0930edu
|
সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা ভালো আছেন তো? সুদূর পেইচিং থেকে আপনাদের সবাইকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের নিয়মিত শিক্ষা বিষয়ক সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান 'বিদ্যাবার্তা'। বরাবরের মতো আজকের অনুষ্ঠানেও শুরুতেই শুনবেন শিক্ষা সম্পর্কিত খবর। এরপর শুনবেন পেইচিং কেমিক্যাল টেকনোলজি ইউনিভার্সিটির তথ্য। আর এ অনুষ্ঠান পরিবেশন করছি ছাওইয়ানহুয়া সুবর্ণা ও এনামুল হক টুটুল।
চীনের শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং পেইচিং নর্মাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কুইচৌ শিক্ষক প্রশিক্ষণ ক্লাসে শিক্ষকদের প্রতি শুভ কামনা জানান।
তিনি বলেন, শিক্ষার উন্নয়নে শিক্ষকদের দায়িত্ব অতি গুরুত্বপূর্ণ। চীনের পশ্চিমাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ কাজে নিজের অবদান রাখা, শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার এগিয়ে নেওয়া আর শিক্ষার্থীদের পথ নির্দেশক হিসেবে শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সেই সঙ্গে চীনের দরিদ্র অঞ্চলের শিক্ষার উন্নয়নে ও যুবকদের সুস্থ বিকাশে শিক্ষকরা অবদান রাখবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট সি।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর ১০ সেপ্টেম্বর চীনে শিক্ষক দিবস পালিত হয়।
সম্প্রতি ইউরোপের কয়েকটি কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের যোগাযোগ বিষয়ক সম্মেলন বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়ায় আয়োজিত হয়।
সম্মেলনে চীনের হানবানের পরিচালক, কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের সদরদপ্তরের প্রধান ম্যাডাম স্যু লিন বলেন, এবারের সম্মেলন কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের উন্নয়নে নতুন প্রাণশক্তি যোগাবে, 'এক অঞ্চল, এক পথ' ধারণার জন্য সুযোগ তৈরি করবে। তিনি আশা করেন, এবারের সম্মেলনের অভিজ্ঞতা চীন ও প্রতিবেশী দেশের দক্ষ জনশক্তি ও আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতায় অবদান রাখবে।
সম্মেলনে ইউরোপের ২২টি দেশের ৫০টি কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট ও কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের ১০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি ইন্সটিটিউটের ভবিষ্যত উন্নয়ন ও চীন ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের আদান-প্রদান ও সহযোগিতা জোরদার করা, বিশেষ করে 'এক অঞ্চল, এক পথ' ধারণার বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেন।
অংশগ্রহণকারীরা মনে করেন, সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদার করা হবে 'এক অঞ্চল, এক পথ' চালু করার ভিত্তি। এছাড়া, কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের লক্ষ্য হলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণকে চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি জানাতে চেষ্টা করা এবং দেশ ও বিদেশের মধ্যে মৈত্রী গভীরতর করা।
ম্যাডাম স্যু লিন আশা করেন, সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা অধিকাংশই 'এক অঞ্চল, এক পথ' ধারণার প্রতিবেশী দেশ ও কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট সংশ্লিষ্ট দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যক্তি প্রশিক্ষণ দেবেন।
সম্মেলনে কয়েকটি কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের অবকাঠামো নির্মাণ, টেলিযোগাযোগ ও পরিবহনসহ বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যক্তি প্রশিক্ষণ নিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা চীন ও ইউরোপের মধ্যে বিভিন্ন খাতের আদান-প্রদানে প্রস্তাব দাখিল করেন।
পেইচিং বিদেশি ভাষা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিপিসি কমিটির সম্পাদক হান চেন মনে করেন, কূটনীতি বিষয়ক নীতিমালার দিক থেকে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের নতুন ভূমিকা নিয়ে চিন্তা করা উচিত।
হাঙ্গেরির জিগ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চীন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ রিচার্ড মোর মনে করেন, কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট চীনের সঙ্গে ব্যবসা করা বিদেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্মীদের চীনা ভাষা প্রশিক্ষণ বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় ভাষা প্রশিক্ষণ দিতে পারে। ইউরোপে চীনা পর্যটকের সংখ্যাও সম্প্রতি অনেক বেড়েছে। চীনাদের সুবিধার জন্য কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গাইড বিষয়ক চীনা ভাষা ক্লাস চালু করতে এবং পর্যটন বিষয়ক টিপস বই রচনা করতে পারে।
পোল্যান্ডের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের ডিন সিলভিয়া ওয়েটকাস্কা মনে করেন, পোল্যান্ড 'এক অঞ্চল, এক পথ' ধারণায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে এবং সেতুর ভূমিকা পালন করবে।
এ প্রসঙ্গে ম্যাডাম স্যু লিন বলেন, কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট চীন ও অন্যান্য দেশের মধ্যে সংলাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। 'এক অঞ্চল, এক পথ' সংশ্লিষ্ট প্রতিবেশী দেশে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট আরো বেশি ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সম্প্রতি চীন ও আরব দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এক প্রধান ফোরামে দু'পক্ষের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় 'কৌশলগত সহযোগিতামূলক কার্যক্রম' পরিকল্পনা প্রকাশ করে। ২০১৯ সাল নাগাদ দু'পক্ষের বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ, শিক্ষাদান সহযোগিতা, শিক্ষার্থীদের বিনিময় ও মৌলিক গবেষণাসহ বিভিন্ন খাতে কৌশলগত সহযোগিতা সম্পন্ন করা হবে বলে পরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়, যাতে দু'পক্ষের শিক্ষা বিষয়ক সহযোগিতা আরো কার্যকর ও বাস্তবসম্মত হতে পারে।
পরিকল্পনায় বলা হয়, আগামী ৪ বছরের মধ্যে দু'পক্ষের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য যৌথ প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা চালু করা হবে। চীনের নিংসিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও মিশরের সুয়েজ ক্যানেল বিশ্ববিদ্যালয় ও আলেক্সান্দ্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সফল সহযোগিতাকে উদাহরণ হিসেবে নিয়ে দু'পক্ষের ভাষা ও অন্যান্য প্রধান বিষয়ের শিক্ষার্থীদের বিনিময় প্রকল্প চালু করা হবে এবং দু'পক্ষের বিনিময় প্রকল্পে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা খরচ বা কম খরচের সুবিধা দেওয়া হবে।
এর সঙ্গে সঙ্গে জর্ডানে চীন-জর্ডান যৌথ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলাকে সমর্থন করা হবে এবং চীনের ইনছুয়ান শহরে পেইচিং বিদেশি ভাষা বিশ্ববিদ্যালয় ও সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করাকে সমর্থন করা হবে।
দু'পক্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য আগামী ৪ বছরের মধ্যে সরকারি বৃত্তি ও বিশ্ববিদ্যালয় বৃত্তির সুযোগ এবং মাস্টার্স ডিগ্রির শিক্ষার্থীদের বৃত্তির সুযোগ বাড়ানো হবে বলে উল্লেখ করেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নেতারা।
বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষকদের বিনিময় জোরদার করা, চীনা ভাষার শিক্ষক ও আরব ভাষার শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট এবং একাডেমিক আদান-প্রদানসহ সহযোগিতামূলক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলায় সহায়তা দেয়া হবে বলেও জানান তারা।
এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কনফুসিয়াস ক্লাসরুম বা কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট গড়ে তুলতে সমর্থন দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তারা।