রেওয়াফু

      

রেওয়াফু হচ্ছে একরকম তার টানার বাদ্যযন্ত্র। ওইগুর, তাজিক আর উজবেক জাতির জনগণের মধ্যে রেওয়াফু খুবই জনপ্রিয়। চতুর্দশ শতাব্দীতে রেওয়াফুর জন্ম হয়। এ পর্যন্ত রেওয়াফুর রয়েছে ৬ শ’রো বেশী বছরের ইতিহাস। তখন সিনচিয়াং এবং দেশের ভেতরের আর বাইরের বিভিন্ন জাতির মধ্যে ব্যাপক পর্যায়ের অর্থনৈতিক আর সাংস্কৃতিক বিনিময় হয় এবং উইগুর জাতির জনগণ তাদের আগেকার লোক বাদ্যযন্ত্রের ভিত্তিতে বহিরাগত বাদ্যযন্ত্রের সদগুণ আহরণ করে কিছু নতুন বাদ্যযন্ত্র তৈরি করেছেন। রেওয়াফু হচ্ছেসেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রতিনিধিত্বকারী বাদ্যযন্ত্র। আজ পর্যন্ত রেওয়াফুর প্রচলন আছে।

 

  অধিকাংশ রেওয়াফু কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়। তার আকার অনন্য ধরণের । তার উপরের অংশ সরু আর লম্বা এবং শীর্ষদেশ আঁকাবাকাঁ। নীচের অংশ হচ্ছে আধা গোলাকার একটি অনুনাদী বাক্স।  

  রেওয়াফুর ধরণ নানা রকমের । ৩ তারা, ৫ তারা, ৬ তারা, ৭ তারা, ৮ তারা আর ৯ তারার রেওয়াফু আছে। সাধারণত সবচেয়ে বাইরের তারা দিয়ে ছন্দ বাজানো হয় এবং বাকী তারগুলো অনুনারী ভূমিকা পালন করে থাকে।  

  রেওয়াফুতে বাজানো সুর উদাত্ত, সুস্পষ্ট আর অনন্য এবং এর প্রকাশ শক্তি অত্যন্ত সমৃদ্ধ। রেওয়াফু প্রায় একক বাজানো, সমবেত বাজানো আর সহযোগী বাজানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। রেওয়াফু বাজানোর সময়ে বসা হোক আর দাঁড়ানো হোক, গা সোজা অবস্থায় থাকতে হবে এবং কাঁধ সমান অবস্থায় থাকতে হবে। সাধারণত বাদ্যযন্ত্রশিল্পীরা রেওয়াফুকে লম্বালম্বীভাবে বুকের সামনে রাখেন, অনুনাদীবাক্সকে ডান বাহুর মাঝখানে রাখেন, বাম হাত দিয়ে রেওয়াফুর দন্ড তুলে ধরেন এবং বাম হাতের অংগুলি দিয়ে তারা টানেন। তারপর শিল্পীরা ডান হাতের প্লেকট্রাম দিয়ে তারা টানলে রেওয়াফু থেকে শ্রোতিমধুর সুর বেরিয়ে আসবে।  

  রেওয়াফুর আকার নানা ধরণের। উইগুর, তাজিক আর উজবেক জাতির লোকেরা সবাই সিনচিয়াং উইগুর স্বায়তশাসিত অঞ্চলে থাকলেও তাদের রেওয়াফুর ধরণ আর আকারের মধ্যে দফাত আছে এবং নামেরও ভেদাভেদ রয়েছে। তাজিক জাতির লোকেরা রেওয়াফুকে “রেপুপু” ডাকেন। রেপুপু সাধারণত খুবানির কাঠ দিয়ে তৈরী করা হয়। উইগুর জাতির জনগণের মধ্যে অনেক ধরণের রেওয়াফু আর পশু-পালকদের রেওয়াফু। খাসের আশেপাশে প্রচলিত আছে বলে খাস রেওয়াফুর নাম করা হয়। এই রকম রেওয়াফু দিয়ে বাজানো সুর নরম, নীচু আর সুক্ষ। উজবেক জাতির রেওয়াফুর আকার খাস রেওয়াফুর আকারের কাছাকাছি হলেও আওয়াজের মাত্রা আর প্রকৃতির পার্থক্য আছে। উজবেক জাতির রেওয়াফুর আওয়াজের মাত্রা অপেক্ষাকৃতভাবে বিরাট এবং আওয়াজ উদাত্ত আর গভীর।  

  [সংগীত]আমার রেওয়াফু