংহাই, থিয়েনচিন আর ছোংছিং ইত্যাদি যাবতীয় বড় শহরে উন্নত মানের সকল বিশেষ বিষয়ের হাসপাতাল , যেমন টিউমার, হৃদপিণ্ড ও মস্তিষ্কের রক্তবাহী শিরা , চোখ ও দাঁত ইত্যাদি সংক্রান্ত রোগের চিকিত্সা, ঐতিহ্যিক চীনা চিকিত্সা ও সংক্রামক রোগ চিকিত্সার বিশেষ হাসপাতাল ও বহুসংখ্যক বহুমুখী হাসপাতাল ; সকল প্রদেশ, ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সকল মাঝারী শহরেও আধুনিক ব্যবস্থা ও সাজসরঞ্জাম-সম্পন্ন বহুমুখী হাসপাতাল ও বিশেষ হাসপাতাল রয়েছে। এখন জেলা, থানা ও গ্রাম--এই তিন পর্যায়ের চিকিত্সা ও রোগপ্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যরক্ষা নেটওয়ার্ক ব্যাপক পল্লি-অঞ্চলে ভাল ভিত্তি স্থাপন করেছে, সারা দেশে আছে দু হাজারেরও বেশী জেলাপর্যায়ের হাসপাতাল, এবং ৪৮ হাজারটি থানা-পর্যায়ের চিকিত্সা ও স্বাস্থ্যরক্ষাকেন্দ্র । 

  ২০০৩ সালের শেষ দিকে চীনে মোট ১০ কোটি ৮৯.৫ লক্ষ লোক চিকিত্সাবীমায় অংশ নিয়েছেন, এই সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় এক কোটি ৪৯.৪ লক্ষ বেশী । বীমাটিতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কর্মরত শ্রমিক ও কর্মচারীদের সংখ্যা ৭ কোটি ৯৭.৭ লক্ষ, অবসরপ্রাপ্তদের সংখ্যা ২ কোটি ৯১.৮ লক্ষ । 

  বেকারত্ব বীমা 

   চীনের লোকসংখ্যা খুবই বেশী বলে কর্মসংস্থানের ওপর বিরাট চাপ পড়ে । কর্মসংস্থানের এই দ্বন্দ্ব প্রশমিত করার জন্যে ১৯৯৩ সাল থেকে চীনসরকার শ্রমশক্তি বাজার নীতি কার্যকরী করে কর্মসংস্থানের দরজা আরও ব্যাপকভাবে খুলেছে । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিল্পের কাঠামোগত পুনর্বিন্যাসের দরুণ রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু শ্রমিক ও কর্মচারী কর্মচ্যূত হয়ে পড়েন --এই সমস্যার মোকাবিলা করার জন্যে চীনসরকার পুন:কর্মসংস্থান প্রকল্প বাস্তবায়িত করেছে । ২০০২ সালে গোটা দেশের শহরবাসীদের মধ্যে মোট ২৪কোটি ৭৮ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে ; ১৯৯৮ সাল থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্মচ্যূত ১ কোটি ৮০ লক্ষ শ্রমিক ও কর্মচারীর নানাভাবে পুন:কর্মসংস্থান হয়েছে । ২০০২ সালে র শেষ দিকে চীনের শহরগুলোতে নিবন্ধিত বেকারত্বের হার শতকরা চার ভাগ । চীনের বিভিন্ন কর্মপ্রতিষ্ঠানে প্রবর্তিত বেকারত্ব বীমা ব্যবস্থার কল্যাণে শ্রমশক্তির যুক্তিযুক্ত স্থানান্তর ও একীভূত শ্রমবাজার গঠন ত্বরান্বিত করেছে । ২০০৩ সালের শেষ দিকে চীনে ১০ কোটি ৩৭.৩ লক্ষ লোক বেকারত্বের বীমায় অংশ নিয়েছেন ।